
মঠে পা আড়াআড়ি করে বসে ইসলামের বিরুদ্ধে ভক্ত-অনুসারীদের কাছে জ্বালাময়ী বক্তব্য রাখছিলেন এক বৌদ্ধ মঠাধ্যক্ষ। একটু দূরত্বে তখন একটি পেট্রোল বোমা বিস্ফারিত হল। ভক্তিভাজন মঠাধ্যক্ষ আম্বালানগোদা সুমেধানন্দ থেরো বিস্ফোরণের দিকে দৃষ্টি দিলেন না। রাতের বেলা তিনি দক্ষিণ শ্রীলঙ্কার জিনটোটা শহরে বসে বসে তার বক্তব্য অব্যাহত রাখলেন, মুসলিমরা সহিংস, মুসলিমরা লোভী।
তিনি বলে চললেন, মুসলমানদের লক্ষ্য আমাদের গোটা দেশ ও সব সম্পদ দখল করা। বৌদ্ধ দেশগুলোর পরিণতির কথা ভাবুন আফগানিস্তান, পাকিস্তান, কাশ্মীর ও ইন্দোনেশিয়া। ইসলাম সবগুলো দেশকে ধ্বংস করেছে। কয়েক মিনিট পরই মঠের এক সহযোগী দৌড়ে এসে খবর দিলেন, কেউ একজন কাছের মসজিদে একটি মলোটভ ককটেল ছুড়েছে। মঠাধ্যক্ষ হাতের আঙুলগুলো শূন্যে তাক করলেন ও কাঁধ ঝাঁকালেন। তার মাথাব্যথা শ্রীলঙ্কার সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধদের নিয়ে।
মুসলিমরা, যারা শ্রীলঙ্কার জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশ- তাদের নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। সুমেধানন্দ থেরোর মত ক্যারিশমাটিক বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের শক্তিশালী নেটওয়ার্কের দ্বারা উদ্দীপ্ত হয়ে বৌদ্ধরা জঙ্গি উপজাতিবাদের যুগে প্রবেশ করেছে। নিজেকে উপস্থাপিত করছে ধর্মযোদ্ধা হিসেবে যারা বাইরের শক্তির বিরুদ্ধে নিজের ধর্মকে রক্ষা করে।
উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কা দক্ষিণ এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এর সরকারি নাম গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রী শ্রীলঙ্কা। ১৯৭২ সালের আগে এই দ্বীপ সিলন নামেও পরিচিত ছিল। এর প্রশাসনিক রাজধানীর নাম শ্রী জয়াবর্ধেনেপুরা কোট্টে। এর প্রধান শহর কলম্বো। ভারতের দক্ষিণ উপকূল হতে ৩১ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত। প্রাচীনকাল থেকেই শ্রীলঙ্কা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। সিংহলি সম্প্রদায় এই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী।
আইএ/পাবলিক ভয়েস

