আটক হতে পারেন মিন্নি, আলোচনায় নতুন ফুটেজ

প্রকাশিত: ৬:৩৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ৭, ২০১৯

রিফাত হত্যায় নতুন করে জল্পনা কল্পনা শুরেু হয়েছে। জল্পনার বিষয় হলো- জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক হতে পারে মিন্নি। এমনকি গ্রেফতারও হতে পারেন রিফাত শরীফের স্ত্রী আলোচিত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। বরগুনা সরকারি কলেজ সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার আগে তাকে টেনে হিঁচড়ে বের করা হয়ছিলো। এরকম একটি ভিডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে ‘স্বাভাবিকভাবে’ হাঁটছেন মিন্নি। রিফাতকে যখন নিয়ে যাওয়া হয় মিন্নি তখন খুব স্বাভাবিকভাবেই হাঁটছে। যখন রিফাতকে কোপানো শুরু করে তখনই মিন্নি দৌঁড়ে যান। কিন্তু ঘাতকদের কিলিং মিশন শেষ করে চলে যাওয়ার পর ফের মিন্নিকে স্বাভাবিকই দেখা যায়। ভিডিওতে দেখা যায় কেউ একজন মিন্নির হাত থেকে পড়ে যাওয়া ব্যাগ তুলে দেয় এবং মিন্নি সেটা স্বাভাবিকভাবেই কাঁধে নিয়ে নেয়। এতেই বেঁধেছে সন্দের দানা। আলোচিত এই মামলার এক নম্বর সাক্ষী মিন্নি। যে কোনো সময় পুলিশি হেফাজতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করাহতে পারে আপাতত এরকমটাই জানা গেছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, রিফাত হত্যার পরিকল্পনাকারী নয়ন বন্ড হলেও কিলিং মিশনে মূল ভূমিকা পালন করে দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী। হত্যাকাণ্ডের শিকার রিফাত শরীফ ঘটনার দিন সকাল ১০টায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে নিতে সাদা একটি মোটরসাইকেলে কলেজে আসেন। ১০টা ৩ মিনিটে রিফাত ফরাজী ৬ থেকে ৭ জনকে নিয়ে কলেজ গেটের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকে।

দুই থেকে তিন মিনিট পর ২-৩ জনকে কলেজে পাঠায় সে। ১০টা ৯ মিনিটে তারা কলেজ থেকে বেরিয়ে রাস্তার উল্টো পাশে অবস্থান নেয়। এক মিনিট পর ঘাতক রিফাত ফরাজী কলেজ গেটের কাছে এসে অপর দুই ছেলেকে কিছু নির্দেশনা দিয়ে উল্টো দিকে পাঠায়। ১০টা ১২ মিনিটে কলেজ থেকে বেরিয়ে রিফাত গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিল, এ সময় ঘাতক রিফাত ফরাজী রিফাত শরীফকে টেনেহিঁচড়ে নয়ন বন্ডের কাছে নিয়ে যায়।

ওই সময় সবার পেছনে নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নিকেও দেখা যায়। বন্ড বাহিনীর সদস্যরা রিফাত শরীফকে কিলঘুষি মারতে থাকে। আর রিফাত ফরাজী ও অপর একজন দৌড়ে গিয়ে তিনটি রামদা নিয়ে আসে। পরে রিফাত ফরাজী একটি দা নয়ন বন্ডকে দেয়, আরেকটি দিয়ে সে নিজেই কোপাতে শুরু করে রিফাত শরীফকে। একপর্যায়ে রিফাত শরীফকে ফেলে ১০টা ১৫ মিনিটে নয়নসহ বন্ড বাহিনী চলে যায়।

এ ঘটনার পর নয়নরা যখন পালিয়ে যায় তখন একজন মিন্নিকে তার পার্সটি মাটি থেকে হাতে তুলে দেন। মিন্নি স্বাভাবিকভাবে সামনের দিকে হাঁটতে থাকেন। এ ঘটনার ৮ মিনিট পর একটি মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশের দুই কর্মকর্তা।

ভিডিওটির পর নতুন করে আসে মিন্নির সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি। মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন বলেন, তদন্ত স্বচ্ছ ও সাবলীল করতে যা যা প্রয়োজন তাই করা হবে। সে এ মামলার একজন সাক্ষী, তদন্তের স্বার্থে একবার নয় প্রয়োজনে ১০ বার তার সঙ্গে কথা বলা হবে।

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনে যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।’

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকালের দিকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাতকে। পরে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে মারা যান। তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের বাধা দিয়েও স্বামীকে বাঁচাতে পারেননি।

জিআরএস/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন