
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে সরকারের গণবিরোধী চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের মূল্য যখন নিম্নমুখী, পার্শ্ববর্তী দেশে যখন গ্যাসের দাম কমানো হলো, তখন বাংলাদেশে গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তে সরকারের গণবিরোধী চরিত্রই প্রকাশ পেয়েছে তা নয়, বরং সরকারের রক্তচোষা চেহারাও উম্মোচিত হয়েছে।
দেশপ্যাবী ভয়াবহ খুন, গুম,ধর্ষণ সহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে শুধু গ্যাসের মূল্য বাড়েনি, খুন, গুম, ধর্ষণ, রাহাজানি, চুরি, দুর্নীতি সবই বৃদ্ধি পেয়েছে। নয়ন বন্ডকে ক্রসফায়ারে দিয়ে সরকার হাজারো সত্যকে গোপন করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ক্রসফায়ার বা বিচার বহির্ভূত হত্যা ইসলাম সমর্থন করে না উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, এই সরকারের আমলে কৃষকরা ধানের ন্যায্য মুল্য পাচ্ছে না। অপরদিকে কৃষি পণ্যের দাম অনেক বেশি। রোগীরা সেবা পাচ্ছে না, ছাত্ররা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত, সাধারণ মানুষ হয়রানীর শিকার হচ্ছে। এভাবে রাষ্ট্রের সর্বত্র অব্যবস্থাপনায় সয়লাব, জনগণ নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। সকল সুযোগই যেন সরকার দলীয় লোকজনের জন্য। এভাবে একটি রাষ্ট্র চলতে পারে না।
সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলে জনগণের জন্য সরকারের কোন দরদ নেই উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, অর্থ পাচারের দিকে থেকে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে। দেশের ৫ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে সরকার দলীয় লোকেরা। সরকারের লোকজন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ নয়, বটগাছে পরিণত হয়েছে। দলীয় নেতাদের পকেট ভরতেই বারবার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ভারতে মুসলিম নির্যাতনে প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ভারত আন্তর্জাতিক আইন এবং সভ্যতা-ভদ্রতার সকল সীমা অতিক্রম করে মুসলিম নির্যাতন করে যাচ্ছে। হিন্দুত্ববাদী জঙ্গি সন্ত্রাসীরা মুসলমানদের ওপর নির্যাতন করে হত্যা করছে। এবং বলপ্রয়োগ করে জয় শ্রীরাম বলাচ্ছে। মোদি সরকারকে মুসলিম নিধন বন্ধ করতে ব্যর্থ হলে প্রয়োজনে বাংলাদেশের মুসলমানরা ভারত অভিমুখে লংমার্চ করতে বাধ্য হবে।
- সমাবেশ থেকে আগামী ১১ জুলাই সর্বদলীয় গোলটেবিল বৈঠক ১৩ জুলাই দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসুচি ঘোষণা করেন মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, মুফতী শেখ নূরউন নাবী, মাওলান এইচএম সাইফুল ইসলাম।
আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ূম, আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন, আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, মাওলানা আরিফুল ইসলামসহ নগর নেতৃবৃন্দ।
অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, দেশ বার বার দুর্ণীতিতে চ্যাম্পিয়ান হয়, সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের ৯৭ ভাগ দুর্নীতিগ্রস্ত। যারা দেশ পরিচালনা করে তাদের নামেই দুর্নীতির মামলা হয়ে জেল খাটে। এই সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে আজীবন জেল খাটতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, তিতাসে প্রতি মাসে সাড়ে ১২ শতাংশ গ্যাস চুরি হয়। এই চুরি ও দুর্নীতি বন্ধ না করে সরকার এর দায় জনগণের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। সরকার দেশের পুরো অর্থনীতিকেই যেন গিলে খেতে চাচ্ছে। সমাবেশশেষে একটি বিশাল মিছিল বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেট থেকে বের হয়ে জিরোপয়েন্ট, পল্টন মোড়ে এসে মুনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত করা হয়।
/এসএস

