শহীদ হয়েছেন আমার স্বামী: মুরসির স্ত্রী

প্রকাশিত: ৬:০৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০১৯

মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির স্ত্রী তার স্বামীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তাকে “শহীদ” বলে বর্ণনা করেছেন।

মঙ্গলবার সকালে তাকে পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীদের উপস্থিতিতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে কায়রোতে দাফন করা হয়। খবর আনাদোলু’র।

মুরসির স্ত্রী নাগলা টুইটারে বলেন, “আমরা আমার স্বামী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে শহীদ হিসাবে বিবেচনা করি”।

তিনি বলেন, দক্ষিণ কায়রোয় তোরা জেলের হাসপাতালে মুরসির গোসল দেয়া হয় এবং একই কারাগারের মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, কেবলমাত্র তার পরিবারকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া প্রার্থনা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং তাকে [পূর্ব কায়রোয়] নাসর সিটির মুসলিম ব্রাদারহুড নেতাদের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, কর্তৃপক্ষ নীল ডেল্টা প্রদেশে মুরসির নিজ শহরে তাকে দাফন করতে অস্বীকার করেছিল।

মিসরের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে চিকিৎসা দিতে অবহেলার মাধ্যমে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

তার স্বজন ও বন্ধুরা বলছেন, সোমবার কায়রোর আদালতে শুনানির ফাঁকে তিনি ধপ করে মাটিতে পড়ে গেলে পুলিশ যথেষ্ট দ্রুততার সঙ্গে তার প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেনি।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্টের খবর এমন তথ্যই দিয়েছে।

তবে মিসরীয় অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা জানায়, তাকে জলদি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সেখানে তিনি মারা গেছেন বলে জানানো হয়।

অভিযোগে বলা হয়, পড়ে যাওয়ার পর কারাকক্ষের খাঁচার চত্বরে ২০ মিনিটেরও বেশি সময় ৬৭ বছর বয়সী এই মুসলিম ব্রাদারহুড নেতাকে অবহেলায় ফেলে রেখেছিল কারাপ্রহরীরা। যদিও এসময় বিবাদীরা সাহায্য চেয়েছিলেন।

ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও লিভার রোগে ভুগছিলেন মুরসি। বিদেশি শক্তি ও জঙ্গি গোষ্ঠীকে সহায়তার অভিযোগের পুনর্বিচারের শুনানিতে কথা বলার পর তিনি আকস্মিক মাটিতে পড়ে যান।

মৃত্যুর পরপরই খুবই দ্রুত ও গোপনীয়তার সঙ্গে তার দাফন শেষ করা হয়।

‘প্রহরীরা তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি মাটিতেই পড়ে ছিলেন। আধঘণ্টা পর একটা অ্যাম্বুলেন্স আসে। অন্যান্য বন্দিরা তাকে পড়ে যাওয়া অবস্থায় দেখলে চিৎকার করতে থাকেন।’

হাদ্দাদ বলেন, আটকদের মধ্যে কয়েকজন চিকিৎসক ছিলেন। প্রহরীদের কাছে তারা অনুরোধ করেন-যাতে মুরসির চিকিৎসা করতে তাদের সুযোগ দেয়া হয় কিংবা তার প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।

‘তিনি পড়ে যাওয়ার পরে যে অবজ্ঞা করা হয়েছে, তা ছিল ইচ্ছাকৃত। আটক ব্যক্তিরা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে কারাপ্রহরীরা প্রথমে যে কাজটি করেছে, পরিবার সদস্যদের কারাকক্ষের বাইরে নিয়ে গেছে।’

মুরসির পরিবারের সঙ্গে কথা বলা বিবাদীদের এক পারিবারিক বন্ধুর তথ্যের সঙ্গেও হাদ্দাদের বক্তব্য মিলে গেছে। কিন্তু নিরাপত্তার জন্য তিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।

এক অ্যাকটিভিস্ট বলেন, মুরসি কথা বলা বন্ধ করার ১০ মিনিট পর কারাকক্ষের খাঁচার দেয়ালে আঘাত করতে শুরু করেন বন্দিরা। চিৎকার করে বলতে থাকেন-তিনি অচেতন হয়ে পড়েছেন। তার সাহায্য দরকার।

‌‘সেখানে অবস্থান করা পরিবারগুলো আমাকে বলেন-অন্তত ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে পুলিশ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তাকে সেখানেই ফেলে রাখা হয়।’

আইএ/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন