বাংলাদেশে ইসলামী সংগীতাঙ্গনে দশলাখ ফ্যানের মাইলফলক “হলিটিউন” চ্যানেলে

প্রকাশিত: ৯:০৯ অপরাহ্ণ, জুন ১২, ২০১৯

প্রথম কোনো ইসলামী সংগীতের ইউটিউব চ্যানেল দশলাখ সাবস্ক্রাইবার পূর্ণ করলো


ইসলামী সংগীতাঙ্গনে মাইলফলক তৈরি করে প্রথমবারের মতো কোনো ইউটিউব চ্যানেল এক মিলিয়ন (দশলাখ) সাবস্ক্রাইবার পূর্ণ করলো।

হলিটিউন নামের ইসলামী সংগীতবেসিক ইউটিউব চ্যানেলটি এই এক মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার পূর্ণ করার গৌরব অর্জন করলো আজ। চ্যানেলটিতে সাধারণত জাতীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন “কলরব”র ইসলামী সংগীতশিল্পীদের মনমাতানো সংগীত প্রকাশ করা হয়। চ্যানেলটিতে বর্তমানে প্রায় চারশ আটষট্টি-টি ভিডিও রয়েছে।

কলরবের নির্বাহী পরিচালক মুফতী সাঈদ আহমেদ এ বিষয়ে পাবলিক ভয়েসকে বলেন,

“এ অর্জন ইসলামী সংগীতাঙ্গনের জন্য অনেক বড় অর্জন। আমরা আল্লাহ তায়ালার দরবারে শোকরিয়া আদায় করছি এবং আশা করছি ইসলামী সংগীতপ্রেমীরা এভাবেই আমাদের উৎসাহ দিয়ে যাবেন। সাথে সাথে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হচ্ছি, অপসাংস্কৃতিরোধে ইসলামী সাংস্কৃতির জয়গান গেয়ে যাবার”

আজকের এই মূহুর্তে আমরা আন্তরিকভাবে স্মরণ করছি আমাদের প্রাণের মানুষ মরহুম আঈনুদ্দীন আল আজাদ রহ. কে। তিনি আমাদেরকে ইসলামী সংগীতের এক বিস্তৃত জগতের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্যে চলে গেছেন। ওনার দেখানো পথেই আমরা আমাদের পথচলা অবিরত রাখতে চাই।

হলিটিউনের সিইও জাতীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন কলরবের যুগ্ম নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মাদ বদরুজ্জামান এ বিষয়ে পাবলিক ভয়েসকে বলেন,

“আমরা হাটি হাটি পা পা করে আজকে এমন বড় অর্জনের মুখোমুখি হলাম। এজন্য প্রথমেই আল্লাহ তায়ালার কাছে শোকরিয়া আদায় করছি এবং কলরব ও হলিটিউনের ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি”।

তিনি হলিটিউনের প্রতিষ্ঠা ও এ পর্যন্ত আসার বিষয়ে বলেন,

“২০১২ সালে চ্যানেলটি ওপেন করা হলেও এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে ২০১৭ সালে “চলার পথে” সংগীতটির মাধ্যমে। এরপর ধারাবাহিকভাবে দর্শক সাড়া পেয়ে চ্যানেলটি থেকে একের পর এক ইসলামী সংগীত উপহার দিয়েছি আমরা। দর্শকও বেশ ভালো সাড়া দিয়েছেন আমাদেরকে। এই চ্যানেলে একদিনে একটি সংগীত এক মিলিয়ন ভিউ হওয়ার রেকর্ডও অর্জন করেছে আলহামদুলিল্লাহ। কোটি সংখ্যার ভিউসমৃদ্ধ গজলও রয়েছে চ্যানেলটিতে। কেবল রমজান মাসেই হলিটিউন থেকে প্রায় ৬ কোটি মানুষ ইসলামী সংগীত শুনেছেন। আমরা এজন্য দর্শকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি” বলেন তিনি।

হলিটিউনের দশলাখ সাবস্ক্রাইবারস পূর্ণ হওয়ায় জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত জনপ্রিয় কলরবের সিনিয়র শিল্পী আবু রায়হান শুভকামনা জানিয়ে বলেন,

“এ অর্জনে আমরা গর্বিত। সাথে সাথে আমরা চাই আপনারা কলরবের পাশে থাকবেন এবং আমাদের যে কোনো ভুলভ্রান্তি আমাদের ধরিয়ে দেবেন”। আমরা ইসলামী সংগীতকে সবার কাছে পৌছে দেওয়ার এ মিশনে সবার সঙ্গী হতে চাই, বলেন তিনি।

হলিটিউনের দশলাখ সাবস্ক্রাইবার পূর্ণ হওয়ায় এ অর্জনে সোশ্যাল মিডিয়ায়ও প্রশংসায় ভাসছেন তারা। ইসলামী সংগীতপ্রেমী নেটিজানরা অভিনন্দন ও প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন হলিটিউন ও কলরব সংশ্লিষ্ট সকলকে।

চ্যানেলটির সিইও মুহাম্মদ বদরুজ্জামান এ বিষয়ে তার ফেসবুক আইডিতে আরও লেখেন,

শুধুমাত্র ইসলামী সংগীত দিয়ে এ প্রথম দশ লক্ষ সাবস্ক্রাইবারসের বিশাল মাইলস্টোন অতিক্রম করল হলিটিউন; আলহামদুলিল্লাহ্‌ । শুন্য থেকে শুরু করেছিলাম বলে এটা আমাদের কাছে বিশাল অর্জন । এ সংখ্যা একদিন কোটিও ছাড়িয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ সে স্বপ্ন গাথা আছে হৃদয়ে । সংগীতে আর্নিং অনেক কম হয় বিধায় শুরু থেকে মাল্টিকন্টেন্টের চ্যানেল হিসেবে একে পরিচিত করার পরামর্শ ছিল অনেকের । তবে আর্নিংয়ের চেয়ে ইসলামী সংগীতের এগিয়ে যাওয়ার পক্ষে ছিল আমার অবস্থান । এ পথচলা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হওয়ার দোয়া চাই।

এরপর তিনি আরও “কিছু কথা” যোগ করেন এখানে। তিনি লেখেন,

“নানারকম প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে কলরব প্রতিদিনই এগিয়ে যাচ্ছে । গরিবের ভাউজের মত কলরবকে নিয়ে যখন যার যা মনে হচ্ছে তা বলে বেড়াচ্ছে। …এতে কী কলরবের খুব বেশি ক্ষতি হচ্ছে! না কলরবের চেয়েও তারা তাদের নিজেদের অস্তিত্বের বিলীন করছে বেশি। বিশ্বাস করেন; এই (তারা) একদিনও আমাদের ভুল ধরিয়ে দিতে অফিসে আসেনি বা আমাদের ডাকেনি। শুধু মতের অমিল আর হিংসার বশবর্তী হয়ে কলরব নিয়ে তাদের কথিত মায়াকান্না। অনেকে আজাদ ভাইকে (ইসলামী সংগীতের প্রাণপুরুষ আঈনুদ্দীন আল আজাদ রহ.) চিনে না এমনকি তার চিন্তা চেতনা সম্পর্কে অবগত না তবুও আজাদ দরদী সেজে নানারকম হা-হুতাশ করে । কেউ কী একবার ভেবেছেন কলরব দিয়ে সংগীতের মাধ্যমে কতটা ইসলামের দাওয়াত হচ্ছে। সমাজের সর্বত্র ইসলামী সংগীত ছড়িয়ে পড়ছে। আলহামদুলিল্লাহ্‌ এ রমজানে শুধু ইউটিউবে কলরবের সংগীত শুনেছে ৬ কোটির উপরে।

তিনি বলেন, আমাদের গায়কীতে একজন মানুষও আল্লাহ্‌র পথে আসে এতেই আমরা খুশি, কেননা আমরা গাই আল্লাহর জন্যই। কলরব এগিয়ে যাওয়ার পথে, এগিয়ে যেতেই থাকবে আল্লাহ্‌ সহায়।

ইউটিউবে “হলিটিউন” চ্যানেলটি দেখতে ক্লিক করুন

এইচআরআর/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন