
গত বৃহস্পতিবার (০৬ জুন) বাদ ইশা দাম্মামের শাওতিল আজিজিয়া কমিউনিটি সেন্টারে শাখা সভাপতি মাও. বেলায়েত হোসাইনের সভাপতিত্বে ও সৈয়দ হাবিব উল্লাহ বেলালীর পরিচালনায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সৌদি আরব দাম্মাম জেলা শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক ও চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদের সফল চেয়ারম্যান মুফতী সৈয়দ ইসহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল যুব নেতা মাওলানা নেছার উদ্দীন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সৌদি আরব কেন্দ্রীয় কমিটির মুহতারাম সভাপতি শায়েখ মুফতী মিজানুর রহমান, সৌদি আরব কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি মুফতী আলতাফুর রহমান গাজী। বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সেচ্ছাসেবক বিভাগের সহকারী পরিচালক আলহাজ্ব মো. নাজিম উদ্দীন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রখেন, সৌদি আরব কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাও জহিরুল ইসলাম, সৌদি আরব কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাও ওসমান গনী রাসেল, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রবাসী বিষয়ক সম্পাদক মাও জাকির হোসেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রিয়াদ মহানগর শাখার সেক্রেটারী মাও.কবির হোসেন, দাম্মাম জেলার সেক্রেটারী মাও ফয়েজ উল্লাহ, সোবেকা শাখার সভাপতি মাও. আবুল খায়ের, মাও. নজরুল ইসলাম, মাও. হোসাইন, মাও. ওমর,। ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন হাফেজ ইয়াসিন, আর কুরআন তেলাওয়াত করেন মো. আব্দুল আজিজ আলতাফ প্রমুখ।
- প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন- যারা দেশ পরিচালনা করছেন, তাদের মধ্যে যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর ভয় না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত দেশ দুর্নীতি মুক্ত হবে না। আপনারা সকলেই জানেন হযরত ওমর রা. অর্ধ জাহানের বাদশা হওয়া সত্বেও রাত্রিবেলায় গ্রামে হেঁটে হেঁটে জনগনের অবস্থা স্বচক্ষে দেখতেন, তার কারন হল তাঁর মাঝে ‘তাকওয়া’ ছিল, অর্থাৎ আল্লাহর ভয় বিরাজ করছিল।
প্রধান বক্তা মাও. নেছার উদ্দীন বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে দুইটি ধারায় কাজ করছে, একটি হল আত্মশুদ্ধির জন্য ‘বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি’, দ্বিতীয়টি হল ইসলামী হুকুমত কায়েমের জন্য ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’। এই দুই মিশনের মাধ্যমে জনগনের মধ্য জনসচেতনতা তৈরী করে গন বিপ্লব তৈরীর কাজ করছে ইসলামী আন্দোলন।
আপনারা সকলেই দেশের দুর্নীতির অবস্থা কোথায় পৌছেছে তা জানেন। ঈদের পূর্বে আপনারা ফেসবুকের মাধ্যমে জেনেছেন বাংলাদেশের বড় একটা কোম্পানী মাত্রাতিরিক্ত মূল্য রেখে জনগনকে ঠকানোর অপরাধে একজন ম্যাজিস্ট্রেট আর্থিক জরিমানা করেন। সরকার ঐ কোম্পানীকে শাস্তি না দিয়ে বরং ম্যাজিস্ট্রেটকে তাৎক্ষণিক বদলি করে দিয়েছিল। এই হল বর্তমান অবস্থা। আপনারা আরো জানেন, একটা বালিশ ক্রয় করার ও উপরে উঠানোর মজুরী কাহিনী, এবং দেশকে কারা বার বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছে।
এই দুর্নীতিবাজদের থেকে আমার প্রিয় মাতৃভুমিকে উদ্ধার করতে হলে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। আমরা এই কথা বলি না যে, ইসলামী আন্দোলন রাতারাতি দেশকে পাল্টিয়ে দিবে। আমরা পরিকল্পনামাফিক ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে চাই।
যা আগামী দিনে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে। এছাডা আপনারা গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দেশব্যাপি সাড়া জাগিয়েছে। যার কারনে জনগন নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পীর সাহেব চরমোনাইকে। পীর সাহেব চরমোনাইর যোগ্য নেতৃত্বে ইসলামী আন্দোলন দেশ ও দেশের বাহিরে সুনামের সাথে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
অতএব আমরা যারা আজকের প্রোগ্রামে উপস্থিত রয়েছি, আপনাদের প্রতি উদাত্ত আহবান করছি, আপনারা ইসলামী আন্দোলনের পতাকাতলে এসে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠায় কাজ করি।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, দেশে দুর্নীতির যে ভয়াবহ অবস্থা, কি বলবো যা বলে শেষ করা যাবেনা, তার পরেও দু’একটি উদাহরন দিচ্ছি, যা আমার নয় এটি টিআইবির রিপোর্ট , রাস্তা নির্মানের দুর্নীতি, ব্রীজ নির্মানে, অর্থনৈতিক দুর্নীতি। এসময় বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত দুর্নীতির নিউজগুলা তিনি উপস্থিতি শ্রোতাদেরকে পড়ে শুনান।
তিনি বলেন এই দুর্নীতির মহাসাগর থেকে উদ্ধার হতে হলে আমাদেরকে ও সৎ হতে হবে। আদর্শিকভাবে নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে। অতএব দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে ইসলামকে ক্ষমতায় আনতে হবে। আপনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ করতেই হবে, এই কথা আমরা বলি না, আমরা বলি মসজিদের ইমাম ভালো লাগে না কোনো সমস্যা নেই আপনি অন্য মসজিদে নামাজ পডুন কিন্ত গির্জায় যাওয়া যাবে না। তাই ইসলামী আন্দোলন যদি ভালো না লাগে কোনো সমস্যা নেই। কিন্ত কালমার্ক্সের অনুসরন করা যাবে না। প্রয়োজনে অন্য কোন সহীহ দল করুন তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নাই। তাই আসুন সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই।
এসময় প্রধান অতিথি তার বক্তব্য শেষে আগামী ২০১৯-২০২১ সেশনের জন্য মাও. বেলায়েত হোসাইনকে সভাপতি ও মাও. ফয়েজ উল্লাহকে সেক্রেটারী করে দাম্মা শাখার নতুন কমিটি ঘোষনা করেন এবং শপথবাক্য পাঠ করান।
পরে প্রধান অতিথির দোয়া মুনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।
/এসএস

