

বাগেরহাটে প্রতিশোধ নিতে মাদরাসা ছাত্রী লামিয়া আক্তার ফারিয়াকে (৬) ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে অভিযুক্ত মিনহাজুল ইসলাম শোয়েব।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাগেরহাটের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবির পারভেজের আদালতে অভিযুক্ত তার অপরাধ স্বীকার করে ওই জবানবন্দি দেন।
মিনহাজুল ইসলাম শোয়েব পিরোজপুর জেলার নামাজপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ওরফে ইমনের ছেলে। শোয়েব তার নানা বাড়ি পাতিলাখালী গ্রামে থেকে পড়ালেখা করছিলেন। তিনি চলতি শিক্ষাবর্ষে পাতিলাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
শিশু ফারিয়া আক্তার স্থানীয় কোন্ডলা বড়–বিবি দাখিল মাদরাসার শিশু শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
গত রোববার সন্ধ্যায় বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া ইউনিয়নের পাতিলাখালী গ্রামের বাড়ির পাশের একটি খালের চরে পুঁতে রাখা ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ও গ্রামবাসী। এই ঘটনায় নিহতের বাবা ওমর আলী শেখ বাগেরহাট মডেল থানায় মিনহাজুল ইসলাম শোয়েবের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত মিনহাজুল ইসলাম শোয়েব ও সন্দেহভাজন মিঠুল শেখকে (১৯) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মিঠুল শেখ বাগেরহাট সদর উপজেলার কোন্ডলা গ্রামের ছায়েব আলীর ছেলে।
বাগেরহাট সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিরণ্ময় সরকার বলেন, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া মিনহাজুল ইসলাম শোয়েব তার অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে শোয়েব বলেছে, সে তার নানা লিয়াকত আলীর বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করতেন। এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর তার কিছু বন্ধুদের সঙ্গে মিশে নেশা করত। এটা তার চাচাতো নানা ওমর আলী জানতে পেরে বিভিন্ন সময়ে রাগারাগি করতেন। তিনি তাকে নেশা ও অসৎ ওই বন্ধুদের সঙ্গ ছেড়ে ভালো হওয়ার উপদেশ দিতে থাকেন। এই উপদেশে ভীষণ বিরক্ত হন শোয়েব।
শোয়েব বলে, ঘটনার দিন নিহত ফারিয়ার বাবা ওমর আলী এলাকায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গেলে বাড়ি পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে। এই সুযোগে আমার চাচাতো খালা ফারিয়াকে কৌশলে আম খাওয়ানোর প্রলোভনে বাড়ির সামনের একটি খাল পার করে সুপারি বাগানে নিয়ে যাই। সেখানে নিয়ে ধর্ষণ করি। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে চিৎকার করতে থাকে।
ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে আমি তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করি। পরে আমি তার মরদেহটি লুকিয়ে ফেলতে বাগানে গর্ত খুঁড়ি। মরদেহটি লুকানোর আগেই বাড়ির লোকজন ও স্থানীয় প্রতিবেশীরা ফারিয়াকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়ায় তার দেহটি কোনো রকমে খালের চরে পুঁতে রেখে সরে পড়ি।
ফারিয়ার মরদেহটি লুকানোর কাজে তার বন্ধু মিঠুল শেখ সহযোগিতা করেছে শোয়েব দাবি করেছেন।
জিআরএস/পাবলিক ভয়েস