

গত ২৬ মার্চ’১৯ মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, শায়েখে চরমোনাই।
আজ শুক্রবার (২৯ মার্চ) বাদ জুমআ এক বিবৃতিতে মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, স্বাধীনতা দিবস উদযানের জন্য বরাদ্ধকৃত টাকা খরচ করে ভিসি সাহেব শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করে চা চক্র করবেন, আর এ নিয়ে ছাত্ররা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে বলা হবে “রাজাকারের বাচ্চা” এটা মেনে নেয়া যায় না।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া যৌক্তিক ছিল। ভিসি সাহেব ওদেরকে উস্কে দিয়েছে, যা মোটেও উচিৎ হয়নি। তার এহেন বক্তব্য প্রকাশ্যে ফিরিয়ে নেয়া উচিৎ। তার বুঝা উচিৎ ছিল এটা বরিশাল, আর বরিশালের ছেলেরা শতাব্দীকাল ধরেই প্রতিবাদী এবং সংগ্রামী হিসেবে খ্যাত।
মুফতী ফয়জুল করীম বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখাকে মাঠে থাকারও নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশনা দেয়া হলেও শুক্রবার পর্যন্ত হল ত্যাগ করেনি শিক্ষার্থীরা। নতুন করে শিক্ষার্থীরা ‘ভিসি বিরোধী’ আন্দোলন শুরু করেছে। শুক্রবার সকাল থেকে কোনো বিক্ষোভ করা না হলেও বিকাল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এরপর সন্ধ্যায় তারা একটি মশাল মিছিল করে। এ সময় তারা ভিসি ড. এসএম ইমামুল হককে প্রত্যাহার করে নেয়ার দাবি জানান।
আন্দোলনরত ছাত্র লোকমান হোসেন জানান, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজন করা হলেও শিক্ষার্থীদের এই সম্পর্কে কোনো কিছু জানানো হয়নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনের সূচনা হয়। তবে পরে ভিসি সকল শিক্ষার্থীকে রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেয়ায় এই আন্দোলন আরও বেগবান হয়। তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলনে ভয় পেয়ে ভিসি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশনাও দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের ১১ দফা দাবি ও ভিসিকে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমরা হলে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আন্দোলনের চতুর্থ দিনে বিকালে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচী পালন করা হয়েছে এবং সন্ধ্যায় ভিসিকে প্রত্যাহার করে নেয়ার দাবিতে মশাল মিছিল করা হয়েছে ক্যাম্পাসে।
ততদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে নেয়া না হবে ততদিন আন্দোলন চলবে বলে জানান আন্দোলনরত এই ছাত্র। অপর দিকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হল থেকে কিছু ছাত্র হল ত্যাগ করলেও বেশিরভাগ ছাত্রী এখনো হলে অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, ২৬ মার্চ থেকে টানা চারদিন ভিসি বিরোধী এই আন্দোলন চলমান রয়েছে।