

-মিদহাদ আহমদ
…লোকোজ বিশ্বাস হচ্ছে ভ্যাম্প্য্র রতে মানুশস্র রক্ত খেয়ে বেড়াবে, দিনে কফিনের ভেতর শুয়ে থাকবে। কারণ, রোদ গায়ে লাগা মানেই তাদের মৃত্যু। আমাকে দেখুন দিনে ঘুড়ে বেড়াচ্ছি।
“তাই তো দেখছি।”
“শুধু চোখ গুলো প্রটেক্ট করতে হয়। চোখে রোদ লাগানো যায় না।
“এ জন্যই সানগ্লাস?
“ঠিক ধরেছেন।” ‘মানুষের রক্ত আপনি কখন খান?
দিনে না রাতে?
মানুষের রক্ত খান তো?
“জ্বি খাই। বাধ্য হয়ে খেতে হয়। আমাদের জন্য কিছু এসেন্সিয়াল ভিটামিন মানুষের রক্ত ছাড়া পাওয়া যায় না।
“ও আচ্ছা।”
“স্যার আপনি কি ভয় পাচ্ছেন?”
“না।
প্রথম পর্ব- কোনো এক দুপুরের ছায়া
আপনি আমার ঘাড়ে দাত বসিয়ে রক্ত খেয়ে ফেলবেন সেটা বিশ্বাস হচ্ছে না।।”
“সেভাবে রক্ত খাই না।ব্লাড ব্যাংক থেকে কিনে নিয়ে আসি।
এক প্যাকেটে এক-দু সপ্তাহ চলে যায়। ব্লাড ব্যাংকগুলো থাকায় সুবিধা হয়েছে। পছন্দসই রক্ত কিনতে পারি। সব রকম রক্ত সবার স্যুট করে না। আমারর পছন্দের রক্ত হলো “বি নেগেটিভ”।
“শুনে ভালো লাগলো।”
“আপনার রক্তের গ্রুপ কি স্যার?”
“জানি না রক্তের গ্রুপ কি। পরীক্ষা করাইনি।
“পরীক্ষা করিয়ে রাখা ভালো। শহরের মানুষ যে পরিমানে বাড়ছে এক্সিডেন্ট তো হরহামেশাই লেগে থাকে। যে দিকে তাকাই শুধু মানুষ। মানুষের বৃদ্ধির হার খুবই আশংকাজনক।”
“ভ্যাম্পায়ারের সংখ্যা বাড়ছে না কমছে?”
“মানুষের তুলনায় কম। আগে আমিরা মানুষের ঘাড়ে কামড় দিয়ে রক্ত খেতাম। তখন ভ্যাম্পায়ার বেশী ছিলো। এখন ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত খাচ্ছি। কাজেই ভ্যাম্পায়ারের সংখ্যা বাড়ছে না। ব্যাপারটা আপনাকে বুঝিয়ে দিচ্ছি।”
আলিফ সাহেব বললেন, “কিছু কনে করবেন না, আমি ব্যাপারটা বোঝার কোনো আগ্রহ বোধ করছি না। লোকটা বললো, “শোনার পর আগ্রহ বোধ করবেন। ভাত খেতে খেতে শুনুন। শুনতে তো কোনো ক্ষতি নেই। ভ্যাম্পায়ার তো আসলে ভাইরাস ঘটিত একটা অসুখ।
“ও আচ্ছা।” লোকটা আবার বলা শুরু করলো,
“ভাইরাসগুলো বেশ দীর্ঘজিবী। এরা বিশেষ ধরনের মৃত্যুহীন ভাইরাস। মানুষের শরীরে একবার ঢুকতে পারলে আর মরে না। আর যার শরীরে ঢুকেছে তাকে বাচিয়ে রাখে নিজের বেচে থাকার জন্য। মানুষ মরে গেলে তো তারাও মরে যাবে। তাই না?”
“তা ঠিক বলেই তো মনে হয়।”
লোকটা আবার বলা শুরু করলো, “আমাদের যে রক্তগুলো খেতে হিয় তার সম্পুর্নটা কিন্তু অই ভাইরাসগুলোর জন্য।
“ও।”
“একটা ভ্যাম্পায়ার যখন একজন মানুষের রক্ত খায় তখন ভাইরাস একজন মানুষের দেহ থেকে অন্যজনের দেহে ঢুকে পরে। আজকাল আমরা ব্লাড ব্যাংকের রক্ত খাওয়া শুরু করেছি তাই এখন মানুষের ভাইরাসঘটিত রোগ কম হচ্ছে।”
“ভালো।”
তবে একেবারে যে নেইই তাও বলবো না। হঠাৎ হঠাৎ অনেকের সঙ্গে দেখা হয়ে যায় যারা আসলেই ভ্যাম্পায়ার। যেমন আজ যখন আপনাকে বোটানিক্যাল গার্ডেনে দেখেছিলাম তখন মনে করেছিলাম আপনিও ভ্যাম্পায়ার। আলিফ সাহেব হতভম্ব হয়ে লোকটাকে বললেন,
“আমায় ভ্যাম্পায়ার ভেবেছিলেন?”
“জ্বি। আশা করি আমার কথায় আহত হননি।
” আলিফ সাহেব কঠিন চোখে তাকিয়ে রইলেন। লোকটার গালে ঠাস করে একটা চড় দিতে পারলে মনটা শান্ত হতো। তিনি চড় দিলেন না। শোকনো গলায় বললেন,
“আমাকে আপনি ভ্যাম্পায়ার ভেবেছিলেন?
“জ্বি।” আপনার চোখে সানগ্লাস ছিলো।আপনি ভ্যাম্পায়ারের মতো উদ্যেশ্যহীদ ভাবে ঘুরছিলেন।আমরা ভ্যাম্পায়াররাও উদ্যেশ্যহীব ভাবে চলাফেরা করি। আমাদের তো কোনো অফিস-টফিসস নেই। হা হা হা। আলিফ সাগেবের খাওয়া শেষ হয়েছে। তিনি আরও বিরক্ত হয়ে হাত ধোয়ে নিজের যায়গায় ফিরে এলেন। লোকটার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া উচিত। লোকটা হয় উন্মাদ না হয় বদ মতলব আছে। মতলব কি ধরা যাচ্চে না।
“স্যারের খাওয়া তো শেষ হয়েছে।এবার আমার কাছ থেকে একটা সিগারেট নিন।
“না, সিগারেট খাই না।”
“সিগারেট অবশ্যই খান। নাহলে সাথে দেয়াশালাই রাখতেন না। ভ্যাম্পায়ারের কাছ থেকে সিগারেট নিলে অসুবিধা নেই।ভাইরাস আপনাকে ধরবে না। এইই ভাইরাস শুধুমাত্র রক্তবাহিত। আলিফ সাহেব সিগারেট নিলেন।
“স্যার,পান খাবেন? চমন বাহার দিয়ে একটা মিষ্টি পান দিতে বলি। ভাত খাওয়ার পর পান খেলে ভালো লাগবে।
“না না, পান খাবো না”
লোকটা আলিফ সাহেবের দিকে একটু ঝুকে বসে বললো, আপনাকে একটা গোপন কথা বলি। অনেকেইই আছে যারা নিজেরা বুঝতে পারে না যে তারা ভ্যাম্পায়ার। দিব্যি মানুষের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। তখন আমরা যারা ভ্যাম্পায়ার তাদের দায়িত্ব হচ্ছে ওদের জানানো। হয় কি জানেন, ব্লাড ট্রান্সফিউশান থেকে ভ্যাম্পায়ার ভাইরাস গায়ে ঢুকে গেলো। এইডস ভাইরাসে ধুম করে লোক মারা যায়। ভ্যাম্পায়ার ভাইরাসে এরকম মৃত্যু নেই। সেটাও এক যন্ত্রনা। দীর্ঘদিন বেচে থাকতে কি আর ভাল্লাগে? জীবন বোরিং হয়ে যায়।
“আপনি কতদিন ধরে বেচে আছেন?”
“প্রায় তিনশ বছর। বোটানিক্যালল গার্ডেন এই নিয়ে একান্ন বার দেখলাম।ঠিক করেছি আরও ঊনপঞ্চহাশ বার দেখে একশো পূর্ন করবো।তারপর আর দেখবো না। আলিফ সাহেব জিজ্ঞেস করলেন, “ভ্যাম্পায়ারের লক্ষন কি?”
“লক্ষন খুব সহজ। ভ্যাম্পায়ারের রোদে ছায়া পড়ে না।”
“কেনো?”
“কেনো সেটা জানি না। ছায়া পড়ে না সেটা জানি।স্যার,যাই আপনার সাথে দেখা হয়ে খুব ভালো লাগলো।”
লোকটা উঠে চলে গেলো। আলিফ সাহেব স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে হোটেলের বিল মিটিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলেন কৌতুহল থেকেই নিজের ছায়ার দিকে তাকালেন। আশ্চর্য!তার কোনো ছায়া নেই। অন্যদের দিকে তাকালেন। সবার ছায়া আছে শুধু তার নেই। ব্যাপারটা কি? আলিফ সাহেবের মাথা ঘুরতে লাগলো। পড়ন্ত রোদ যেনো আরও বেশী উজ্জ্বল হতে লাগলো।