
পাবলিক ভয়েস: ১৩টি উপজেলা নিয়ে সিলেট জেলা গঠিত। জেলার ওসমানীনগর ছাড়া জেলার সবকয়টি উপজেলায় এখন নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। আসন্ন পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে সিলেটের ১২টি উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে।
জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের জন্য আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। প্রতিটি উপজেলায় একক প্রার্থী দিয়েছে ক্ষমতাসীন আ.লীগ। একক প্রার্থী ঘোষণা দিলেও বিদ্রোহী হয়ে মাঠে রয়েছেন সিলেটের ১২ উপজেলার ১৯ নেতা। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তারা।
বিদ্রোহীদের মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় সাতজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আর একজন করে তিনটি উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। একজন করে মনোনয়ন দাখিল করা উপজেলাগুলো হচ্ছে- দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ। এনিয়ে আ.লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে।
কোন্দলের কারণে গেল নির্বাচনে ১২টি উপজেলার মধ্যে মাত্র ৪টিতে জয় লাভ করে আ.লীগ। এসব কোন্দল মেঠাতে না পারলে গেল নির্বাচনের মতো পরাজয়ের পাল্লা ভারি হতে পারে।
সূত্র জানা যায়, সিলেটের ১২ টি উপজেলায় আ.লীগের একক ১২ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাদের চ্যালেঞ্জ করে আরও ২০ প্রার্থী আ.লীগের ‘বিদ্রোহী’ হয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকতে চান। এজন্য তারা মনোনয়ন দাখিলও করেছেন।
একক প্রার্থী হিসেবে জকিগঞ্জে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি লোকমান উদ্দীন চৌধুরী, বালাগঞ্জে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান মফুর ও বিশ্বনাথে সিলেট জেলা আ.লীগের উপদেষ্টা এস এম নুনু মিয়া রয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সিলেট সদর উপজেলায় সিলেট জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হয়ে মনোনয়ন দাখিল করেছেন অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিরাজী।
কানাইঘাট উপজেলায় আ.লীগের দলীয় প্রার্থী সিলেট মহানগর কৃষকলীগের সভাপতি আবদুল মোমিন চৌধুরী। তাকে টেক্কা দিতে বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন জেলা আ.লীগ নেতা মোস্তাক আহমদ পলাশ ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা খয়ের চৌধুরী।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। তাকে ঠেকাতে মাঠে রয়েছেন ৭ বিদ্রোহী প্রার্থী। তারা হচ্ছেন- উপজেলা আ.লীগের উপদেষ্ঠা আবদুল বাছির, সাধারণ সম্পাদক আফতাব আলী কালা মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াকুব আলী, ইসলামপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি শামীম আহমদ, তার স্ত্রী জরিনা বেগম, উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা শামসুল হক, হাফিজ মাসুম।
গোয়াইনঘাটে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন আলীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া হেলাল। দলের এ প্রার্থীকে পরাজিত করতে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে বিদ্রোহী হয়েছেন যুক্তরাজ্য আ.লীগের উপদেষ্টা গোলাপ মিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। সেক্রেটারির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি কামাল আহমদ।
বিয়ানীবাজারে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান। দলের বিদ্রোহী হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আবুল কাশেম পল্লব এবং যুক্তরাজ্য প্রবাসী নেতা শামীম আহমদ।
দক্ষিণ সুরমায় বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু জাহিদের ওপর ভরসা রেখেছে ক্ষমতাসীন দল। তার সঙ্গে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন জেলা আ.লীগের সদস্য ময়নুল ইসলাম।
ফেঞ্চুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সাবেক ভিপি সাংবাদিক শাহ মুজিবুর রহমান জকন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। এ উপজেলায় ইতিমধ্যে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা নুরুল ইসলাম।
গোলাপগঞ্জে দলীয় প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইকবাল আহমদের সঙ্গে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ওয়াহাব জোয়ারদার।
প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন সিলেটের ১২ উপজেলার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গতকাল সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। আগামী মার্চ মাসের ১৮ তারিখ হবে ভোট। মনোনয়ন যাচাই-বাচাই হবে ২০ ফেব্রুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৭ ফেব্রুয়ারি।

