

আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি রবিবার একুশে গ্রন্থমেলায় নিয়মতান্ত্রিক অনুষ্ঠানসূচি থাকলেও নেই সদ্য বিদায়ী কবি “আল মাহমুদ” নিয়ে কোন আয়োজন।
বাংলা একাডেমির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেলা চলবে বেলা ৩:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত। বিকেল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে “সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক : শ্রদ্ধাঞ্জলি” শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন খালেদ হোসাইন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মফিদুল হক, আসাদ মান্নান, শিহাব সরকার, আনিসুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কবি মনজুরে মওলা। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়াও গ্রন্থমেলায় থাকছে গ্রন্থমেলা বিষয়ে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলন। বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/৫ ফাল্গুন ১৪২৫ রবিবার বিকেল ৩:০০টায় বাংলা একাডেমির শহিদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯’ বিষয়ে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী গ্রন্থমেলার বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
এতসব আয়োজনের মধ্যেও বাংলা একাডেমি সদ্য বিদায় নেয়া বাংলা সাহিত্যের শক্তিমান কবি আল মাহমুদ নিয়ে কোন আয়োজন রাখেনি।
পড়ুন : সোনালী কাবিনের আল মাহমুদ পাড়ি জমালেন পরপারে
প্রসঙ্গত : সাহিত্য প্রেমিকদের অসম্ভব জনপ্রিয় গ্রন্থ সোনালী কাবিনের জনক “আল মাহমুদ” একাধারে উপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, শিশুসাহিত্যিক, লেখক এবং সাংবাদিক। এবং তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধেও অংশ নিয়েছেন। তবে আল মাহমুদের সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন শক্তিমান কবি। বীর মুক্তিযোদ্ধা কবি আল মাহমুদের সাংবাদিকতার হাতেখড়ি দৈনিক মিল্লাত পত্রিকার মধ্য দিয়ে। অধুনালুপ্ত দৈনিক গণকন্ঠের সম্পাদক বিংশ শতাব্দীর সক্রিয় এ আধুনিক কবি বাংলা কবিতাকে নতুন আঙ্গিকে, ভাষা ও বাকভঙ্গীতে সমৃদ্ধ করে গেছেন।
কাব্যগ্রন্থ ‘লোক লোকান্তর’ আল মাহমুদকে স্বনামখ্যাত কবিদের কাতারে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে ‘কালের কলস’, ‘মায়াবী পর্দা দুলে উঠো’ ‘ সোনালী কাবিন’ তাকে প্রথম সারির কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। বাংলা কবিতার শহরমুখী প্রবণতার মধ্যেই ভাটি বাংলার জনজীবন নদীনির্ভর জনপদ, চরাঞ্চলের জীবন প্রবাহ , নরনারীর চিরন্তন প্রেম এই রোমান্টিক কবির কবিতার অনুষঙ্গ হিসেবে ধরা দেয়। আধুনিক বাংলা ভাষার প্রচলিত কাঠামোর মধ্যে স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততায় আঞ্চলিক শব্দের প্রয়োগ কবির অনন্য কীর্তি।
১৯৭৫ সালে কবি আল মাহমুদকে শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের সহপরিচালক পদে নিয়োগ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দীর্ঘদিন দায়িত্বপালনের পর পরিচালক হিসেবে ১৯৯৩ সালে অবসর নেন তিনি।
সাড়া জাগানো সাহিত্যকর্ম ‘ সোনালী কাবিন’ এর কবি আল মাহমুদ ১৯৬৮ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি জয়বাংলা পুরস্কার, জীবনানন্দ দাস স্মৃতি পুরষ্কার, সুফী মোতাহের হোসেন সাহিত্য স্বর্ণপদক, নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদক এবং ২১ পদকসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হন।