
পাবলিক ভয়েস: ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় মো. সেলিম নামে এক কৃষককে হত্যার অভিযোগে মোহাম্মদ আলী নামে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শককে (এসআই) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি জামালপুর সদর থানায় কর্মরত। গতকাল সোমবার তার কর্মস্থল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গত শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুই দিনের ছুটিতে এসে এসআই মোহাম্মদ আলী এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানান।
ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন বলেন, পূর্ববিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। মামলা ও পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে ঘটনায় এসআই মোহাম্মদ আলীর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষকে অবহিত করার পরই তাদের অনুমতিক্রমে এসআই মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় প্রমাণিত হয় আইন সবার জন্যই সমান। সে পুলিশ সদস্য বলে অপরাধ করে পার পাবে এটা ভাবার কোনো অবকাশ নেই। ইতিমধ্যে এসআই মোহাম্মদ আলীর সৎ মা ফিরুজা খাতুনকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে এ ঘটনায় গতকাল সোমবার দুপুরে নিহত সেলিমের নিজ গ্রাম আন্ধারিয়াপাড়ায় জানাজা শেষে গ্রামের শত শত মানুষ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা সদরে প্রবেশ করে। প্রথমে থানায় প্রবেশ করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে তারা।
পরে পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের থানা থেকে বের করে দিয়ে থানার প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়। বিক্ষোভকারীরা সেখান থেকে সরে গিয়ে উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করে সেখানেও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে। পরে তারা উপজেলা পরিষদের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, পূর্বশত্রুতার জেরে গত শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার আন্ধারিয়াপাড়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে কৃষক মো. সেলিমকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে একই এলাকার আলাল উদ্দিন ফকিরের গরুর খামারে হাত বেঁধে রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুত আহত করেন এসআই মোহাম্মদ আলী, তার ভাই, ছেলে ও ভাগনে । রাতেই মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে প্রথমে ফুলবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রোববার রাতে সেলিমের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় গত রোববার রাতেই নিহতের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন বাদী হয়ে এসআই মোহাম্মদ আলীকে প্রধান আসামি করে আরও পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে ফুলাবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অন্যান্য আসামিরা হলেন- মোহাম্মদ আলীর ছেলে রিয়াদ আহম্মেদ (২০), ভাই মোহাব্বত আলী (২১), ভাগনে ফারহান আলী (২৩) ও সৎ মা ফিরেুজা খাতুন (৪০)।

