ঢাবিতে ইসলামপন্থী রাজনীতি বন্ধ করতে দেয়া হবে না : মুফতী ফয়জুল করীম

প্রকাশিত: ৬:১২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৯

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইসলামভিত্তিক ছাত্র সংগঠনের রাজনীতি বন্ধ করতে যারা পায়তারা চালাচ্ছে তারা সফল হবে না। এ প্রচেষ্টায় তারা সফল হবে না।

আজ ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগর পূর্বের ‘নগর সম্মেলনের’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ইসলাম সার্বজনীন ও পুর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার নাম। ইসলামের বিচার ব্যবস্থা সর্বশ্রেষ্ঠ বিচার ব্যবস্থা, ইসলামের সমাজ ব্যবস্থা সর্বশ্রেষ্ঠ সমাজব্যবস্থা। ইসলামের অর্থব্যবস্থা সর্বকালের শ্রেষ্ঠ অর্থ ব্যবস্থা। কাজেই ইসলামকে কোন বিশেষস্থানে বন্দি করে রাখার সুযোগ নেই। ইসলাম ছাড়া বাকি মতবাদগুলো বার বার অসাড় ও ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। যারা সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে ইসলামকে দূরে রাখতে চায় তাদের মতলব ভাল নয়।

মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন মুসলিম নবাব স্যার সলিমুল্লাহ। মুসলিম ও ইসলামী চেতনাবোধ থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এখন যারা ঢাবিকে ইসলামমুক্ত করতে চায় তারা কারা? তাদের পরিচয় ৯৫ ভাগ মুসলমান জানতে চায়। ইসলামী রাজনীতির চর্চা বন্ধ করতে চাইলে মুসলমানরা নিরবে বসে থাকবে না। এখন ঢাবি ক্যাম্পাসে আদর্শবাদী রাজনীতি চর্চায় যারা হতবাক হয় তারাই মূলত প্রতিক্রিয়াশীল ও পশ্চাৎপদ।

তিনি আরো বলেন, আদর্শবান মানুষ ধর্মকে তার প্রাত্যহিক জীবনে অনুশীলন করে। ইসলাম একটি আদর্শিক জীবনব্যবস্থা; যা থেকে রাজনীতিকে বিচ্ছিন্ন করে ভাবার কোন সুযোগ নেই। ইসলাম তার আদর্শিক সৌন্দর্য্য ও ঐতিহ্য দিয়ে দেড় হাজার বছর বিশ্বজুড়ে শাসন করেছে।

বক্তব্যে তিনি বলেন, ইসলামী রাজনীতিকে বিরুদ্ধবাদীরা যেভাবে চিত্রায়িত করে তা সত্যের অপলাপ। মূলত ; ইসলামী রাজনীতি সাম্য, সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ব, পরমত সহিঞ্চুতা, নারী ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার নিশ্চয়তা দেয় যা হাজার বছরের ইতিহাস দ্বারা প্রমাণিত।

মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম ইশা ছাত্র আন্দোলন বিষয়ে বলতে গিয়ে বলেন, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন ইসলামের ইসলামের মূলনীতিকে ধারণ করে স্বাধীনতার মূল চেতনা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য নিয়মতান্ত্রিকভাবে গঠনমূলক, ছাত্র বান্ধব রাজনীতির চর্চা করছে। বাম জোটের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে বিভেদ বিভক্তি নয় বরং সবার অংশগ্রহণমূলক সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনীতির পরিবেশ তৈরী করতে হবে। ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনসহ ইসলামপন্থিদের সুযোগ না দিলে ইসলামপ্রিয় ছাত্রজনতা নিরবে বসে থাকবে না বলেও হুশিয়ার করেন তিনি।

প্রসঙ্গত : দীর্ঘ প্রায় ২৮ বছর পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আজই (১১ ফেব্রুয়ারি) ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু এ নির্বাচনে ইসলামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলো সম্মিলিতভাবে ইসলামপন্থী সংগঠন গুলোকে ধর্মীয় সংগঠন আখ্যা দিয়ে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার আবেদন করেছে। তবে এ বিষয়ে “ইসলামভিত্তিক” ছাত্র সংগঠন ইশা ছাত্র আন্দোলনের সহ ইসলামী ছাত্র সংগঠন সমূহ বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছে এবং ডাকসু নির্বাচন বিষয়ে তারা কঠোর পদক্ষেপে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

মন্তব্য করুন