ইশা ছাত্র আন্দোলন ধর্মভিত্তিক নয় বরং ইসলামভিত্তিক সংগঠন : মারুফ

প্রকাশিত: ৩:৪১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৯

পাবলিক ভয়েস: ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ছাত্র সংগঠন। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন (ডাকসু নির্বাচন) নিয়ে বেশ আলোচনায় আছে সংগঠনটি। ঢাবিতে অংশগ্রহণমূলক ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে তারা দৃশ্যমান মিছিল করে আলোচনার তুঙ্গে ছিলো। এ আলোচনার মধ্যেই ইশা ছাত্র আন্দোলনের ঢাবি শাখার সাধারন সম্পাদক মুহা. মাহমুদুল হাসান গণমাধ্যমের সাথে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আলাপকালে এক বক্তব্যে বলেছেন, “ইশা ছাত্র আন্দোলন ‘ধর্মভিত্তিক সংগঠন’ নয় এবং ধর্মকে আমরা ব্যক্তিগত বিষয় মনে করি” এ বক্তব্যের পর সবার মধ্যেই আলোচনা সমালোচনার ঝড় তৈরি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ইসলামপন্থীদের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয এবং পক্ষে বিপক্ষে প্রচুর লেখালেখি হয়। কারণ ইশা ছাত্র আন্দোলন একটি ইসলাম ধর্মভিত্তিক দল হিসেবেই সবাই জানে।

এসব সমালোচনার মধ্যেই আজ (৫ ফেব্রুয়ারি) ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ ফজলুল করিম মারুফ এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

তিনি দাবি করেন, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন ধর্মভিত্তিক নয় বরং ইসলামপন্থী সংগঠন। ধর্ম ভিত্তিক সংগঠনের চেয়ে ইসলামপন্থী সংগঠন বলতেই তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এবং এর কিছু ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছেন। তবে “ইশা ছাত্র আন্দোলন ঢাবি শাখার সাধারন সম্পাদক মাহমুদুল হাসানের বক্তব্যে যতটুকু শরয়ী দৃষ্টিকোণে ভুল ততটুকু বিনা অজুহাতে প্রত্যাহার করছি” বলেন তিনি।

এ বিষয়ে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ ফজলুল করিম মারুফ এর বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো;

‘ধর্মভিত্তিক রাজনীতি’। উপমহাদেশের রাজনীতিতে এর আক্ষরিক অর্থের বাহিরে নিজস্ব পারিভাষিক অর্থ রয়েছে। সেই মুঘল আমল থেকে, বিশেষত ইংরেজ আমলে এদেশে বহু ধর্মভিত্তিক সংগঠন গড়ে ওঠে। যেগুলোর প্রাথমিক লক্ষ্য ছিলো সেই ধর্মের সংস্কার বা উন্নয়ন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই সেই সংগঠনগুলোর মুল কাজ হতো ভিন্ন ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ চর্চা করা। এই বিদ্বেষ চর্চা এতোটাই ভয়াবহ হতো যে, তা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রুপ নিতো। সেই থেকে ভারত উপমহাদেশে “ধর্মভিত্তিক সংগঠন” পরিভাষাটা নেতিবাচক অর্থে ব্যবহার হয়।

তাই আমরা “ধর্মভিত্তিক সংগঠন” পরিভাষার পরিবর্তে “ইসলামপন্থী” পরিভাষাটি ব্যবহার করি। যারা ইসলামী রাজনীতি করে তাদেরকে ইংরেজিতে Islamist বলা হয়। Religious বলতে যা বোঝায় তা ভিন্ন জিনিস।

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। “ধর্ম” শব্দ দিয়ে ইসলামকে ব্যক্ত করলে যে পরিমান ভুল হয়, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনকে “ধর্মভিত্তিক সংগঠন” বললে সেই পরিমান ভুল হয়। আমরা “ইসলামভিত্তিক” সংগঠন। “ধর্মভিত্তিক সংগঠন” এই পরিভাষা “ইসলামভিত্তিক সংগঠন” এর পুরো পরিধিকে ধারণ করতে পারে না এবং “ধর্মভিত্তিক সংগঠন” এই পরিভাষার ঐতিহাসিক নেতিবাচক অর্থের কারণে আমরা সচেতনভাবে “ধর্মভিত্তিক সংগঠন” এই পরিভাষা এড়াতে চাই।

আমরা আমাদের পরিচয়ে “ইসলামভিত্তিক সংগঠন” এই পরিচয়কে প্রধান করে তুলতে চাই। যাতে করে আমাদের বিরুদ্ধবাদীরা একটা কৌশলগত সমস্যায় পড়ে। কারন তখন তাদের দাবী করতে হবে “ইসলামভিত্তিক সংগঠন” নিষিদ্ধ করো। বাংলাদেশের বাস্তবতায় এই দাবী করা যে কারো জন্য বিপদজনক।

বর্তমান “ধর্মভিত্তিক সংগঠন” এই পরিভাষা ব্যবহার করে আদতে তারা “ইসলামভিত্তিক সংগঠন” এরই নিষেধাজ্ঞা চায়। কিন্তু এতো বড় দুঃসাহস দেখিয়েও ওরা পরিভাষাগত কারনে ছাড় পেয়ে যায়। অসাম্প্রদায়িকতার নামে ওরা যে মুলত ইসলাম বিদ্বেষী সেটা একটা পরিভাষা পরিবর্তন করেই আমরা জাতীকে দেখিয়ে দিতে চাই।

“ধর্মভিত্তিক সংগঠন” বিতর্কে এইটুকুই আমার বলার ছিলো। আবারো বলি, আমরা আমাদের পরিচয়ে “ধর্মভিত্তিক সংগঠন” এর চেয়ে “ইসলামভিত্তিক সংগঠন” পরিভাষা ব্যবহারে বেশী স্বাচ্ছন্দ বোধ করি।

আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারন সম্পাদক, ক্যাম্পাসে ইসলামপন্থী রাজনীতির পরিচিত মুখ ছাত্রনেতা মাহমুদুল হাসানের বক্তব্যে যতটুকু শরয়ী দৃষ্টিকোণে ভুল ততটুকু বিনা অজুহাতে প্রত্যাহার করছি। শরয়ী দৃষ্টিকোণে কোন ভুল হয়ে থাকলে সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাই। “নিশ্চই আল্লাহ ক্ষমাশীল এবং সর্বজ্ঞ।

বক্তব্য ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগৃহীত 

মন্তব্য করুন