দেহ ভোগ ছাড়া মুনিয়ার বিষয়ে কোনও গুরুত্ব দিতেন না আনভীর

প্রকাশিত: ১২:৪১ অপরাহ্ণ, মে ১, ২০২১

রাজধানী গুলশানের অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে কলেজ শিক্ষার্থী মুসারাত জাহান মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধারের পরই আলোচনায় আসে বাসায় সিসি টিভির ফুটেজ আর মুনিয়ার হাতে লেখা ডায়েরিসহ বেশকিছু ডিভাইসের কথা।

ঘটনার পরে তার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়াও জানান, নিত্যদিনের ঘটনা লিখে রাখা মুনিয়ার অভ্যাস ছিল।

পুলিশও জানিয়েছে, মুনিয়ার লেখা ডায়েরিতেও আসামির সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং সম্পর্কের স্বীকৃতি আদায়ের বিষয়ে নানা বর্ণনার উল্লেখ রয়েছে।

ডায়েরি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীর আর মুনিয়ার গভীর প্রেমের সম্পর্কের কথা রয়েছে ডায়েরির প্রতিটি পাতায় পাতায়।

গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের ১৭ তারিখে মুনিয়া লেখেন, ‘আজকে আনভীরকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি। জানি না, তবে সারাদিন তাকে নিয়ে ভাবি হয়তো তাই।’

আরও পড়ুন-

দেশ ছেড়েছেন আনভীরের স্ত্রী, চেষ্টা করেছিলেন তিনিও

বিয়ে ছাড়াই মুনিয়ার ফ্ল্যাটে নিয়মিত যেতেন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি

‘হুজুর হলে সায়েমের বিরুদ্ধে হুমড়ি খেয়ে পড়তো মিডিয়াগুলো’

অভিমান ভুলে হিন্দুদের সৎকার করছেন ভারতের মুসলিমরা

নিরীহ আলেমদের মুক্তি দিন: আল্লামা মাহমুদুল হাসান

একই বছরের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে লেখেন, ‘আজকে তার (আনভীর) কিছু পিচ্ছিাকালের ছবি পাঠালো দেখেই মায়া লাগছিল।’ এভাবেই ডায়েরির প্রতিটি পরতে পরতে আনভীরের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ ঘটান মুনিয়া।

তবে সময় গড়ালে ভালোবাসার মধ্যে অভিমান আর কষ্টের কথা যোগ করেন মুনিয়া। ২০২০ এর নভেম্বর মাসের ২৯ তারিখে আনভীরকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, ‘তাকে দেয়ার মতো সত্যিকারের ভালোবাসা ছাড়া কিছুই নাই। যা তিনি কোনোদিন বোঝে না আর বুঝলেই কী এইগুলোর কোনো মূল্য নেই।’

নিজের পরিবারের সমস্যার কথা আনভীরকে জানালে কোনও গুরুত্ব না দেয়ার কথা ডায়েরিতে বিভিন্ন সময়ে উল্লেখ করেন মুনিয়া। এ বিষয়ে মুনিয়া লিখেন, ‘পরিশেষে আমার সমস্যাটা বললাম কিন্তু তার তেমন কোনো গুরুত্ব দেখলাম না।’

আনভীরের ফেসবুকের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও বর্ণনা করেন ‍মুনিয়া। আনভীরের একটি ছবি প্রাইভেট করতে বললে আনভীর তাকে বলে, ‘তুমি আমার সব খেয়াল রাখ।’

বসুন্ধরার এমডি আনভীরের পরিবারের প্রতি সন্মানের কথা জানিয়ে নিজের পরিবারের কষ্টের কথাও লেখেন মুনিয়া। নিজ পরিবারে কোনোদিন শান্তি না পাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন মুনিয়া।

এদিকে, মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া ডায়েরি ছাড়াও অন্য ডিভাইসগুলোকে আমলে নেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘ওর ডিভাইসের মধ্যে অনেক এভিডেন্স আছে। এগুলো এখনও হয়তো মিডিয়ার কাছে আসেনি। হয়তো ওইটা নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। এই মেয়েটার হত্যার বিচার হলে কালকে আপনার মেয়ে সুরক্ষিত থাকবে।’

পুলিশ বলছে, মুনিয়ার ডায়েরিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই তদন্ত করছেন তারা।

ঢাকা মেট্রোপলিট্রন পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটা আমরা মনে করছি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং চরম মানষিক হতাশার জন্য সে এই পর্যায়ে এসে আত্মহত্যাকে বেছে নিয়েছিল এই বিষয়টাকে সংজ্ঞায়িত করা, এই বিষয়গুলোকে প্রতিষ্ঠা করা এবং এই বিষয়গুলোকে সাক্ষ্য গ্রহণের নিরিখে এইগুলোকে প্রমাণ করার জন্য আরও যে যে সাক্ষ্য প্রমাণ দরকার সেগুলো সংগ্রহের জন্য আমরা চেষ্টায় আছি।’

গণমাধ্যম সুত্রের খবর

ইসমাঈল আযহার/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন