মুসলিম মানবাধিকার লঙ্ঘনে চীনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: ৪:১৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৩, ২০২১

উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে চীনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

ইইউ’র এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে যোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও যুক্তরাজ্য। এ পদক্ষেপে সমর্থন জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইইউ’র ১০ ব্যক্তি ও চার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন।

ইইউ জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সোমবার চীনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হন। এর মধ্য দিয়ে গত ৩০ বছরের বেশি সময় পর আবারও ইইউ’র নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে যাচ্ছে চীন।

নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে জিনজিয়াংয়ে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর লোকজনের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সম্পৃক্ত চারজন চীনা কর্মকর্তা ও একটি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। তাদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। সম্পত্তি ব্যবহার ও হস্তান্তর স্থগিত করা হবে।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা চীনা ব্যক্তিরা হলেন- ঝু হাইলুন, ওয়াং জুনঝেং, ওয়াং মিংশান এবং চেন মিনগু। প্রতিষ্ঠানটির নাম- জিনজিয়াং প্রোডাকশন অ্যান্ড কন্সট্রাকশন কর্পোরেশন।

এদিকে, চীনের বিরুদ্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে যোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও যুক্তরাজ্য।

দেশগুলো বলেছে, জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের বিষয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে একটি পরিষ্কার বার্তার পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে ইইউ’র পদক্ষেপে সম্পৃক্ত হয়েছে তারা। পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।

ইইউ’র সিদ্ধান্তের পরপরই চীন ঘোষণা করেছে, তারাও ইইউ’র ১০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আওতায় থাকবেন জার্মান রাজনীতিবিদ রেইনহার্ড বুটিকোফার এবং গবেষক আদ্রিয়ান জেন্জ। জার্মানির ‘মার্কেটোর ইনস্টিটিউট ফর চায়না স্টাডিজ’-সহ চার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চীন।

সম্প্রতি চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে ‘সংশোধনাগার শিবির’-এ উইঘুর সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের বেশ কিছু নথি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। দেশটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, উইঘুর মুসলিম নারীদের জোর করে বন্ধ্যা করে দিচ্ছে চীন। শিশুদের তাদের পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, জিনজিয়াংয়ের পশ্চিমাঞ্চলে বিভিন্ন ক্যাম্পে কমপক্ষে ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে আটক রাখা হয়েছে। চীন এসব ক্যাম্পের কথা প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এগুলো আসলে প্রশিক্ষণকেন্দ্র।

উগ্রবাদী মানসিকতা প্রশমনে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এসব অভিযোগের পর চীনের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ হয় জাতিসংঘ ও পশ্চিমা দেশগুলো।

মন্তব্য করুন