দোষ আইনের নয় বরং প্রয়োগের: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিষয়ে ইনু

প্রকাশিত: ৭:০৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ৬, ২০২১

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দোষ আইনের নয়, বরং প্রয়োগের। প্রশাসনিক কর্মকর্তারাই বাছাই করছেন কাকে ধরবেন, কাকে ধরবেন না। সেজন্যই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।

মুশতাক, কাজল, কিশোরকে জামিন না দিয়ে কেন দিনের পর দিন জেলে আটকে রাখা হলো, সরকারের কাছে তার কৈফিয়ত চান জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এসব ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ যথাযথ হয়নি বলেও মনে করেন তিনি।

সাবেক তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই আইনেই আছে ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে হবে। না পারলে আরো ১৫ দিন। অর্থাৎ, মোট ৭৫ দিন। তাহলে কেন কাজলকে ২১০ দিন কারাগারে রাখলেন আমি কৈফিয়ত তলব করছি সরকারের কাছে।

কীজন্যে কিশোরকে ২১০ দিন কারাগারে রাখলেন? কেন মুশতাককে ৭৫ দিনের বেশি রাখলেন? এবং আদালত কেন এখানে চোখ বন্ধ করে থাকলেন? আমি তো অবাক হয়ে যাচ্ছি।

আদালত এখানে ৪০ ধারা দেখে বলবে যে, ৭৫ দিন হয়ে গেছে- জামিন। আরেকটা ব্যাপার হলো, লেখক, সাংবাদিক ও গবেষকদের বিরুদ্ধে আইন করা হচ্ছে, তখন তারা তো দেশ থেকে পালিয়ে যাচ্ছে না।

সুতরাং, তাদের জামিন দিন, বিচার করুন, কোনো অসুবিধা তো নেই। তাদেরকে হয়রানি করার জন্য প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে কৈফিয়ত তলব করা উচিত।’ ডয়চে ভেলের ইউটিউব টকশো ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’-এ যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

সম্প্রতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় দশমাস বন্দী থাকার পর কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন লেখক মুশতাক আহমেদ। তার সঙ্গে আটক হওয়া কার্টুনিস্ট কিশোর বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্ত হয়েছেন। আটকের পর তার উপর চালানো নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন তিনি বাংলাদেশের দুইটি সংবাদ মাধ্যমে।

বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনা করবেন কিনা জানতে চাইলে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘এটা নিয়ে কথা হবে। এটা নিয়ে আমরা সংসদে (কথা) তুলবো, কেন টর্চার করা হলো। সেটা নিষিদ্ধ। এজন্য অনেক পুলিশ বরখাস্ত হয়েছেন। সুতরাং শারীরিক নির্যাতন যদি কিশোরকে করে থাকে, তাহলে এর জন্য ঐ কর্মকর্তাকে কৈফিয়ত দিতেই হবে। এটা সংসদে তোলার মতো কথা।’

আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুলও ছিলেন। তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও এর প্রয়োগে সরকারের সমালোচনা করেন।

বলেন, ‘(ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে) সরকারবিরোধী যে কোনো বক্তব্যকে রাষ্ট্রবিরোধী বলে তাকে জেলে দিনের পর দিন রাখতে পারেন এবং এভাবে নির্যাতন করতে পারেন। যে দেশে সেনাবাহিনীর ভাইরা দণ্ডিত খুনি ও পলাতক অবস্থায় ক্ষমা করে দেয়া হয়, আর অসুস্থ মানুষ যিনি (মুশতাক আহমেদ) সামান্য কোভিড পরবর্তী দুর্নীতি নিয়ে লিখেছেন, তাকে ছয় ছয়বার আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছেন।’

মন্তব্য করুন