তিন আলেমের নামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা : ফের পেছালো প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ

প্রকাশিত: ৪:৩৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩, ২০২১

ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ তুলে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের নামে করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পূূূনরায় ১ এপ্রিল দিন ধার্য করেছে আদালত।

বুধবার (৩ মার্চ) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এজন্য ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর একই আদালতে মামলাটি করেন বিতর্কিত সংগঠন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে ৭ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

৭ জানুয়ারি পূনরায় ৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য করেছিল আদালত। সেদিনও প্রতিবেদন না দেয়ায় আজ ৩ মার্চ তারিখ ধার্য করা হয়েছিলো প্রতিবেদন দাখিলের। কিন্তু আজকে পিবিআই প্রতিবেদন দাখিল না করায় নতুন করে তৃতীয়বারের মত পিছিয়ে ১ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়েছে প্রতিবেদন দাখিলের।

বিতর্কিত আলোচিত এ মামলার বিবরণে মাওলানা মামুনুল হকের ব্যাপারে অভিযোগে বলা হয়েছে – তিনি গত বছরের ১৩ নভেম্বর রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবনের মিলনায়তনে মামুনুল হক বলেছিলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন করে তারা বঙ্গবন্ধুর সুসন্তান হতে পারে না। এই মূর্তি স্থাপন বন্ধ করুন। যদি আমাদের আবেদন মানা না হয়, আবারও তৌহিদি জনতা নিয়ে শাপলা চত্বর কায়েম হবে।’

মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীমের নামে অভিযোগে বলা হয়েছে – রাজধানীর ধোলাইখালের কাছে গেণ্ডারিয়ায় তার বক্তব্য শুনতে আসা লোকদের হাত উঁচু করে বলেন, ‘আন্দোলন করব, সংগ্রাম করব, জিহাদ করব। রক্ত দিতে চাই না, দেয়া শুরু করলে বন্ধ করব না। রাশিয়ার লেলিনের ৭২ ফুট মূর্তি যদি ক্রেন দিয়ে তুলে সাগরে নিক্ষেপ করতে পারে তাহলে আমি মনে করি শেখ সাহেবের এই মূর্তি আজ হোক, কাল হোক খুলে বুড়িগঙ্গায় নিক্ষেপ করবে।’

অপরদিকে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর নামে মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে যে তিনি হাটহাজারীতে বলেছেন, ‘মদিনা সনদে যদি দেশ চলে তাহলে কোনো ভাস্কর্য থাকতে পারে না।’

তবে মামলায় অভিযুক্ত প্রতিথযশা এই তিনজন আলেম বারবারই বলেছেন যে তাদের বক্তব্য বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে মামলায় অভিযুক্ত মাওলানা মামুনুল হক একাধিক লাইভ এবং মাহফিল প্রোগ্রামে বলেছেন যে তার ‘কোন বক্তব্য বঙ্গবন্ধু বা আওয়ামী লীগ বিরোধী নয়।’ মুফতী ফয়জুল করীমও তার দেয়া বক্তব্যের বিষয় বলেছেন যে বঙ্গবন্ধুর মুর্তি তারা ভেঙ্গে ফেলবে এমন কিছু বলেননি বরং অন্যদেশের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন যে সে দেশে যেমন বিভিন্ন জনের মূর্তি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে তেমনিভাবে বঙ্গবন্ধুর মূর্তিও কেউ ভেঙ্গে ফেলতে পারে।

তবে বাংলাদেশের প্রায় সকল আলেমরাই সম্মিলিতভাবে মতামত দিয়ে জানিয়েছেন যে – মুর্তি বা ভাঙ্কর্য তা যারই হোক না কেন স্থাপন করা ইসলামী শরিয়তে জায়েজ নেই।

মন্তব্য করুন