

মতামত: সম্প্রতি ঢাবি প্রশাসন ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আমন্ত্রণ জানিয়ে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন বিষয়ে আলোচনা করেছে। ঐ বৈঠকে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনকে ডাকা হয়নি। এর মানে হলো- ইশা ছাত্র আন্দোলন সাংগঠনিক ব্যানারে প্যানেল ঘোষণা করে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তবে স্বতন্ত্র প্যানেল দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে।
এমন দূরভিসন্ধির প্রতিবাদে ইশা ছাত্র আন্দোলন গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ মিছিল করেছে। তাঁরা প্রশাসনের নিকট দাবী করেছে, তাদেরকে যেন সুযোগ দেয়া হয়। এটা তাঁদের অধিকার।
বাম ছাত্র সংগঠনগুলো ইশা ছাত্র আন্দোলনকে সহ্য করতে পারছে না। তারা ক্যাম্পাসে ধর্মভিত্তিক ছাত্র সংগঠন নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছে। যত্তসব খাডাশ।
বাম ছাত্র সংগঠনের অস্তিত্ব কেবল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে আর ক্ষুদ্র মিছিলে পরিদৃষ্ট। চটকদার শ্লোগান তুলতে ওরা ওস্তাদ। সারা বাংলাদেশে ওদের ভোটের সংখ্যা কয়েক হাজার হতে পারে। তবুও ওরা ইশা ছাত্র আন্দোলনের মতো প্রকাশ্য ও ক্রিয়াশীল সংগঠনটি নিষিদ্ধ দাবী করার স্পর্ধা দেখাচ্ছে। ওরা দাবি করুক তাতে কি? কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি ডাকসুতে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ না দেয় তাহলে কেমনে কি? এমন সিদ্ধান্ত নিলে তা হবে অন্যায্য ও অসাংবিধানিক। প্রশাসন কি ক্ষুদ্র একটা গোষ্ঠীর কথায় চলে নাকি?
আমার জানা মতে, ইশা ছাত্র আন্দোলন ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন। তাঁদের ভ্যালিড কমিটি আছে। সবাই নিয়মিত ছাত্র। কেউই অছাত্র নন। সংগঠনটি দরকার হলে ক্যাম্পাসে মিছিল করে।বিভিন্ন প্রোগ্রামাদিতে অংশগ্রহণ করে। এই সেদিনও শহীদ আসাদ দিবসে তাঁর রূহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মুনাজাতে অংশ নিয়েছে।
আরো পড়ুন- ডাকসু নির্বাচন সবার হোক : মতামত
এরপরও নন ক্রিয়াশীল কিসে? বাম ও রামকেন্দ্রিক ছাত্র সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে যা করে বেড়ায়, সেসব ক্রিয়া বা কর্ম এ সংগঠনটির ছেলেরা করে না। করা সম্ভব না। এরা চাঁদাবাজি করে না, হাইজ্যাক করে না, কাউরে ধরে এনে আটক রেখে মুক্তিপণ আদায় করে না, ইভটিজিং করেনা, মেয়েদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে কোন মেয়ের ইজ্জত লুটে না। হোস্টেলে ফাও খায়না। কাউরে মারে না, ধরে না। হোন্ডায় চরে গুন্ডামী করে না। নিলক্ষেতে গিয়ে জোরপূর্বক বাকীতে কিছু কিনে না, মুফতে তেহারি বা পিঁয়াজু খায় না।
ইশা ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা ইসলামী আদর্শবাদী সংগঠন। প্রত্যেকে শরীয়াতের হুকুম হুবহু পালনকারী । সুন্নাতে রাসুলিল্লাহির হুবহু পাবন্দি। সুন্নাতি লেবাসধারীর কারণে ক্যাম্পাসে সমীহের চোখে দেখে সকলে। এরা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি। এরা খুব মেধাবী। নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষায় হাজির থাকার পাবলিক।
তাঁরা জাতির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বদানের জন্য প্রস্তুত একদল নওজোয়ান। তাঁদের তত্ত্বাবধায়ন করেন এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা। বিশেষ করে দুজন শায়েখ মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই, মুহতারাম আমীর আইএবি ও মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, সিনিয়র নায়েবে আমীর, আইএবি। তাঁদের দোয়া ও দিকনির্দেশনা নিয়ে তাঁদের ছাত্র জীবনটা জ্যোতির্ময় করে তুলছে। এমন ছেলেদের সাথে প্রশাসনের অন্যায্য আচরণ হবে মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশাকরি বেখেয়াল হবেন না। ইশা ছাত্র আন্দোলনের অধিকারকে খর্ব করা তাদেরকে মানাবে না। তাঁরা নির্বোধ নন, তাঁরা যথেষ্ট জ্ঞাণী। আরো আশা করি, সম্মানিত ভিসি মহোদয় নিজ প্রজ্ঞা ও শুভবুদ্ধির দ্বারা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিবেন।
তবে ছোট একটা কথা আগাম বলে রাখি, ইশা ছাত্র আন্দোলনকে এ ইস্যুতে দমানো যাবে না। ইনশাআল্লাহ।
লেখক-
লেখক, এক্টিভিস্ট, বিশ্লেষক।