

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে আদায়যোগ্য ফি নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে অর্থ ব্যয়ের দিকনির্দেশনা তৈরি করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
নীতিমালায় যেসব খাতে শিক্ষা ব্যয় যা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে সেগুলো হল-
স্কুলে মাসিক বেতন ও ভর্তি ফি :
ঢাকা মহানগর ও তার আশেপাশের এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির মাসিক বেতন ২৫-৪৫ টাকা, জেলা সদর ও পৌর এলাকায় ২০-৪০ টাকা, উপজেলায় ১৫-৩৫ টাকা এবং সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় ১২-৩০ টাকা নির্ধারিত থাকবে। ভর্তির আবেদন ফি পর্যায়ক্রমে ৭৫-২০০ টাকা নির্ধারণ করা হবে। ভর্তি ও পূর্ণ ভর্তি ফি ৩০০ থেকে এক হাজার টাকা ধার্য থাকবে।
ষাণ্মাসিক ও বার্ষিক পরীক্ষাসহ অন্যান্য ফি:
প্রাথমিক স্তরে ষাণ্মাসিক ও বার্ষিক পরীক্ষার ফি নেওয়া যাবে ৩০০- ৫০০ টাকা এবং মাধ্যমিক স্তরের জন্য ৬০০-৮০০ টাকা। এছাড়া ধর্মীয় অনুষ্ঠান ফি ৫০ টাকা, ম্যাগাজিন ফি ১০০, মুদ্রণ বাবদ ১৫০, সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান, বিতর্ক ও বিভিন্ন দিবস উদযাপনে ৫০ থেকে ৭৫ টাকা, কম্পিউটার চার্জ ২৫ থেকে ৫০ টাকা, কৃষি ও বাগান ফি (যদি থাকে) ৩০ টাকা, কমন রুম ফি ২০ থেকে ৩৫, জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ফি ৫, বিএনসিসি ফি ৫, রেডক্রিসেন্ট ফি ২০, মসজিদ ও উপাসনালয়ের জন্য ২৫ থেকে ৫০ টাকা ধার্য করা থাকবে।
রেজিস্ট্রেশন ফি :
অষ্টম ও নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন ফি, পরীক্ষার ফি, ব্যবহারিক পত্রের ফি, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ফি, মূল সনদ ফি শিক্ষা বোর্ড থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এছাড়া স্কাউট ফি, ক্রীড়া, কল্যাণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফিও নির্ধারণ করে দেবে বোর্ড। উন্নয়ন ফি ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী আদায় করা যাবে।
একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ব্যয়:
কলেজ পর্যায়ে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন নির্ধারণ করা হবে ৮০-১৫০ টাকা, অনলাইন আবেদন, রেজিস্ট্রেশন ফি, উন্নয়ন ফি ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারণ করা হবে। প্রতি বিষয়ে অভ্যন্তরীণ ফি ৫০ থেকে ৪০ টাকা আদায় করা হবে।
তবে প্রতি বিষয়ে, ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, সনদ, পরীক্ষা কেন্দ্র, রোভারস্কাউট, ক্রীড়া, রেডক্রিসেন্ট, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফি, বিএনসিসি ফি ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী পরিশোধ করতে হবে।
কলেজে আনুষঙ্গিক ব্যয়:
একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হবে এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এর বাইরে কল্যাণ ফি বাবদ ২০ টাকা, পরিচয়পত্র ফি ৩০ টাকা, লাইব্রেরি ফি ২৫ টাকা, ল্যাবরেটরি/বিজ্ঞানাগার ফি ১০০ টাকা, আইসিটি ফি ২০ টাকা, ম্যাগাজিন খাতে ৩০ টাকা, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যয় ৩০ টাকা, সাংস্কৃতিক, বির্তক ও বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে ৫০ থেকে ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হবে।
ব্যয়ে কমিটি ও মাধ্যম ব্যাংক :
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সব ফি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে নিতে হবে। এমপিওভুক্ত স্কুলে ম্যানেজিং কমিটি এবং কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতির নেতৃত্বে তিনজন সিনিয়র শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি অর্থ কমিটি গঠন করতে হবে। কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিনিয়র শিক্ষকের সমন্বয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট বেতন ও ফি আদায় কমিটি সব প্রকার ফি ও বেতন আদায় সম্পর্কিত মাসিক প্রতিবেদন কমিটি বরাবর দাখিল করবে।
প্রতিষ্ঠান প্রধান রিকুইজিশন দিয়ে প্রতি মাসে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় ব্যয় গ্রহণ করবেন। হিসাব দাখিল করে পরের মাসের অর্থ নেবেন। অর্থ কমিটি যাচাই-বাছাই করে সে অর্থ ছাড় করবে। এভাবে বিভিন্ন কমিটির প্রস্তাব করা হয়েছে। অডিট কমিটি পরের বছরের ৩১ জানুয়ারি মধ্যে নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি এবং মাউশিতে জমা দেবে।
ওয়াইপি/পাবলিক ভয়েস