দুই সপ্তাহের তীব্র যুদ্ধের পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত আজারবাইজান-আর্মেনিয়া

প্রকাশিত: ৯:০৭ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১০, ২০২০

প্রায় দুই সপ্তাহের তীব্র যুদ্ধের পর আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান আজ ১০ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে, এবং নাগরণো-কারাবাখ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে “মূল” আলোচনা শুরু করার পরিকল্পনা করেছে। খবর আল জাজিরার।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ শনিবার বলেছেন, এর মধ্যে প্রায় দুই সপ্তাহের তীব্র লড়াইয়ের সমাপ্তি হবে এ অঞ্চলে।

তবে আজারবাইজান আর্মেনিয়া যুদ্ধে আজারবাইজানের হয়ে সরাসরি অংশগ্রহণ করা তুরস্ক এ বিষয়ে এখনও কোনো মতামত দেয়নি।

শনিবার ভোরের দিকে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে আজারাবাইজান-আর্মেনিয়া যুদ্ধ নিয়ে প্রায় ১০ ঘন্টা আলোচনার পরে এই অগ্রগতিটি এসেছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

রাশিয়ার শীর্ষ কূটনীতিক বলেছেন যে যুদ্ধ পরবর্তি সময়ে “রেড ক্রস মানবিক অভিযানে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করবে।”

এখন পর্যন্তের হিসেব মতে আজারবাইজান আর্মেনিয়ার এই লড়াইয়ে কমপক্ষে ৩০০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে যা ২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল। তবে প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলেই ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাশিয়া আলোচনার বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি তবে বলেছে যে ইউরোপের সুরক্ষা ও সহযোগিতা সংস্থা (ওএসসিই) মিনস্ক গ্রুপ এর মধ্যে মধ্যস্থতা করবে।

আর্মেনিয়া আজারবাইজানের কয়েক দশকের পুরনো এই সংঘাতের নতুন লড়াইয়ের ফলে আজারবাইজানের ঘনিষ্ঠ মিত্র তুরস্ক এবং আর্মেনিয়ার সাথে প্রতিরক্ষা চুক্তি হওয়া রাশিয়ার মধ্যে ব্যাপক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিলো।

কার্নেজি এন্ডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের রাশিয়া ও ইউরেশিয়া প্রোগ্রামের সিনিয়র ফেলো পল স্ট্রনস্কি বলেছিলেন যে নাগরনো-কারাবখ রাশিয়ার জন্য একটি “জটিল বিষয়”, তিনি উল্লেখ করেছেন যে এটি তুরস্কের সাথে ইতিমধ্যে সিরিয়া এবং লিবিয়া ইস্যুতে বিভিন্ন দেশের সমস্যা রয়েছে।

“আজারবাইজান ইস্যুতে তাই বিষয়টি ঝুঁকি তৈরি করতে পারে এমনকি এটি প্রক্সি যুদ্ধে পরিণত হতে পারে” বলেও তিনি সতর্ক করেছেন। তাছাড়া তুরস্কের ক্রমবর্ধন সামরিক শক্তির উত্থানকেও তারা ভয়ের দৃষ্টিতেই দেখছেন এখন।

বিশেষ করে আজারবাইজান তুরস্কের সমর্থন পাওয়ার পর আরমেনিয়ার সাথে যেভাবে বিধ্বংশী হয়ে উঠেছিলো তা প্রতিবেশী দেশগুলোকে ভয় পাইয়ে দিয়েছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যে কারণে অতিদ্রুত আর্মেনিয়ার পক্ষ থেকেই যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি আদায় করা হয়েছে।

তবে অমিমাংসিত নাগরনো-কারবাখ অঞ্চল নিয়ে প্রকৃত সিদ্ধান্ত কী হবে তা আলোচনার পরই জানা যাবে।

আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে নাগরনো-কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ হিসাবে স্বীকৃত। তবে জনসংখ্যার বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিক আর্মেনিয়ানরা আজারবাইজানীয় শাসনকে প্রত্যাখ্যান করে এবং ততকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১৯৯০ এর দশকে এক বিধ্বংসী যুদ্ধের পর থেকে এটিকে জবর দখল করে রেখেছিলো। যা মুক্ত করতেই এই যুদ্ধের সুচনা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আল জাজিরা অবলম্বনে অনুবাদকৃত।

মন্তব্য করুন