রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত: ৭:২৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০২০

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সরকারের কুটনৈতিক প্রচেষ্টা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দুর্বল পররাষ্ট্র নীতির কারণে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর কোন চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়নি সরকার। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আগ্রহী রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানদেরকে সঙ্গে নিয়ে জোরালো চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার অগ্রগতি করতে পারতো সরকার। কিন্তু সরকারের তৎপরতা বরাবরই নির্বিকার।

মঙ্গলবার বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ইতোপূর্বে কয়েবার কয়েক হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর খবর প্রচারিত হলেও এর কোন বাস্তব প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়নি। ‘লিপ সার্ভিস’ ছাড়া এ ব্যাপারে সরকারের আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। কোন অগণতান্ত্রিক সরকারেরই বিরাট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সামর্থ থাকে না।

তিনি বলেন, এক অন্ধকার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের হতাশার মধ্যে রোহিঙ্গারা হাবুডুবু খাচ্ছে। বেশ কিছু রোহিঙ্গা বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। দেশ থেকে বিতাড়িত ও গৃহহীন রোহিঙ্গাদের ইয়াবা কারবারসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রায় প্রতিদিনই প্রকাশিত হচ্ছে। এই কারবারের সাথে ক্ষমতাসংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতার কথাও সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে আশ্রিত ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের আজ তিন বছর পূর্তি হলেও তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত রয়ে গেছে। মিয়ানমারের এই জনগোষ্ঠী সেই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা নির্মমভাবে নির্যাতিত হয়ে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, অত্যাচারের বিভিষিকায় প্রাণহানিসহ সহায়-সম্বল হারিয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের প্রবেশ শুরু হয়েছে। মানব ভোগান্তির এক নজীরবিহীন দৃষ্টান্ত হচ্ছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর পড়ছে ভয়াবহ চাপ।

এসময় তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চলমান নিপীড়ণ, ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক আচরণ বন্ধ করে তাদেরকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তাসহ অবিলম্বে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণের জোরালো আহবান জানান। এক্ষেত্রে বিশ্বের দেশগুলোর সরকার, জাতিসঙ্ঘ, আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাসমূহ, দেশী-বিদেশী মানবাধিকার গ্রুপ ও এনজিও তথা সকল পক্ষকে নিয়ে মিয়ানমার সরকারের সাথে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য জোর আহবান জানান তিনি।

তিনি বলেন, এই সমস্যা দীর্ঘায়িত হলে আঞ্চলিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে বলে বিভিন্ন দেশ যে মত প্রকাশ করেছে, আমি সেটির সাথে সম্পূর্ণ একমত পোষণ করছি। পাশাপাশি মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফেরত পাঠানোর জন্য অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পক্ষে ভূমিকা পালনকারি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে জোরালোভাবে তৎপরতা চালানোর জন্য আমরা বিশেষভাবে আহবান জানাচ্ছি।

এমএম/পাবলিকভয়েস

মন্তব্য করুন