প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে, অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েল পেপারের খাম: দীপু মনি

প্রকাশিত: ৮:৫৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০১৯
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ডা. দীপু মনি

পাবলিক ভয়েস : শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ডা. দীপু মনি আসন্ন মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমানের পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে প্রথমবারের মতো অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েল পেপারের খামে প্রতিটি কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েল পেপারের খামে প্রশ্নপত্র প্রতিটি কেন্দ্রে পাঠানো হবে। এটি বিশেষ ধরনের খাম, যেটা দেখে বোঝা যাবে খামটি এর আগে কখনও খোলা হয়েছে কিনা।’ আজ রোববার (২০ জানুয়ারি) বিকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।

এর আগে প্রশ্নফাঁস রোধে কাগজের খামে উন্নতমানের টেপ ব্যবহার করে কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পাঠানো হতো। এই প্রথম অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েল পেপারে মুড়িয়ে প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে কেন্দ্র পাঠানো হবে। এই খাম এমনভাবে তৈরি এবং এতে এমনভাবে প্রশ্নপত্র মোড়ানো থাকবে যে, খাম দেখলেই বোঝা যাবে আগে খামটি খোলা হয়েছে কিনা।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, ‘পরীক্ষার হলের আশপাশে যতটুকু সম্ভব ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। গুজব রটনাকারীদের শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে নজরদারি শুরু হয়ে গেছে। যারা আগেও এ কাজ করেছে বা প্রশ্নফাঁসে যুক্ত ছিল, তাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দীপু মনি বলেন, ‘সচেতনতামূলক তথ্যগুলো গণমাধ্যমের সহায়তায় প্রচার করা হবে। পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা ছাড়া কেউ পরীক্ষার কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না। কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। ছবি তোলার সুযোগ বা ইন্টারনেট সংযোগ নেই এমন একটি ফোন শুধু কেন্দ্র সচিব ব্যবহার করতে পারবেন। কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমের সহযোগিতা চেয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পরীক্ষার্থীরা পড়াশুনা না করে কোথা প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে, তা কেউ খোঁজার চেষ্টা করবে না। আমরা ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের কাছে এটা আশা করি।’

তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই হলে প্রবেশ করে নির্ধারিত আসনে বসতে হবে। এছাড়া অন্যান্য নির্দেশনা আগের বছরের মতোই রাখা হয়েছে। তবে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশে যদি একান্তই কারও দেরি হয়, তাহলে তা কেন্দ্র প্রধানের রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে সেই তথ্য শিক্ষা বোর্ডে পাঠাতে হবে। ২০১৮ সালে যেভাবে আমরা সফল হয়েছি, সেভাবে এবারও আমরা সফল হবো বলে আশা করি।’

ফেসবুক কেন্দ্রিক নানা গুজব তৈরি হয়, তাই বিটিআরসির প্রতি আপনাদের কোনও নির্দেশনা আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘তথ্য মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির বিশেষ সেল এই পরীক্ষার ক্ষেত্রেও দায়িত্ব পালন করবে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। এতে মোট ৪ হাজার ৯৬৪টি কেন্দ্রে ২৫ লাখ ৭৩ হাজার ৪৫১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবে। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ২১ লাখ ৩৭ হাজার ৩০৭ জন, দাখিল পরীক্ষায় ৩ লাখ ১০ হাজার ২৭২ জন এবং কারিগরিতে অংশ নেবে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭২ জন পরীক্ষার্থী।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ২ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা হবে। আর ২৬ ফেব্রুয়ারি সংগীত বিষয়ের এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ মার্চের মধ্যে অন্যান্য বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে।

মন্তব্য করুন