

ইউপি চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন কুমিল্লার মুরাদনগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শরিফুল আলম চৌধুরী। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্থানীয় চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল ৪ জুলাই, শনিবার উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার শিকার শরিফুল আলম চৌধুরী দৈনিক সমকালের স্থানীয় প্রতিনিধি। তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা ও বৃদ্ধ মাকেও কুপিয়ে আহত করেছে চেয়ারম্যানের অনুসারীরা।
সাংবাদিক শরিফুলের বাবা আহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন চৌধুরী বলেন, ‘দারোরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির সংবাদ প্রকাশ করে আমার ছেলে। সেই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ছেলেকে প্রাণে শেষ করে দেয়ার জন্য হুমকি দেয় চেয়ারম্যান ও তার দলবল।’
তিনি আরো জানান, শরিফের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দেয়ায় নিজেকে অনিরাপদ ভেবে তিনি একমাস বাড়ির বাইরে ছিলেন। গত সপ্তাহে বাড়িতে আসেন শরিফ।
তার পিতার ভাষ্য, ‘শরিফ বাড়িতে আছে এ খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে চেয়ারম্যান শাহজাহানের লোকজন বাড়িতে ঢুকে তাকে টেনে-হিঁচড়ে বাড়ির উঠানে আনে।’
দা দিয়ে কুপিয়ে, হাতুড়ি ও লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তার দুই হাত পা ভেঙে দেয় দুর্বৃত্তরা। দা দিয়ে তার মাথায় কোপ দিলে শরিফের মগজের কিছু অংশ বেরিয়ে আসে বলেও জানান তিনি।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন চৌধুরী বলেন, ‘আমি ও তার মা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে রামদা দিয়ে আমার ডান হাতে কোপ দেয় এবং রড দিয়ে পেটায়। তার মায়ের বাম হাত ভেঙে দেয়।’
তাদের চিৎকারেও চেয়ারম্যানের লোকজনের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসার সাহস পায়নি বলেও জানান তিনি।
গুরুতর অবস্থায় শরিফুল আলম চৌধুরীকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। কিন্তু তার অবস্থা আশংকাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মনজুর আলম বলেন, ‘সাংবাদিক শরিফকে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে চেয়ারম্যান শাহাজাহানকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।’
এই ঘটনায় চেয়ারম্যানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এমএম/পাবলিকভয়েস