

বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের সন্ত্রাস বানাতে তালেবানের মিত্র দল আল কায়েদার প্রধান নেতা উসামা বিন লাদেনকে সন্ত্রাসী, খুনী ও জঙ্গী আখ্যা দেওয়ার ঘটনা নয়। কিন্তু প্রথমবারের মত কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী সে দেশের পার্লামেন্টে দাড়িয়ে উসামা বিন লাদেনকে ‘শহীদ’ আখ্যা দিলেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) পাকিস্তানের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ইমরান খান আফগানিস্তান যুদ্ধে মার্কিন বিরোধী অবস্থান থেকে নেতৃত্ব দেওয়া উসামা বিন লাদেনকে ধরতে মার্কিন অভিযান বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তাকে ‘শহীদ’ আখ্যা দেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, অ্যাবোটাবাদে ঢুকে মার্কিন সেনারা ওসামাকে হত্যা করেছিলো। যার ফলে অস্বস্তির মুখে পড়েছিল তখনকার পাকিস্তান সরকার।
এ দিন পাক পার্লামেন্টের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়িয়ে বিন লাদেনকে শহীদ বলে উল্লেখ করে ইমরান খান বলেন, “আমরা খুবই বিব্রতবোধ করেছিলাম… যখন মার্কিন সেনাবাহিনী (পাকিস্তানে) ঢুকেছিল এবং ওসামা বিন লাদেনকে অ্যাবোটাবাদে হত্যা করেছিল… তাঁকে শহীদ করেছিলো।”
- তিনি পাকিস্তানকে বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে অভিযুক্ত করার বিষয়টি নিয়েও কঠোর প্রতিবাদ করেছেন এবং বলেছেন – ‘আফগানিস্তান সহ এই উপমহাদেশে যখনই যা কিছু হয় সবকিছুতেই পাকিস্তানকে দোষারোপ করা হয়েছিল সব সময়। অথচ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তানের ৭০ হাজার লোক মারা গিয়েছে। তারপরও বিভিন্নভাবে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদী দেশ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যা মোটেও গ্রহনযোগ্য নয়”।
মূলত ২০১১ সালে উসামা বিন লাদেনকে ধরতে সৃষ্টি করা মার্কিন নাটকের রূপরেখা হিসেবে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের গ্যারিসন টাউনে অভিযান চালায় মার্কিন নেভি সিল। ২০১১ সালের সেই অভিযানে নিহত হন আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন। গোটা ঘটনায় পাকিস্তান সরকারকে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল বলে এর আগেও আপত্তি জানিয়েছিলেন ইমরান খান।
যে বিষয়টি টেনেই তিনি উসামা বিন লাদেনকে শহীদ আখ্যা দিলেন। তবে এর আগেও উসামা বিন লাদেনকে শহীদ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন ইমরান খান।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগেও একবার ওসামাকে জঙ্গী বলে সম্বোধন করতে অস্বীকার করেছিলেন তিনি। এমনকি, আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের সঙ্গে ওসামার তুলনাও করেছিলেন ইমরান। একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের ইমরান খান বিন লাদেন প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন – “ব্রিটিশদের কাছে জর্জ ওয়াশিংটন ছিলেন জঙ্গী এবং অন্যদের কাছে শহীদ। উসামা বিন লাদেনের বিষয়টিও তেমনই”
- ওসামার বিরুদ্ধে মার্কিন অভিযান নিয়েও এর আগে প্রতিবাদ করেছিলেন ইমরান খান। গত বছরের সেপ্টেম্বরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সফরে ইমরান খান জানিয়েছিলেন, অ্যাবোটাবাদে ওসামার উপস্থিতির খবর মার্কিন গোয়েন্দাদের জানিয়েছিল পাকিস্তানই।
ইমরান খানের মতে, পাক সরকারকে পুরোপুরি অন্ধকারে রেখেই বিন লাদেনের বিরুদ্ধে মার্কিন সেনার সেই গোপন অভিযান চালানো উচিত হয়নি। একটি মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেলে ইমরান জানিয়েছিলেন, ওই অভিযানের ফলে অস্বস্তির মুখে পড়েছিল পাক সরকার। আমেরিকার সঙ্গে সুসম্পর্কের বিষয়টি মাথায় রেখে ওই অভিযানের কথা পাক সরকারকে জানানো উচিত ছিল বলেও মনে করেন ইমরান খান।
#আরআর/পাবলিক ভয়েস