

আগামী কাল বুধবার (১০ জুন) ভারতের অযোধ্যায় বহুল আলোচিত মুসলিম নিদর্শন বাবরি মসজিদের স্থানে হিন্দুত্ববাদী ভারত সরকারের নির্দেশনায় রাম মন্দির স্থাপনের কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।
ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকার প্রধান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও গুজরাটে লাখো মুসলমান হত্যা করে গুজরাটের কসাই খ্যাত নরেন্দ্র মোদির নির্দেশেই এই মন্দির নির্মান কাজ শুরু হচ্ছে কাল থেকে। খবর দ্য হিন্দু।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই শুরু হচ্ছে বিতর্কিত এই মন্দির নির্মাণ কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। রাম নবমী বা অক্ষয় তৃতীয়াতে নির্মাণ শুরুর কথা থাকলেও তা হয়নি। এবার করোনাকে সঙ্গী করেই সে কাজে নামছে হিন্দুত্ববাদী ট্রাস্ট সংগঠন। প্রথমে সেখানে শিব লিঙ্গের পূজা করা হবে তারপর শুরু হবে মন্দির নির্মাণের কাজ।
গুন্ডামি করে মসজিদটা ভেঙে আদালত বলল ওখানে মন্দির হবে
এরমধ্যে দ্য হিন্দুর খবরে বলা হয়েছে, মন্দির নির্মাণে নরেন্দ্র মোদি ঘোষিত ট্রাস্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রথমে শিবের আরাধনা হবে। তারপর শুরু হবে মন্দির নির্মাণের কাজ। ১০ জুন সকাল ৮ টা থেকে মহাদেব আরাধনা শুরু হবে শশাঙ্ক শেখর মন্দিরে। টানা ২ ঘণ্টা আরাধনা চলবে। এরপর এদিনই মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করবে এল অ্যান্ড টি সংস্থা। এ জন্য এরই মধ্যে সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে।
বাবরি মসজিদ-রাম মন্দির মামলার রায়
গত বছরের ৯ নভেম্বর দেশটির শীর্ষ আদালত কর্তৃক অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের স্থানে রাম মন্দির নির্মানের অন্যায্য রায় ঘোষণার পর রাম মন্দির নির্মাণে ট্রাস্ট গঠনের জন্য সময় ছিল তিন মাস। ওই রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিলেন, বিতর্কিত রাম মন্দির-বাবরি মসজিদের স্থানে রাম মন্দির নির্মিত হবে; বিকল্প হিসেবে বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য মুসলিম ওয়াকফ বোর্ডকে পাঁচ একর জমি অন্যত্র দেয়া হবে।
মসজিদ ছাড়া অন্য জমি গ্রহণ করা হবে না: মুসলিম ল বোর্ড
অযোধ্যায় মসজিদ নির্মাণের ৫টি জায়গা চিহ্নিত
দিল্লি নির্বাচনের তিন দিন আগে লোকসভায় সেই ট্রাস্ট গঠনের কথা বলেছিলেন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সরকারপক্ষের এমপিরা সেদিন জয় শ্রী রাম ধ্বনি তুলেছিলেন।
মন্দিরটি হবে মোট ১২৫ ফুটের। যদিও তা বাড়িয়ে ১৬০ ফুট করার প্রস্তাব এসেছে নানা মহল থেকে। মন্দিরের প্রথম তলা হবে ১৮ ফুটের। সেখানে থাকবে রাম লালার মূর্তি। দ্বিতীয় তলা হবে ১৫ ফুট ৯ ইঞ্চির। সেখানে গড়ে তোলা হবে রামের দরবার।
প্রসঙ্গত : ভারতের অযোধ্যায় মুসলিম নিদর্শনের অন্যতম প্রমান বহন করে চলা বাবরি মসজিদটি এর আগে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতে বর্তমানে ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপির শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতেই উগ্র কট্টরপন্থী বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের সদস্যরা বাবরি মসজিদের স্থাপনাটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়।
বাবরি মসজিদ ভাঙার পর মুসলিমদের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে ভারতের নানা প্রান্তে মুসলমানদের উপর হামলে পড়েছিলো হিন্দুরা। যাতে তিন হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলেন যার বেশিরভাগই মুসলমান।
তবে ভারতসহ বিশ্বের বেশিরভাগ ঐতিহাসিকরা একমত যে, অযোধ্যা বাবরি মসজিদের স্থানে মুঘল আমলে সম্রাট বাবরের একজন সেনাপতি মীর বাঁকি ১৫২৮ সাল নাগাদ অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং সেখানে কোন আমলেই কোন রাম বা হিন্দু মন্দির ছিলো না।
ঘটনাপ্রবাহ : বাবরি মসজিদ ও বাংলাদেশ
আরএসএস থেকে বিজেপি : হিন্দুত্ববাদের উত্থান ও বাংলাদেশে ইসলাম
ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ: কিছু প্রসঙ্গ কথা
বাবরি মসজিদ : শাহাদাতের ২৬ বছর
আমরা বাবরি মসজিদ ফেরত চাই: আসাদুদ্দিন ওয়াইসি
বাবরি মসজিদ মামলার রায় : যা বললেন মাহমুদ মাদানী
বাবরী মসজিদ রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দের
বাবরি মসজিদ-রাম মন্দির বিতর্কের ইতিহাস
বাবরি মসজিদ মামলার রায় নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা
বাবরি মসজিদ মামলার বিচারককে পুরস্কৃত করলো ভারত সরকার
বাবরি মসজিদ মামলার রায়ের বিরুদ্ধে করা সব পিটিশন খারিজ
বাবরি মসজিদ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন ভারতের ৪৮ বুদ্ধিজীবী
বাবরি মসজিদের রায় নিয়ে পোস্ট করায় ৩৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বাবরি মসজিদ মামলার রায় বাতিল চায় ইসলামী আন্দোলনের
বাবরি মসজিদের স্থানে মন্দির নির্মাণের রায় ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি : আল্লামা বাবুনগরী
বাবরি মসজিদ নিয়ে এই রায় মানবে না মুসলিম বিশ্ব: ইশা ছাত্র আন্দোলন
এইচআরআর/পাবলিক ভয়েস