মার্কিন পুলিশের হাতে ছয় বছরে প্রায় ৮ হাজার কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যু

প্রকাশিত: ৭:০৪ পূর্বাহ্ণ, জুন ৪, ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেপোলিসে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র। কারফিউ, করোনা সংক্রমণের ভয় কোনো কিছুই থামাতে পারছে না বিক্ষোভকারীদের।

পুরো দেশ যেন প্রতিবাদের অগ্নিস্ফুলিঙ্গে পরিণত হয়েছে। কারফিউ থেকে শুরু করে কোনকিছুই আটকে রাখতে পারেনি জনগণকে। প্রতিবাদ, লুটতরাজ চলছেই দেশের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে।

বিক্ষোভ থামাকে দেশটির রাজধানীসহ ৪০টি শহরে চলছে কারফিউ। এর মধ্যেও বিক্ষোভ ও সহিংসতায় এ পর্যন্ত অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো অনেকে।

তবে এই একটি মৃত্যুই কী যুক্তরাষ্ট্র এমন উত্তাল হয়ে পড়ার কারন? আসলে তা নয় বরং আমেরিকায় শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ নির্যাতনের এই ধারাবাহিকতা অনেক লম্বা। অতীতেও ফ্লয়েডের মতোই মৃত্যু হয়েছে এমন অনেক কৃষ্ণাঙ্গের। যুক্তরাষ্ট্রে এর আগে অনেক কৃষ্ণাঙ্গই স্বীকার হয়েছে পুলিশি আগ্রাসনের। আর সেই সংখ্যাটাও নেহায়েত কম না।

সম্প্রতি এক গবেষণা তথ্যে জানা গেছে, ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল এই ছয় বছরের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশের হাতে প্রায় সাত হাজার ৬৬৬ জন কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যু হয়েছে। ম্যাপিং পুলিশ ভায়োলেন্স নামে একটি গবেষণা ও সহয়তা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী বিষয়টি জানা যায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন পুলিশ আফ্রো-আমেরিকানদের হত্যায় প্রভাবিত করে। কালো আমেরিকানরা সংখ্যায় মার্কিন জনসংখ্যার কেবল ১৩ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও, পুলিশের হাতে তাদের হত্যা সম্ভাবনা শেতাঙ্গদের চেয়েও আড়াইগুণ বেশি।

এক ম্যাপে দেখানো হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৫০টি রাজ্য জুড়ে এই হত্যাকাণ্ড চলেছে।

অবাক হওয়ার মতো বিষয় হলো যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি বৃহত্তম রাজ্য ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস ও ফ্লোরিডায় পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের হত্যার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রায় প্রতিটি রাজ্যে, আফ্রো-আমেরিকানরা শেতাঙ্গ আমেরিকানদের তুলনায় পুলিশের হাতে নিহত হওয়ার বড় ঝুঁকিতে রয়েছে।

উটাহ রাজ্যে আফ্রো-আমেরিকানরা জনসংখ্যার মাত্র এক দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ সত্ত্বেও গত সাত বছরে প্রায় ১০ শতাংশের মতো অস্বাভাবিক হারে পুলিশের হাতে নিহত হয়েছে।

মিনেসোটাতে, আফ্রো-আমেরিকানরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে নিহত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় চারগুণ বেশি। কৃষ্ণাঙ্গরা সেখানকার জনসংখ্যার মাত্র ৫ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও তাদের নিহতের হার ২০ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ মে সোমবার ২০২০ রাত ৯টা ২৫ মিনিটে মিনেসোটার বাসিন্দা ৪৬ বছর বয়সী জর্জ ফ্লয়েড নিরস্ত্র অবস্থায় পুলিশের হাতে নিহত হন। ফ্লোয়েডের মৃত্যুতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ন্যায়বিচার ও পুলিশি সহিংসতা অবসানের দাবিতে দেশের বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদ হিসেবে বিক্ষোভ শুরু করে।

আরআর/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন