সিদ্ধান্ত বদল : সীমিত আকারে চলবে গণপরিবহনও, বাড়ছে না সাধারণ ছুটি

করোনা লকডাউন

প্রকাশিত: ৯:৩০ অপরাহ্ণ, মে ২৭, ২০২০

করোনা মহামারিতে গত ২৬ মার্চ থেকে একে একে চার দফা সাধারণ ছুটি বাড়িয়ে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছিলো। ধারণা করা হয়েছিলো করোনা সংক্রামন বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ ছুটি আরও বাড়ানো হবে।

কিন্তু আজ বুধবার ২৭ মে বিকেলে এক ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশে সাধারণ ছুটি আর বাড়ছে না বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

তখন তিনি জানিয়েছিলেন সাধারণ ছুটি বাড়লেও বন্ধ থাকবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত বদল করে পূনরায় আজ সন্ধ্যারাতে তিনি জানিয়েছেন, সীমিত আকারে বাস, রেল ও লঞ্চের মতো গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। খবর বিবিসির।

তবে নতুন সিদ্ধান্ত অনুসারেও – সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৫ই জুন পর্যন্ত ছুটি থাকবে। তবে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইন ক্লাস ও দূরশিক্ষণ চলবে।

একই সাথে রাত আটটা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত মানুষজনের বাইরে বের হওয়ার ব্যাপারে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, সেটা বহাল থাকবে। এই সময়ে অকারণে বাইরে বের হলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলেও জানান তিনি।

এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব ধরনের দোকানপাট সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখতে পারবে।

এর আগে প্রথমে তিনি জানিয়েছিলেন- ৩০শে মে’র পর থেকে সাধারণ ছুটি আর বাড়ানো হবে না। তবে ৩১শে মে থেকে ১৫ই জুন পর্যন্ত সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। এই সময়ে সব ধরণের বাস, রেল ও লঞ্চসহ সবধরণের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে বিমান সংস্থাগুলো বিমান চলাচল চালু করতে পারবে।

তবে পরবর্তীতে তিনি জানান, সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন জেলায় বাস, লঞ্চ ও রেল চলাচল ৩১ মে থেকেই চালু করা হবে। বিভিন্ন জেলায় পরিবহনে যাত্রীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতায়াত করতে পারবেন।

তিনি বলছেন,” সীমিত বলতে আমরা বোঝাচ্ছি, গণপরিবহন চললেও তা নিয়ন্ত্রিতভাবে চলবে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।” গণপরিবহন বলতে বাস, রেল ও লঞ্চ চলাচল বোঝানো হচ্ছে। পাশাপাশি বিমান চলাচল চালুরও অনুমতি দেয়া হয়েছে।

”স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলো নিজ ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিমান চলাচল শুরু করতে পারবে। ব্যক্তিগত পরিবহন চলবে।” জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

”বয়স্ক, অসুস্থ ও গর্ভবর্তী মহিলারা কর্মস্থলে যোগদান থেকে বিরত থাকবেন। অন্যান্য কর্মকর্তারা ১৩টি স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস করবেন।” বলে জানিয়েছেন তিনি।

কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য কোন অফিস সীমিত আকারে পরিবহন চালু করবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত ওই প্রতিষ্ঠান নেবে। সভা-সমাবেশ বা গণজমায়েত বন্ধ থাকবে। মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ ও ধর্মীয় প্রার্থনা চলবে।

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু রাখতে সীমিত পরিসরে সব অফিস খোলার এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান। এই বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে ৩০ মে পর্যন্ত সরকারি ছুটি চলছে। এর মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখা বেড়ে চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২৬ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে। এরমধ্যে ৩০ মে শেষ হচ্ছে শেষ ধাপের সরকারি ছুটি।

করোনা সংক্রমণ রোধে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর ৪ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল, পরে তা বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল করা হয়। চতুর্থ দফা ১৪ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় পঞ্চম দফা ছুটি বাড়ানো হয় ৫ মে পর্যন্ত। সেটি বাড়িয়ে ১৬ মে, তারপর ১৭ মে থেকে ঈদুল ফিতরের পর ৩০ মে পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়। সূত্র : বিবিসি।

আগের খবর : বাড়ছে না সাধারণ ছুটি: খুলছে না গণপরিবহন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

#আরআর/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন