

মহামারী করোনাভাইরাসে আজ (বৃহস্পতিবার ১৪ মে) দেশে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যাও এযাবৎকালীন রেকর্ড দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০৪১জন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হলো ২৮৩জনের এবং মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৮৬৩জন।
মৃতদের মধ্যে ১১জন পুরুষ এবং ৩জন মহিলা। এরমধ্যে ঢাকার ৯জন এবং বাকী ৫জন চট্টগ্রামের।
আজ (বৃহস্পতিবার ১৪ মে) দুপুরে সংবাদ বুলেটিনের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন আইইডিসিআর এর মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘন্টায় ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ল্যাব মিলিয়ে ৭৮৩৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরমধ্যে ঢাকার ২০টি ল্যাব থেকে ৪৯৫৬টি এবং ঢাকার বাইরের ২১টি ল্যাব থেকে ২৮৮১টি।
এরমধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭৩৯২টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ১ লাখ ৫১ হাজার ২৯২টি।
এছাড়াও, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে গেছে ২০১জন, বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২৬১৪জন। এছাড়া আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬৬জন, এখন পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন ১৩৯৮জন।
বাংলাদেশে গত ৮ ই মার্চ করোনাভাইরাস প্রথম ধরা পড়ে। এরপর হুহু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গতকাল বুধবার দেশে সর্বোচ্চ আক্রান্ত এবং সর্বোচ্চ মৃতের রেকর্ড হয়।
করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা এই মূহুর্তে তিন লাখের কাছাকাছি। প্রতিমূহুর্ত বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ২ লক্ষ ৯৮ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে এখন পর্যন্ত। এরমধ্যে শুধুমাত্র আমেরিকাতেই ৮৫ হাজার ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা।
বাংলাদেশেও প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। বিশেষ করে পরীক্ষা যতো বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে হু হু করে। বাড়ছে ঝুঁকি।
উল্লেখ্য, আইইডিসিআর এর মহাপরিচালক এর অবর্তমানে নাসিমা সুলতানা এখন থেকে মহাপরিচালক এর দায়িত্বে রয়েছেন। তবে ডা. মীরজাদী সাব্রিনার ব্যাপারে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।
এদিকে করোনা দূর্গত অসহায় মানুষজন সরকারের কাছ থেকে নগদ অর্থ পাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মে-জুন দুই মাসে মোট দশ হাজার টাকা করে পাবে একটি পরিবার।
আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে সুবিধাভোগীদের অ্যাকাউন্টে মোবাইলে টাকা পাঠিয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঘোষিত প্রণোদনা অনুযায়ী সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ লাখ হতদরিদ্র ও কর্মহীন পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা দেয়ার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে মে এবং জুন-এই দুই মাস ৫০ লাখ পরিবার পাঁচ হাজার করে টাকা পাবে। বিকাশ, নগদ, রকেট ও শিওরক্যাশের মাধ্যমে পরিবারগুলোর কাছে টাকা পৌঁছে যাবে।
ইতোমধ্যে এক হাজার ২৫৭ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সহায়তার এ অর্থ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিনা খরচে প্রত্যেক পরিবারের হাতে ঈদের আগে পৌঁছে দেয়া হবে।
উদ্যোগটির সঙ্গে জড়িত রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ। আর পরিবার চিহ্নিত করা হয়েছে স্থানীয় সরকার অর্থাৎ জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের সাহায্যে।
তালিকায় রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, নির্মাণশ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, দোকানের কর্মচারী, ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসায় কর্মরত শ্রমিক, পোল্ট্রি খামারের শ্রমিক, বাস-ট্রাকসহ পরিবহন শ্রমিক, হকারসহ নানা পেশার মানুষকে রাখা হয়েছে।
সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সহায়তায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী বর্তমানে যেসব সহায়তা পাচ্ছে, এ তালিকায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তালিকার কাজ শেষ করা হয়েছে ৭ মে। অবশ্য এখনও যাচাইয়ের কাজ চলছে।
একদিনে সর্বোচ্চ ১৯ জনের মৃত্যু ও সর্বোচ্চ ১১৬২জন আক্রান্তের রেকর্ড!
এটিও পড়ন: করোনার গতি প্রকৃতি নির্ণয়ে জিনোম আবিষ্কার করেছে সিএইচআরএফ
/এসএস