জেল থেকে বেরিয়েও মুক্তি মিলছে না এই ভারতীয়দের

প্রকাশিত: ৯:৪৬ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০২০
ফাইল ছবি

ভারতের ১৩৩৯টি কারাগারে চারে চার লাখের বেশি কয়েদি আছে। তাদের মধ্য থেকে বর্ধিত প্যারোলে প্রায় ২২ হাজার বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব যাতে তীব্রভাবে ঘনবসতিপূর্ণ হাজতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, তা নিশ্চিত করতেও অনেক বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জেল থেকে বেরিয়েও মুক্তি মিলছে না অনেকের।

এদের মধ্যে একজনের নাম আরিফ। তিনি মুম্বাইয়ের একটি হাজতে ছয় মাস ধরে বন্দি ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি জেল হাজত থেকে ১৫০ মাইল দূরে। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর লকডাউনের কারণে তিনি বাড়ি ফেরার কোনো গাড়ি পাননি। দিন কয়েক রাস্তায় রাস্তায় ঘোরার পর তিনি কাঁচাবাজারের একটি ট্রাকে করে বাড়িতে ফেরেন।

কিন্তু মুম্বাই থেকে ফিরেছেন বলে এলাকার লোকজন তাকে বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি। ভারতের যে সব শহরে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি হারে ছড়িয়েছে, মুম্বাই তার অন্যতম। এ কারণেই মূলত এলাকাবাসি আরিফকে বাড়িতে যেতে দেয়নি।

বাধ্য হয়ে তিনি আবার মুম্বাইয়ে ফিরে আসেন। জেল থেকে এক সাথে ছাড়া পাওয়া কয়েকজন তাকে তাদের সাথে রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। ফেরার সময় আরিফের মা লোকজনের কাছ থেকে ধার করে তাকে ৪০০ রুপি দেন এবং একটি ফোনের ব্যবস্থা করে দেন।

আরিফের স্ত্রী গত বছর তাকে ছেড়ে চলে গেছে। তার একটি ভাই আছে, যে আবার শারীরীকভাবে তার মতো সক্ষম নন। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভৃত্যের কাজ করেন। আর তার মা বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষ বাসায় একা থাকেন। প্রতিবেশিদের সাহায্য-সহায়তায় বেঁচে আছেন তিনি।

মুম্বাই ফেরার পরে অনেক চেষ্টা করে আবার বাড়িতে যান আরিফ। কিন্তু আবারও প্রতিবেশিরা তাকে মুম্বাই ফেরত পাঠায়। মুম্বাই ফিরে এসে দিশেহারা হয়ে যান তিনি। কোনো কাজ না পেয়ে, অর্ধাহারে- অনাহারে দিন কাটছে তার। এই অবস্থায় মুম্বাইয়ের একটি সহায়তা সংস্থা তাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে আশ্রয় দেয়।

তার মতো অবস্থার শিকার হয়েছেন আরো অনেকে। জেল থেকে বের হয়েও মুক্তি মিলছে না এ রকম আরো অনেক মানুষের। এই পরিস্থিতি ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে দারুণ চাপে ফেলে দিয়েছে। সহসাই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোনো উপায়ও আপাতত দেখা যাচ্ছে না বলে বেশ কয়েকটি ভারতীয় গণমাধ্যম সংবাদ প্রচার করেছে।

এমএম/পাবলিকভয়েস

মন্তব্য করুন