
ভারতের হরিয়ানার রাজ্যের রোহটক জেলার ছেলে নিরঞ্জন কাশ্যপ। বেশ কয়েক বছর ধরে প্রেম করছেন মেক্সিকোর মেয়ে জোহেরি অলিভেরোসের সঙ্গে। সম্প্রতি তারা বিয়ে করবেন বলে ঠিক করেন। এর জন্য নিজ দেশ থেকে মায়ের সঙ্গে হরিয়ানায়ও আসেন ওই তরুণী। কিন্তু এর মধ্যেই বিশ্বজুড়ে ভয়াল থাবা বসায় নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। লকডাউন করা হয় পুরো দেশ। সংক্রমণ রোধে বন্ধ করে দেওয়া হয় ধর্মীয় উপাসনালয় থেকে শুরু করে সকল অফিস, আদালত।
তবে থেমে থাকেননি এ প্রেমিক যুগল। নিজেদের চেষ্টায় লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যেও একে অপরের সঙ্গে আবদ্ধ হয়েছেন বিবাহ বন্ধনে। রোহটকের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের অফিসে বিশেষ ব্যবস্থায় আইনসম্মতভাবে স্বাক্ষর করে বিয়ে করেন তারা। বলা যায়, দেশটিতে লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে এটাই প্রথম কোনো বিয়ের ঘটনা!
বর নিরঞ্জন জানান, তিন বছর আগে থেকে অলিভেরোসের সঙ্গে প্রেম করছেন তিনি। মূলত বিদেশি ভাষা শিখতে গিয়ে একটি অ্যাপের মাধ্যমে ওই তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয় তার। আর তখন থেকেই তারা কেউ কাউকে সামনাসামনি না দেখে প্রেম করছেন। পরে ২০১৭ সালে প্রথম অলিভেরোস তাকে দেখতে ভারত আসে এবং ২০১৮ সালে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আগে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত জানায়। এতে নিরঞ্জনও সায় দেন।
তিনি আরো জানান, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করার উদ্দেশে মায়ের সঙ্গে ফের ভারত আসে অলিভেরোস। ভারতে অন্য কোনো দেশের কাউকে বিয়ে করতে হলে এক মাস আগে একটি সংশ্লিষ্ট অফিসে নোটিশ দিতে হয়। তাই তারা ২০ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্ট অফিসে নোটিশ দেন। কাগজপত্র ঠিক হলে মার্চের শেষের দিকে বিয়ে করার কথা ছিল তাদের। কিন্তু এর মধ্যেই করোনাভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে সকল অফিস-আদালত বন্ধ করে দেয় দেশটির সরকার। দেশজুড়ে জারি করা হয় লকডাউন।
এমতাবস্থায় বিয়ের জন্য রোহটকের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে অনুরোধ জানান তারা। তখন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ভারতে অবস্থিত মেক্সিকোর দূতাবাস থেকে যদি নো অবজেকশন সার্টিফিকেট হাতে আসে তাহলে তিনি তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করবেন। সম্প্রতি সেই সার্টিফিকেট হাতে আসলে নিজের কথা রাখেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। তার অফিসেই স্বাক্ষর নিয়ে বিয়ে দেন নিরঞ্জন ও অলিভেরোসের।
এ বিয়েতে খুঁশি দুই পরিবারই। দীর্ঘ বছর পর পরিণতি পেল নিরঞ্জন ও অলিভেরোসের প্রেম। আগামী ৫ মে মেক্সিকো ফিরে যেতে পারেন ওই দম্পতি। ইতোমধ্যে টিকেটও কেটে রেখেছেন। তবে দেখার বিষয় ততদিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় কিনা।
এমএম/পাবলিকভয়েস

