

করোনা সংক্রমণের প্রাদুর্ভাবরোধে লকডাউন এর মাধ্যমে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় নিরন্তর চেষ্টা চালিয়েছে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানগণ। কিন্তু বাস্তবতা হলো- লকডাউন বাস্তবান করতে হিমশিম খাচ্ছে রাষ্ট্রগুলো। ইউরোপের দেশগুলোকেও প্রথম দিকে হিমশিম খেতে হয়েছে।
আর বাংলাদেশ-ভারতের মতো দেশগুলোতে আরো বেশি কঠিন হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ভারতে লকডাউন কার্যকর করাটা অনেকটা যুদ্ধের মতো। আর দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যেক সদস্য যুদ্ধের সৈনিকের মতো অবস্থা।
সামাজিক দূরত্বের কতোটা প্রয়াজন এই মূহুর্তে তা আর ব্যাখ্যা করার দরকার নাই। মহামারী করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা-ই প্রধানতম পূর্ব কৌশল। অথচ কে শোনে কার কথা দিব্যি অধিকাংশ মানুষ তা লঙ্ঘন করছে।
ঠিক এমনই মূহুর্তে ভারতের কেন্দ্রীয় যুব, ক্রীড়া ও সংখ্যালঘু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু’র করা বানরের ছবি শেয়ার করা একটি টুইট ভাইরাল হয়েছে।
ছবিতে দেখা গেছে প্রায় ১৪টি বানর দূরত্ব বজায় রেখে বসে আছে আর একজন যুবক বানরগুলোকে তরমুজ দিচ্ছে। অন্যদিকে কোনোরকম হইচই, হইহুলোড় বা তাড়াহুড়ো ছাড়াই দূরত্ব রেখে বসে থেকে তা গ্রহণ করছে বানরগুলো। শুধু তরমুজই নয়, এভাবে কলাও নিয়েছে বানরগুলো।
অর্থাৎ সামাজিক দূরত্ব বজায়ের প্রয়োজনীয়তার বিন্দু বিসর্গও যারা জানে না, সেই বানরেরা দিব্যি মেনে চলছে নিয়ম।
ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু গত বুধবার (২৯ এপ্রিল) নিজের টুইটা একাউন্টে এই ছবিটি পোস্ট করেন। এরপরই ছবিটি নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়।
ছবিটি তুলেছে তেজপুরের অরুপ কলিতা নামক একজন। টুইটেই সেটা জানিয়েছেন মন্ত্রী রিজিজু।
ছবিটি শেয়ার করার সাথে সাথে তিনি টুইটে লিখেছেন, আসাম-অরুণাচল সীমানা বরাবর অরুণাচল প্রদেশের ভালুকপংয়ের কাছে দেখা একটি নিখুঁত সামাজিক যোগাযোগ। যদি আমরা সাবধানে পর্যবেক্ষণ করি তবে প্রাণীরাও আমাদেরকে এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা শিখতে পারে যা আমরা আমাদের প্রতিদিনের দৈনন্দিন জীবনের তাড়াহুড়ায় হাতছাড়া করে ফেলছি।
অনেকেই অবাক হয়ে লিখেছেন, ‘বানরেরা তো সামাজিক দূরত্ব সম্পর্কে কিছুই জানে না। তা সত্ত্বেও কীভাবে তারা এটা বজায় রাখছে তা সত্যিই বিস্ময়কর’।
কেউ কেউ আবার বলছেন, ‘মানুষের থেকে জীবজন্তুরা যে অনেক বেশি শৃঙ্খলাবদ্ধ জীব, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এ ছবি যেন আরও একবার তা প্রমাণ করে দিল’।
অ্যাডভোকেট রবিন ঘোষ নামে একজন লিখেছেন, ‘প্রাণীরা বুঝতে পারে। আমরা মানুষরা না’।
প্রাঞ্জল অবস্থি লিখেছেন, ‘স্যার- সামাজিক দূরত্বের এটা একটা সেরা পাঠ’
ডা. বিনোদ কুমার গুপ্ত নামে একজন লিখেছেন, স্ব-শৃঙ্খলা জীবনের এক দুর্দান্ত উপায়। শেখার জন্য এটি একটি দৃষ্টান্ত। পোস্টটির জন্য স্যার আপনাকে ধন্যবাদ এবং অবিশ্বাস্য বার্তার জন্য ফটোগ্রাফারকে ধন্যবাদ।
এভাবেই বিভিন্নভাবে মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু এর পোস্টে কমেন্টে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন নেটিজেনরা। সবার একটাই কথা বানরার পশু হয়েও নিজেদের ভিতর শৃঙ্খলার দৃষ্টান্ত রাখতে পেরেছে। এই বানরদের থেকে আমাদেরও শিখার আছে অনেক কিছু।
কিরেণ রিজিজু’র টুইটা
A perfect #SocialDistancing seen near Bhalukpong in Arunachal Pradesh along Assam-Arunachal boundary. If we observe carefully, animals can teach us many vital lessons that we may have missed in the haste of our normal daily lives.
(Picture taken by Arup Kalita, Tezpur) pic.twitter.com/5iIr8SELUz— Kiren Rijiju (@KirenRijiju) April 28, 2020
/এসএস