মসজিদে নামাজ বিষয়ে সরকারকে আলেমদের সর্বসম্মত ৪ পরামর্শ

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি

প্রকাশিত: ৮:৩৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৬, ২০২০

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবরোধে সরকারি ঘোষণার পর থেকে মসজিদে নামাজ ও জামাত আদায় নিয়ে চলমান বিতর্কের অবসান ঘটাতে আজ বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) একাধিক জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন দেশের সর্বমতের শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামাগণ।

বৃহস্পতিবার হাইয়াতুল উলইয়ার বৈঠকে ওলামায়ে কেরামের সর্বসম্মত পরামর্শের আলোকে সরকারকে ৪ দফা পরামর্শ দিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ওলামাগণ।

বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে ওয়াক্তিয়া, জুমা, তারাবীহ এর জন্য সীমিত পরিসরে, সীমিত সময়ের জন্য মসজিদ উন্মুক্ত রাখা, মসজিদ কখনো তালবদ্ধ না করা, ইমাম খতিবদের হয়রানি না করা ও ৫/১০ জনের সীমাবদ্ধতা তুলে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

রাজধানীর দীনিয়া শামসুল উলুম মতিঝিল মাদরাসায় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত থাকা আল্লামা মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ পাবলিক ভয়েসকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সর্বোচ্চ অথরিটি হাইয়াতুল উলইয়ার অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া বৈঠকে হাইয়াতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস এর সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, আল্লাম নূর হোসাইন কাসেমী, আল্লামা মুফতী দিলাওয়ার হোসাইন, আল্লামা মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী, আল্লামা মুফতী আব্দুল মালেক, বসুন্ধরার মুফতী আরশাদ রাহমানী, মুফতুী রুহুল আমিন, জামিয়া রাহমানিয়ার মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুল হক প্রমুখ।

বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ হাইয়া বোর্ড এর সকল সদস্য এবং অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য বোর্ড কর্মকর্তাগণ। এ ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন মাদরাসার মুহতামিমগণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে যে ৪ দফা পরামর্শ দেওয়া হয়:-

১. গত ২৯ মার্চের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বৈঠকে ওলামায়ে কেরামের দেওয়া পরামর্শ মোতাবেক সীমিত সময়ের জন্য, সীমিত পরিসরে সুস্থ্য মুসুল্লিদের প্রবেশ বাঁধা না দেওয়া।

২. জামাতের জন্য সরকার নির্ধারিত ৫/১০ জন এর সংখ্যা সীমা তুলে দেওয়া, যা ওলামায়ে কেরাম সিদ্ধান্ত দেননি।

৩. জামাত, জুমা ও তারাবীহ এর সময় মসজিদের গেটে তালা না দেওয়া কিংবা মসজিদকে বাঁধামুক্ত করা। ইমাম-খতিব ও মোয়াজ্জিনকে এ সমস্ত বিষয়ে দায়ি করে অপদস্থ না করা, সার্বিক বিষয় বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের গ্রহণ করা।

৪. বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা পরামর্শ মোতাবেক স্বাস্থ্য সচেতনতা মেনে যারা মসজিদে যেতে চায় তাদের বারণ না করা। বাহ্যিকভাবে সুস্থ মুসুল্লিদের সীমিত সময়ের জন্য মসজিদে প্রবেশের অনুমিত প্রদান করা।

এ ব্যপারে আল্লামা মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ বলেন, আসন্ন পবিত্র রমজান রহমত, বরকত ও নাজাতের মাস। এ মাসে মানুষ কাঁদবে, রোনাজারি করবে, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবে। এজন্য ওলামায়ে কেরাম জামাত সীমিত রেখেই মসজিদের গেট খুলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। যাতে ওয়াক্তিয়া নামাজ, জুমা এবং আসন্ন তারাবীহ এর সময় সীমিত পরিসরে মসজিদ উন্মুক্ত রাখা যায়।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর আহ্বানে রাজধানীর বারিধারা মাদরাসায় এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে প্রায় কাছাকাছি তবে আলাদা আলাদা কিছু সিদ্ধান্ত ও পরামর্শ গ্রহণ করা হয়।

বৈঠকে শায়খুল হাদীস মাওলানা আবু সাবের আব্দুল্লাহ, পূর্বোক্ত আল্লামা মুফতী দিলাওয়ার হোসাইন, আল্লামা মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ, আল্লামা মুফতী আব্দুল মালেক উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও মাওলানা জোনায়েদ আল হাবিব, আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী প্রমুখ ওলামায়ে কেরাম উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সাম্প্রতিক আরো খবর:

মসজিদের গেট খুলে দিন, নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে সরকার: মুফতী মিজান

মসজিদ ও জামাত নিয়ে আল্লামা মিজানুর রহমান সাঈদ এর লিখিত বক্তব্য

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্যান্য লেখাসমূহ পড়ুন 

ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে মসজিদ বিষয়ে প্রকাশিত সিদ্ধান্তটি পড়ুন

ধর্ম মন্ত্রনালয় থেকে প্রকাশিত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আলেমদের মতামত পড়ুন

মসজিদ খোলা রাখার আহবান জানিয়ে ১৫ আলেম এর পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিটি পড়ুন

মসজিদ উন্মুক্ত’র বিবৃতি দেওয়া ১৫ আলেমকে ডাকা হয়নি ইফা’র মিটিংয়ে

মসজিদে জামাত বিষয়ে ১৫ আলেমের বিবৃতিকে সমর্থন জানালেন আরও ৭০ আলেম

ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আল্লামা শফীর মতামত পড়ুন

সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে চরমোনাই পীরের মতামত পড়ুন

/এসএস

মন্তব্য করুন