

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে নতুন করে আজ আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪৮২ জনে। এবং মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৩০ জনে। একই সাথে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৩৬ জন।
আজ শনিবার (১১ এপ্রিল) করোনাভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ‘আইইডিসিআর’-এর নিয়মিত ‘হেলথ বুলেটিনের’ অনলাইন বুলেটিন উপস্থাপনে যুক্ত হয়ে এ তথ্য দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিবৃতি অনুসারে গত তিনদিনের চেয়ে আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে আজ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পর ব্রিফিং করছেন জাতীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম এবং রোগতত্ত্ব বিভাগের মহাপরিচালক মীরজাদী সাব্রিনা ফ্লোরা। তিনি জানিয়েছেন গত এক দিনে ৯৫৪ জনের পরীক্ষা হয়েছে।
আইইডিসিআর-এর তথ্য অনুসারে গত ৮ই মার্চ বাংলাদেশে প্রথম তিনজন করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়। যাদের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং একজন নারী ছিলেন। এর মধ্যে ইতালি ফেরত ছিলেন দুজন। এরপর থেকে থমকে থমকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস রোগীর সংখ্যা বাড়ছিলো প্রতিদিন। গত ৮ এপ্রিল থেকে এ সংখ্যা ধিরে ধিরে বড় আকারে বাড়ছে। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনারোগী শনাক্ত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়া করোনা আক্রান্তে মৃত্যুহারে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে।
বাংলাদেশ সরকার করোনা সংক্রামন ঠেকাতে সারাদেশে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রথমে কোন এলাকায় কেউ মারা গেলে সেই এলাকা ‘লকডাউন’ করা হতো। এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ দিয়েছেন, কোথাও কেউ আক্রান্ত হলেই সে এলাকা লকডাউন করে ফেলা হবে।
সারাদেশে সকল ধরণের ‘গণজমায়েত’ বন্ধ করা হয়েছে এবং জরুরী সেবা ছাড়া সকল পরিবহণ চলাচলও বন্ধ রয়েছে। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শপিংমলসহ বড় বড় সকল কোম্পানীর কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। প্রধান দুই শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং পর্যটন শহর কক্সবাজারসহ বেশির এলাকাতেই প্রবেশ ও বের হওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অনেকটাই ‘লকডাউন’ অবস্থায় আছে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চল।
এছাড়াও দুই দফা বাড়িয়ে সরকারী বেসরকারী অফিসসমূহের ‘সাধারণ ছুটি’ ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এবং সন্ধ্যা ৬ টার পর যে কারো বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সারাদেশে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ উপকূলীয় অঞ্চলে নৌবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়মিত দেখাশোনা করছেন এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি অঞ্চলের খোঁজখবর রাখছেন।
প্রসঙ্গত : গত বছরের ডিসেম্বর মাসে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস প্রথমে ধরা পরে। এরপর ধিরে ধিরে তা ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রায় ২০০ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়তই জ্যামিতিক হারে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।
করোনাভারাসের নিয়মিত আপডেট প্রকাশ করা যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকলিত সর্বশেষ তথ্য অনুসারে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ লক্ষ ৮৭০ জনে দাড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ১ লক্ষ ২ হাজার ৭৮৯ জনে। যা প্রতিমূহুর্তে বেড়েই চলছে। একই সাথে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার ৭৯৬ জন।
বিশ্বে মৃত্যুসংখ্যায় সর্বাধিক তালিকায় প্রথম রয়েছে ইতালি। ইতালিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছ ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭৭ জন। এ থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩০ হাজার ৪৫৫ জন। মোট মারা গেছে ১৮ হাজার ৮৪৯ জন। তবে আক্রান্তের সংখ্যায় প্রথম আছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়ে সংখ্যা দাড়িয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৫৭০ জনে। এবং সর্বাধিক মৃত্যুবরণকারীর তালিকায় দ্বিতীয় দেশ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে মারা গেছে ১৮ হাজার ৭৪৭ জন। তৃতীয় স্থানে আছে স্পেন। দেশটিতে এ পর্যন্ত মারা গেছে ১৬ হাজার ৮১ জন।
করোনাভাইরাস বিষয়ে পাবলিক ভয়েসের সকল আপডেট পেতে ক্লিক করুন
এইচআরআর/পাবলিক ভয়েস