‘ঐক্য, সংহতি ও নৈতিকতা’ ইরানি জনগণের উন্নতির চাবি: প্রেসিডেন্ট রুহানি

প্রকাশিত: ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২০, ২০২০
সর্বোচ্চ নেতা খামেনীর ভাষণের পর ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট রুহানি

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি বলেছেন ‘ঐক্য, সংহতি ও নৈতিকতা’ ইরানি জনগণের উন্নতির চাবিকাঠি। ঐক্য বজায় রাখার মাধ্যমেই কেবল আমরা আমাদের জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যত গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।

ফার্সি নববর্ষ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে শুক্রবার এসব কথা বলেছেন ইরানি প্রেসিডেন্ট।

ফার্সি ১৩৯৯ সালে অনেকগুলো উন্নয়ন পরিকল্পনা উদ্বোধন করা হবে উল্লেখ্য করে রুহানি বলেন, জনগণের সহযোগিতায় অর্থনৈতিক খাতে সমৃদ্ধি ফিরে আসবে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে গোটা বিশ্বের সঙ্গে ইরানের অর্থনৈতিক লেনদেনে অভাবনীয় সাফল্য আসবে।

বিগত ফার্সি বছর ১৩৯৮ সালে ইরানি জনগণকে বেশ কিছু কষ্ট ও বিপদ সহ্য করতে হয়েছে উল্লেখ করে ড. রুহানি বলেন, বিগত বছরে তেল খাতে ইরানকে কঠিনতম নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হয়েছে যার প্রভাব পড়েছে সার্বিক অর্থনীতিতে। আমেরিকা মনে করেছিল, এই চাপের মুখে ইরানি জাতি ওয়াশিংটনের কাছে নতি স্বীকার করবে। কিন্তু ইরানি জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলে আমেরিকাকে দেখিয়ে দিয়েছে তারা চাপের মুখে মাথা নত করে না।

প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেন, তেল খাতে নিষেধাজ্ঞার কারণে বিগত কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো তেল রপ্তানির অর্থ ছাড়াই অন্যান্য খাত থেকে ইরানের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হয়েছে। বিগত বছরের প্রথম নয় মাসে ইরানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধনাত্মক ছিল এবং মূদ্রস্ফীতি যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে।

নতুন করে উৎপাদনে যাওয়া শিল্প-কারখানার সংখ্যা ছিল আশাতীত এবং সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে দেশের জনগণে সব প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, আজ ফার্সি ১৩৯৯ সালের প্রথম দিন আমি জনগণকে এই সুখবর শোনাতে চাই যে, দেশ সব জরুরি পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে এবং আগামী এক বছর বিগত বছরের চেয়ে অনেক ভালো কাটবে।

এর আগে শুক্রবার সকালে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী।

শুক্রবার সকালে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী

ফার্সি নতুন বছরকে তিনি ‘উৎপাদন বৃদ্ধি’র বছর হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, সব খাতে উৎপাদন বৃদ্ধি এতটা বেশি হতে হবে যাতে সাধারণ মানুষ তার উপকার উপলব্ধি করতে পারে। আজ (শুক্রবার) সকালে ফার্সি নববর্ষ ১৩৯৯ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।

সর্বোচ্চ নেতা তার ভাষণে বলেন, ইরানে বিগত ফার্সি বছর প্রবল বন্যা দিয়ে শুরু হয়েছিল এবং করোনাভাইরাস দিয়ে শেষ হলো। এ ছাড়া, সারাবছর ভূমিকম্প ও নিষেধাজ্ঞার মতো অনেক ঘটনা ঘটে যার শীর্ষে ছিল সন্ত্রাসী মার্কিন বাহিনীর হামলায় লেঃ জেনারেল কাসেম সোলাইমানির শাহাদাত।  তিনি জেনারেল সোলাইমানির শাহাদাতকে ইরানের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলে উল্লেখ করেন।

ফার্সি ১৩৯৮ সালে ইরানি জনগণকে অনেকগুলো ঐশী পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়েছে উল্লেখ করে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, বিশ্বের কোনো জাতি আরাম-আয়েশ করে উন্নতি সাধন করতে পারেনি। কঠোর পরিশ্রম হচ্ছে বাধাগুলো অতিক্রম ও উন্নতির চাবিকাঠি এবং ইরানি জনগণ অতীতের মতো পরিশ্রমের ধারা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী ফার্সি নববর্ষের ভাষণে আরো বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি ইরানের অনেক লাভও হয়েছে। আমরা বহু ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি এবং এই ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে ইনশা আল্লাহ।

/এসএস

মন্তব্য করুন