

হালাল খাদ্যাভাসের কারনে – করোনা ভা’ই’রাস ইতিমধ্যে চীন সহ সারাবিশ্বে মারাত্মক আকার ধারন করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ইতিমধ্যে এটাকে মহামারী আকারে ঘোষনা করেছে। পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে চীনের উহান ও হুবেই শহর।
শুধু চীন নয় আক্রান্ত হয়েছে ইন্ডিয়া, জাপান, ভিয়েতনাম, হংকং সহ বিশ্বের প্রায় বিশটি দেশ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্ডিয়া এয়ারলাইন্স, ব্রিটিশ এয়ারলাইন্স, কাতার এয়ারলাইন্স সহ প্রায় সব কয়টি দেশের বিমান যোগাযোগ। এত কিছু যখন ঘটে যাচ্ছে তখন কেমন আছেন সেদেশের উইঘুর মুসলিমরা।
আরও পড়ুন : করোনা আতঙ্ক: চীনের প্রেসিডেন্টের মসজিদে যাওয়ার সংবাদ কতটুকু সত্য!
সম্প্রতি এসব নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। সেইসব প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উইঘুর মুসলিমরা তাদের হালাল খাবার খাওয়ার কারনে এখনো অন্যান্য দের তুলনায় নিরাপদে আছে। তবে ভাইরাসটা যেহেতু সংক্রামক তাই তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি চীনের কোরনা ভাইরাসের উৎপত্তি বাদুরের মাধ্যমে হওয়ায় বেশ গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে তাদের খাদ্যাভাস নিয়ে। তাদের প্রিয় খাদ্যের তালিকায় রয়েছে তেলাপোকার ফ্রাই, টিকটিকি, ইঁদুর, সাপ, নানা রকম কীটপতঙ্গ ও বাদুরের জুস। মুসলিমদের খাদ্য তালিকায় হালাল ও হারাম বিভক্ত থাকায় তারা এসব খাবার ভক্ষন করেনা বলেই চীনের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও কিছুটা নিরাপদেই রয়েছেন চীনা মুসলিমরা।
করোনা ভাইরাসের দাপটে বাবাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, এরপর যা হল অবর্ণনীয় : বাড়িতে ছিল বিশেষভাবে সক্ষম তার সন্তান ৷ ১৭ বছরের হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা ইয়ান চেং সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত। সে আর পাঁচজনের থেকে একদমই আলাদা। ইয়ান চেং মুক ও বধির, সে কোনও কাজও নিজে করতে পারে না। তার মা অনেক আগেই মারা গেছেন। বাবাই তার পরিচর্যা করতেন , যত্ন নিতেন। কিন্তু ভয়াবহ করোনা ভাইরাসের আক্রমণে এখন বিপর্যস্ত চীন। সংক্রমণ রুখতে চীনে বিভিন্ন প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ইয়ান চেংর বাবার জ্বর হওয়ায় তাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বাড়িতে একা থাকা অবস্থায় ইয়ান চেংর মৃ ত্যু হয়। ১৭ বছরের ইয়ান চেং নিজের হাতে খেতেও পারেন না। তার প্রতিদিনের জীবনযাপনের জন্য অন্যের সাহায্য তার সবসময় প্রয়োজন ছিল।
সেটা না পেয়েই মৃত্যু হয়েছে তার। গত ২২ জানুয়ারি ইয়ান চেংর বাবা ইয়ান জিওয়াওয়েনকে জ্বরের জন্য আইসোলেশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। পাঁচদিন বাদে তার মধ্যে মারণঘাতী রোগ করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়। এরপর তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন জানিয়েছিলেন কেউ একজন তার বাড়িতে গিয়ে যেন তার সন্তানকে দেখেন। কিন্তু করুণ বাবার এই আবেদন বড় দেরিতে এসেছিল। গত ২৯ জানুয়ারি ইয়ান চেংর এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হোনগান কাউন্টি সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানা গেছে , ‘ইয়ান জিয়াওয়েন নিজের ছেলে ইয়ান চেংর প্রতিদিনকার জীবনের দায়িত্ব সামলাতে পারেননি।
আর যে আত্মীয় ও গ্রামবাসীদের তিনি বিশ্বাস করেছিলেন তারাও এটা করতে পারেননি। যাদের দায়িত্বে ছেলেকে ছেড়ে গিয়েছিলেন তারা সঠিক দায়িত্ব পালন না করতে পারায় তাদের চাকরি গেছে।
স্থানীয় কমিউনিস্ট পার্টি সচিব ও মেয়রকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ তবে ইয়ান চেংর মৃত্যুর কারণ এখনও সরকারিভাবে জানানো হয়নি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর আসার পরেই সকলেই ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছে। হুবেই প্রদেশের বিভিন্ন কার্যকলাপকে দোষারোপ করা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার ওয়েইবো নামক সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনাটি নিয়ে মোট ২৭ কোটিবার লেখা হয়েছে। মেয়রকে সরিয়ে দেওয়া হক এই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার হয়েছে ৬ কোটি বার।