কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শহীদি মসজিদের খতিব হলেন মাওলানা শুয়াইব

প্রকাশিত: ৭:২৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২০

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত আধুনিক স্থাপত্যের এক ঐতিহাসিক দৃষ্টিনন্দন ‘শহীদী মসজিদ’। এ মসজিদটি এ অঞ্চলের ইতিহাসের এক বিরল নিদর্শন। মসজিদটির নাম ‘শহীদী মসজিদ’ এ নামকরণ নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে কৌতূহলের অন্ত নেই। মূল শহরের প্রাণকেন্দ্রে মসজিদটির অবস্থান। শহীদী মসজিদের ইতিহাস খুব পুরনো না হলেও এটি অত্যন্ত আকর্ষণীয়।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক  এ মসজিদে খতিবের দায়িত্ব পেলেন কিশোরগঞ্জের আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার মুহাদ্দিস শুয়াইব বিন আব্দুর রউফ। পেশ ইমামের দায়িত্ব পেয়েছেন আল্লামা আনোয়ার শাহ রহ.-এর ছেলে মাওলানা আঞ্জার শাহ তানিম। কিশোরগঞ্জের আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ায় মজলিসে শুরা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এছাড়াও এ বৈঠকে আল্লামা শাব্বির আহমাদ রশিদকে আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার প্রিন্সিপাল (মুহতমিম) ও ঐতিহাসিক শহীদি মসজিদের মোতাওয়াল্লী হিসাবে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এর আগে ঐতিহাসিক শহীদি মসজিদের খতিব ছিলেন সদ্য প্রয়াত আল্লাম আযহার আলী আনোয়ার শাহ রহ.। ১৯৭৭ সাল থেকে ৪৩ বছর টানা খতিবের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। গত ২৯ জানুয়ারি তিনি ইন্তেকাল করেন।

নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত খতিব মাওলানা শুয়াইব বিন আব্দুর রউফ আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার মুহাদ্দিস হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এছাড়াও তিনি ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের সানী ইমাম হিসেবে নিযুক্ত আছেন।

উল্লেখ্য, শহীদী মসজিদ নামকরণের কারণ: ১৯৪০ সালের ঘটনা। প্রখ্যাত আলেম হযরত মাওলানা আতহার আলীর হাতে সবে মসজিদটির সংস্কার শুরু হয়েছে। প্রথানুযায়ী হিন্দু সমপ্রদায় প্রতিবছরের মতো সে বছরও এ মসজিদের সামনের সদর রাস্তা দিয়ে দূর্গাপূজা শেষে তাদের বিগ্রহ মিছিল বাজনা বাজিয়ে নিতে চায়। মুসলিম সম্প্রদায় এতে বাদ সাধে।

তাদের দাবি, অন্তত এ পথে বিগ্রহ নেয়া হলেও মসজিদের সামনে এসে বাদ্য-বাজনা বাজানো চলবে না। কিন্ত উভয়ই নিজস্ব অবস্থানে অটল থাকে। কোন ছাড় দিতে নারাজ। নির্দিষ্ট সময় যতোই এগিয়ে আসতে থাকলো ততোই উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে থাকে।

বৃটিশ সরকার এলাকায় গুর্খা সৈন্য মোতায়েন করে। রাত ৮টায় চরম মুহুর্ত ঘনিয়ে আসে এবং সৈন্যদের গুলিতে লুটিয়ে পড়েন ৪ জন মসজিদের মুসল্লি এ বিয়োগান্ত ঘটনার খবর সারাদেশে মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন মুসলিম ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। তখন বিশিষ্ট আলেমরা মসজিদটিকে শহীদি মসজিদ নামে আখ্যায়িত করেন।

ইসমাঈল আযহার/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন