জনতার ভোট রক্ষায় কেন্দ্রে থাকবে নেতাকর্মীরা: কাদের

প্রকাশিত: ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৩১, ২০২০

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটের দিন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক প্রস্তুতির কথা জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘কেন্দ্রগুলোতে আমাদের নেতাকর্মীরা সতর্ক পাহারা দেবে, যাতে করে জনগণের ভোট রক্ষার বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করতে পারি। আমরা চাই কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু থাকুক।’

গতকাল বৃহস্পতিবার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর আছে, বিএনপি ঢাকার বাইরে থেকে প্রচুর বহিরাগতকে ঢাকায় এনে জড়ো করেছে।

এদের মধ্যে দাগি আসামি, চিহ্নিত সন্ত্রাসী রয়েছে। ঢাকায় নিয়ে এসে প্রতিটি কেন্দ্রে পাঁচ শর মতো লোক রাখার পাঁয়তারা করছে। ভোট রক্ষার নামে তাদের এই অভিসন্ধি—এটা আমরা জানতে পেরেছি। তারা এই বহিরাগতদের দিয়ে নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোতে হট্টগোল পাকিয়ে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে। নির্বাচন বানচালের নীলনকশা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র করছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব পালন করবে। আমরাদেরও দায়িত্ব আছে, জনগণ যেন ভীতিমুক্ত পরিবেশে যাকে খুশি তাকে ভোট দিতে পারে। সে ব্যাপারে সাংগঠনিকভাবে আমরাও নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিচ্ছি।’

ভোটকেন্দ্র পাহারায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে সংঘর্ষ হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা তো ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য, জনগণকে সহযোগিতা করার জন্য মাঠে থাকব, কারো সঙ্গে সংঘর্ষ সৃষ্টি করার জন্য নেতাকর্মীদের কোনো নির্দেশনা দিইনি। আমরা এখানে প্রতিপক্ষের সঙ্গে কোনো রকম সংঘাত-সংঘর্ষে যাব না।’

ভোটের দিন মাঠ দখলে নিতে আওয়ামী লীগ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ভাড়া করেছে—বিএনপির এমন অভিযোগের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি তাদের স্বভাবসুলভ মিথ্যাচার, অপপ্রচার, বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করে যাচ্ছে। এসবের মধ্য দিয়ে তারা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং ভীতিসঞ্চারের মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাঠে জনগণের আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে বিএনপি বিভ্রান্ত নাবিকের মতো আচরণ করছে। বিএনপি নেতৃবৃন্দ এবং তাঁদের মনোনীত প্রার্থীর কথাবার্তা এবং আচরণের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্টের প্রত্যক্ষ উসকানি পরিলক্ষিত হচ্ছে।’

সরকার ইভিএমের মাধ্যমে কারচুপির সূক্ষ্ম পথ বের করেছে—বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি মনে করি কারচুপি ঠেকানের কৌশল হিসেবে ইভিএম হচ্ছে উত্তম ব্যবস্থা। এটা তারা মনে করতে পারে না কারণ, তারা এখনো অ্যানালগে রয়ে গেছে। তারা এখনো ডিজিটালে আসতে পারেনি। তারা আধুনিক প্রযুক্তি পছন্দ করে না। কারণ তারা নিজেরাই সেই অন্ধকারে রয়ে গেছে।

বিএনপি ইলেকশন বলতে বোঝে কেন্দ্র দখল, ভোট কারচুপি—এসবই তাদের নির্বাচন ছিল। কারচুপিমুক্ত নির্বাচন তারা কখনো চিন্তাও করে না। তারা কেন্দ্র দখলের রাজনীতি অতীতে করেছে। কিন্তু কেন্দ্র দখল, জবরদখল ও ভোট দখলের কোনো সুযোগ ইভিএমে নেই। এখানে হচ্ছে বিএনপির মূল ভয়ের কারণ।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।

আই.এ/

মন্তব্য করুন