জ্বরে আক্রান্ত হয়ে একই পরিবারের ২ সদস্যের মৃত্যুতে মুন্সীগঞ্জে করোনা আতঙ্ক

প্রকাশিত: ৩:৫১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০২০

মুন্সীগঞ্জে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে একই পরিবারের দুই সদস্যের মৃত্যুতে এলাকায় করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মাত্র ১৬ ঘণ্টার ব্যবধানে জেলার লৌহজংয়ের মাওয়া সংলগ্ন জসলদিয়া গ্রামে একই পরিবারের দুই সদস্যের মৃত্যু হয়। এতে ‘করোনাভাইরাসে’ আক্রান্ত হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা।

মাত্র ১৬ ঘণ্টার ব্যবধানে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় চাচী ও ভাতিজা। মৃত্যুর আগে এই দুজনের জ্বরের লক্ষণের সঙ্গে সংবাদমাধ্যমেপ্রাপ্ত করোনাভাইরাসের লক্ষণের সঙ্গে মিল রয়েছে বলে দাবি করেন স্বজনরা।

পরিবারের সদস্য মীর শিবলু জানায়, রোববার সকাল ৮টায় আমার ভাই মীর জুয়েলের স্ত্রী শামীমা বেগম (৩৪) হঠাৎ করে জ্বরে আক্রান্ত হন। আস্তে আস্তে জ্বর বাড়তে থাকলে শরীরের বিভিন্ন অংশে চাক চাক রক্তের দাগ দেখা যায়। মাত্র ঘন্টা খানেকের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।

এরপর একই দিনের দিবাগত রাত ২টায় আরেক ভাই মীর সোহেলের ছেলে মীর আব্দুর রহমান (৩) জ্বরে আক্রান্ত হয়। সেও এক ঘণ্টার মধ্যে মারা যায়

তবে ইউএনও মু. রাশেদুজ্জামান বলছেন, মৃত্যু শোকে পরিবারটি ভুল বলছে। করোনাভাইরাসের মতো কোনো লক্ষণ মৃতদের মধ্যে দেখা যায়নি। চীনের ওই মরণঘাতী ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হঠাৎ করে এ অঞ্চলে হওয়ার কোনো যুক্তি নেই।

বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জানানো হয়। এ বিষয়ে লৌহজং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শামীম আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। মৃত শিশুর রক্তের টেস্ট করতে সেখানে লোক পাঠিয়েছি। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হবে এটি করোনাভাইরাস কিনা। টেস্ট রিপোর্টের আগে এই মৃত্যুর সঙ্গে করোনাভাইরাসের প্রসঙ্গ টানা অনুচিত বলে মনে করি। তবে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। সিভিল সার্জনসহ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

লৌহজংয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মু. রাশেদুজ্জামান বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এখানে চিকিৎসক এসেছেন, খোঁজখবর চলছে। বিশেষজ্ঞ ডা. কামরুল হাসান পাটোয়ারী ওই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন। কী কারণে তাদের মৃত্যু হলো তা খুঁজে বের করতে আরও একটি বিশেষজ্ঞ টিম আসছে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শামীমা বেগমের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তবে শিশু আবদুর রহমানের দাফন এখনও সম্পন্ন হয়নি। তার মৃতদেহ চিকিৎসকরা দেখছেন।

প্রসঙ্গত সময়ের আতঙ্ক করোনাভাইরাস। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৮০ জন মারা গেছেন। হাসপাতালে ভর্তি আছেন হাজার হাজার মানুষ।

গত ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে ভাইরাসটির আবির্ভাব ঘটে। এর পর তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটি ঠেকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে চীন।

চীনের সীমান্ত পেরিয়ে এ ভাইরাস জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম হয়ে অস্ট্রেলিয়া, নেপাল, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়েছে।

/এসএস

মন্তব্য করুন