

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চারদিনের ভারত সফরে বেশ কিছু অর্জনের মধ্যে অন্যতম হলো তাকে আঞ্চলিক শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় রাখতে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারতের ‘ঠাকুর শান্তি পুরস্কার-২০১৮’ প্রদান করা হয়েছে। কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটি এই পুরস্কার প্রদান করে।
কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ইশাহ মোহাম্মদ ভারতের রাজধানীর হোটেল তাজমহলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সত্যব্রোত চৌধুরী। এর আগে অন্যান্যের মধ্যে বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা ও প্রখ্যাত অর্থনীতিক অমর্ত্য সেনকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে অনুষ্ঠানে সম্মাননাপত্র পাঠ করা হয়।
সম্মাননাপত্রে বলা হয়, ‘এশিয়াটিক সোসাইটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবিক উপলব্ধি ও শান্তিতে অবদান রাখার জন্য ‘ঠাকুর শান্তি পুরস্কার-২০১৮’ প্রদান করে তাকে সম্মান জানাচ্ছে।’ পুরস্কার গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী তা দেশবাসীর উৎসর্গ করে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এই সম্মান পাওয়ার উপযুক্ত। কারণ তারা ভোটের মাধ্যমে আমাকে ক্ষমতায় এনেছে।’
অপরদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সাত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। উদ্বোধন হয়েছে তিনটি যৌথ প্রকল্প। স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে পানি প্রত্যাহার করে ত্রিপুরায় নিতে পারবে ভারত। গত শনিবার দুপুরে নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে বৈঠকে বসেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী। এরপর সেখানে তাদের উপস্থিতিতেই সাত চুক্তি সই হয়।
ইউএনবির খবরে বলা হয়, স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় ফেনী নদীর ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করতে পারবে ভারত। এই পানি তারা ত্রিপুরা সাব্রুম শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্পে ব্যবহার করবে।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইউনিভার্সিটি অব হায়দরাবাদের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় নজরদারিতে সহযোগিতা বিনিময়ে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে দুই দেশ। সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিনিময় এবং যুব উন্নয়নে সহযোগিতা নিয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশকে দেওয়া ভারতের ঋণের প্রকল্প বাস্তবায়নে। চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্র বন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য পরিবহনে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) স্বাক্ষর হয়েছে। চুক্তি ও সমঝোতাপত্র বিনিময়ের পর শেখ হাসিনা এবং নরেন্দ্র মোদী যৌথভাবে তিনটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এলপিজি আমদানিকরণ, ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে বিবেকানন্দ ভবন (শিক্ষার্থী হল) এবং আইডিইবি ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে হায়দরাবাদ হাউসে মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লীর এই বৈঠক হয়।