বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারাগার এখন কাশ্মীর: ওআইসি

প্রকাশিত: ৭:৫২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯

ওআইসির মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্ডিপেন্ডেন্ট পার্মানেন্ট হিউম্যান রাইটস কমিশন (আইপিএইচআরসি) ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারাগারে পরিণত করা হয়েছে মন্তব্য করেছে। বিরোধপূর্ণ ওই অঞ্চলে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনকে কাজ করার অনুমতি দেওয়ারও আহ্বানও জানায়  সংস্থাটি। সাথে সাথে কাশ্মীরে সুষ্ঠু তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যও।

মঙ্গলবার রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে আইপিআরসি জানায়, বিশ্বজুড়ে সমালোচনা করা হলেও নিষেধজ্ঞা ও কারফিউয়ের মাধ্যমে কাশ্মিরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে ভারত সরকার। তারা জানায়, পুরো কাশ্মিরই এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারাগারে পরিণত হয়েছে যেখানে নিরীহ কাশ্মীরিরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।

সংস্থাটি জানায়, সেখানে ৫ হাজারেরও বেশি কাশ্মীরিদের আটক রাখা হয়েছে যাদের বেশিরভাগই তরুণ। এছাড়া সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা অভিযোগ এনে বিচার করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা জেনোসাইড ওয়াচের এক প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে ওআইসি’র সংস্থাটি জানায়, হিন্দুত্ব আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাশ্মিরে মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত রেখেছে নিরাপত্তা বাহিনী।

গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ওই দিন থেকে কার্যত অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে কাশ্মীর। মোবাইল-ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে সেখানকার জনশূন্য রাস্তায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র সেনারা। সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

ভারত সরকারের দাবি, কাশ্মিরের ৯০ শতাংশ এলাকায় দিনের বেলা কোনও কারফিউ থাকে না। কাশ্মীর পরিস্থিতে ওআইসি’র এই কমিশন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, তারা জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ সমর্থন করে। ওই সুপারিশ অনুযায়ী মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে খতিয়ে দেখতে একটি কমিশন গঠন করা হবে। কাশ্মীরে জাতিসংঘ ও ওআইসির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করার অনুমতি দেওয়ার জন্য আহ্বান জানায় আইপিআরসি।

ব্রিটিশ সরকারও এই আহ্বানকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব অভিযোগ উঠেছে তার সম্পূর্ণ ও স্বচ্ছ তদন্ত করতে হবে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব পার্লামেন্টে বলেন, কাশ্মীর পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে যুক্তরাজ্য। মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেকোনও অভিযোগ উদ্বেগজনক। বিষয়টা অবশ্যই পুরোপুরি, দ্রুত এবং স্বচ্ছ তদন্ত করতে হবে।

ইসমাঈল আযহার/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন