

ইসমাঈল আযহার: ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার পর থেকে কাশ্মীরজুড়ে এখনও ভয়ংকর পরিস্থিতি ও এক ধরনের থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে৷ জারি রয়েছে কারফিউ। গৃহবন্দি করা হয়েছে নেতাদের। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কাশ্মীরের গণমাধ্যম। সেনাদের নির্যাতনে উপত্যকার মানুষদের জনজীবন হুমকির মুখে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সেনাদের নির্যাতনের ভয়াবহ অনেক খবর উঠে এসেছে। এরই মধ্যে ভারতীয় সেনায় কাশ্মীরের ৫৭৫ জন যুবকের যোগ দেওয়া খবর পাওয়া গেল। খবরে যুবকদের ধর্ম সম্পর্কে স্পষ্ট বলা হয়নি।
খবরে বলা হয়, কাশ্মীরের সেনা নিয়োগের পাসিং আউট প্যারেডে উপস্থিত ছিলেন তাদের বাবা-মায়েরা। কাশ্মীরি যুবকদের শপথগ্রহণ করালেন হিন্দু, মুসলিম ও শিখ ধর্মগুরুরা। এসময় বিভিন্ন হিন্দুয়ানী স্লোগানও দিতে শোনা গেছে তাদের। এসব নতুন সেনাদের কাশ্মীরেই মোতায়েন করা হবে। ভারতীয় সেনার লেফট্যানান্ট জেনারেল অশ্বিনী কুমার জি মিডিয়াকে বলেন, জম্মু-কাশ্মীরে লাগাতার ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। কাশ্মীর থেকে সেনা সরানো হচ্ছে না সেদিকে ইঙ্গিত করে অশ্বিনী কুমার বলেন, সবসময় কাশ্মীরিদের সঙ্গে রয়েছে ভারতীয় সেনা।
এর আগে গত ৩০ আগস্ট ভারত জানায়, ২০২১ সালে আধিকৃত কাশ্মীর এবং আজাদ কাশ্মীরকে ধরে নিয়েই বিধানসভা নির্বাচন করবে তারা। দেশটির নির্বাচন কমিশন সূত্রে এ খবর জানায়। ভারতের নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, ৩৭০ ধারা বাতিলের পর জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হওয়ার পর এই সুযোগ নিচ্ছে ভারত সরকার।
ভারতের নির্বাচন কমিশন সূত্র আরও জানায়, আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে আগামী বছরের মধ্যে ওই রাজ্যে এ পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। ১০ থেকে ১৫ মাস ধরে মোট ১০ দফায় জম্মু-কাশ্মীরে ডিলিমিটেশন (পুনর্বিন্যাস) প্রক্রিয়া। এখন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষা করছে নির্বাচন কমিশন। আর তা পেয়ে গেলেই উপত্যকায় ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে
এদিকে ইমরান খান বলেছেন, ‘কাশ্মিরিদের আমরা বলতে চাই যে, আমরা তোমাদের পাশে আছি।’ পাকিস্তান সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরে ইমরান বলেন, ‘প্রথমে আমি কাশ্মিরিদের সঙ্গে পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই। আমি নিজেকে কাশ্মীরের দূত হিসেবে ঘোষণা করলাম। যেসব রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে তাদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছি। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ভাষণেও কাশ্মির ইস্যু তুলে ধরব।’

কাশ্মীরি জনগণের ওপর ভারতীয় সেনাদের অকথ্য নির্যাতন
গতকাল ৩১ আগস্ট জানা গেছে, কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কমিটি। একে অনেক বড় ঘটনা বলে উল্লেখ করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি মার্কিন প্রতিনিধি প্রতিনিধি পরিষদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। পাকিস্তানের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে আলাপের সময় শাহ মেহমুদ কোরেশি বলেন, মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে আলোচনার মাধ্যমে কাশ্মীর ইস্যুটি আন্তর্জাতিকভাবে আবারও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
আই.এ/পাবলিক ভয়েস