

ভূয়া নিউজ প্রচার করার অভিযোগে অখ্যাত অনলাইন নিউজ পোর্টাল প্রথম সময়ের সম্পাদক শাহীন রহমানকে (৪২) গ্রেফতার করেছে খুলনা পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, নিউজের মাধ্যমে হুমকি এবং সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন অখ্যাত অনলাইন পোর্টাল “প্রথম সময়” এর সম্পাদক শাহীন রহমান (৪২)। গত শনিবার ঢাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে খুলনা থানার চৌকস একটি পুলিশের দল।
জানা যায়, সম্প্রতি খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি রোটারিয়ান এস এম হাবিব এর কাছে বিশেষ সুবিধা নেয়ার জন্য সাংবাদিক শাহীন রহমান ফেসবুকে তার আইডি থেকে আকার ইঙ্গিতে পোস্ট দেয়। কিন্তু খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি তার এই পোস্টে কোন সাড়া না দেওয়ায় ঘোষণা দিয়ে তার বিরুদ্ধে ‘সংখ্যালঘুর জমি দখলে নেয়ার চেষ্টা সাংবাদিক হাবিবের’ শিরোনামে নিউজ প্রচার করে তার নিজস্ব অনলাইন পোর্টালে। ঘোষণা দেখা মাত্র খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে খুলনা থানায় মামলা দায়ের করেন । দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর অবশেষে শনিবার ঢাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে খুলনা থানার একদল পুলিশ।
তাকে গ্রেফতারের পর ঢাকার বিভিন্ন জনের কাছ থেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করার ও প্রমাণ পাওয়া গেছে শাহীন রহমানের বিরুদ্ধে। রামপুরার এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দুই দিনের জন্য ৩০ হাজার টাকা ধার নিয়ে পরবর্তীতে টাকা না দিয়ে উল্টো বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছিলো এই শাহিন রহমান বলে অভিযোগ করেছে এক ব্যবসায়ী। এভাবেই আইএফআইসি ব্যাংকের এক কর্মকর্তার থেকেও বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি। অবশেষে তার গ্রেফতারের খবর শুনে মুখ খুলতে শুরু করেছে সবাই।
শাহীন রহমানের নিজস্ব অনলাইন পোর্টালের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই তিনি নিউজ পোর্টাল চালাচ্ছেন দীর্ঘদিন যাবত। নিউজ পোর্টালটির কোনো অফিসেরও হদিস মিলেনি। নিজের বাসায় বসেই একটা অনলাইন পোর্টাল দিয়ে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিতেন তিনি।
শাহীন রহমানের ব্যাপারে অভিযোগে জানা যায়, খুলনায় তার এই নিউজ পোর্টালকে ব্যবহার করে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সুশীল-সমাজের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার আগাম ঘোষণা ফেসবুকে প্রদান করতো। সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার আশংকায় অনেকে তার সাথে যোগাযোগ করতো। তাদের সাথে রফাদফা না হলে আপত্তিকর ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে তার নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ করে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে ফেসবুকে শেয়ার করতো। দীর্ঘ দিন থেকে সে এই অনৈতিক কাজ করে আসছে। ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে আদালতেও একটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী এক নারী।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের খুলনা জোনের সহকারী কমিশনার মোঃ. কামরুজ্জামান জানান, তার বিরুদ্ধে খুলনা থানা ও আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দু’টি মামলা রয়েছে।