আমি সৈয়দ আশরাফের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি: মাও. মাসঊদ

প্রকাশিত: ৮:২৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৫, ২০১৯
ছবি: গোলাম রাব্বি

পাবলিক ভয়েস: আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার গ্র্যান্ড ইমাম মাও. ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।

তিনি বলেন, মানুষের জন্ম ও মৃত্যু আল্লাহর পক্ষ থেকেই নির্ধারিত। আল্লাহর ইচ্ছাতেই মানুষ তার রবের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে যান। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও মহান সৃষ্টিকর্তার ডাকে পরপারে চলে গেছেন।বাংলাদেশের একজন স্বচ্ছ রাজৈনতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন সৈয়দ আশরাফ।

আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তার জন্য দুয়া করি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে মাফ করে দিন।

বাংলাদেশের একজন সুদক্ষ সমাজ বিনির্মাতা ছিলেন সৈয়দ আশরাফ উল্লেখ করে মাওলানা মাসঊদ বলেন, পরিচ্ছন্ন মনের মানুষ এবং বিরোধী পক্ষের প্রতিও সহমর্মী ছিলেন তিনি।

বিবৃতিতে আল্লামা মাসঊদ তার পরিবারের প্রতি ও শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। গত বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) রাতে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা মাসউদুল কাদির স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আল্লামা মাসঊদ এসব কথা বলেন।

উল্লেখ্য যে, ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সৈয়দ আশরাফ থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।এর আগে গুরুতর অসুস্থতার কারণে গত ১৮ সেপ্টেম্বর সংসদ থেকে ছুটি নেন তিনি। দেশে না থেকেও সৈয়দ আশরাফ কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর ও হোসেনপুর উপজেলা) আসনে নৌকা প্রতীকে জয়ী হন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচিত সাংসদেরা শপথ নিয়েছেন। তবে শপথ নেওয়ার জন্য সময় চেয়ে তার চিঠিটি আজই স্পিকারের কাছে জমা দেওয়া হয়।তবে শেষ পর্যন্ত আর শপথ নেওয়া হলো না তার। স্পিকারকে চিঠি দেওয়ার পরদিনই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন তিনি।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারিতে ময়মনসিংহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমএ ডিগ্রী লাভ করেন। পারিবারিক ঐতিহ্যের সূত্র ধরে তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর তিনি যুক্তরাজ্য চলে যান। প্রবাস জীবনে তিনি যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

আশরাফুল ইসলাম ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে আসেন এবং কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০১ সালের ১ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় তিনি নির্বাচিত হন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি এক কন্যার জনক।

বিবৃতি/পাবলিক ভয়েস ডেস্ক

মন্তব্য করুন