
সোমবার ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিয়েছে এবং রাজ্যটিকে দুই ভাগে বিভক্ত করে ভারতের সঙ্গে একীভূত করার ঘোষণা দিয়েছে। এরপর থেকেই থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে পুরো কাশ্মীর উপত্যকায়। বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে নিহত ও আহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও কাশ্মীর জুড়ে রাজনৈতিক নেতাসহ ১০০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করেছে ভারতীয় সেনারা।
থমথমে আর উত্তেজনাকর পরিস্থিতির ভেতর এবার শোনা গেছে এক চিলতে আশার বাণী। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে রিট করেছেন এক আইনজীবী। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদালতে বাধার মুখে পড়তে পারে মোদির সিদ্ধান্ত। ভারতের সংবিধান বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় কুমার সিং বলেন, ৩৭০ অধ্যাদেশ ছিল, কাশ্মীরের সাথে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সেতুবন্ধন। এটি বিশ্ববাসীকে স্পষ্ট করেছিল ভারত প্রকৃতই গণতান্ত্রিক দেশ, কোনও স্বৈরাচারী রাষ্ট্র নয়।
রাষ্ট্র আদৌ এভাবে রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নিতে পারে কী? এটা আইনের অবমাননা কী না-তা একটি মৌলিক প্রশ্ন। আমার মনে হয়, আদালত নেতিবাচক উত্তরই দেবেন। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি, পরিস্থিতি উন্নতি হলে ফের রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পেতে পারে কাশ্মীর। টুইটারে মোদির দাবি, একে স্বাগত জানিয়েছে কাশ্মীরবাসী। ভারতের বিরোধীদল কংগ্রেস বলেছে, কাশ্মীর ইস্যুতে একতরফা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না কোনও সরকার।
এদিকে কাশ্মীরে অচলাবস্থায় বন্ধ হয়ে গেছে স্বাভাবিক খাবার সরবরাহ। নেই বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ। ব্যাংক ও এটিএম গুলোতেও টাকা নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে কাশ্মীরবাসী। ৭২ ঘণ্টা পার না হতেই তাই দোকানগুলোতেও শেষ হয়ে গেছে খাবার। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে বহুগুণ তিনদিন ধরে চলা এই অচলাবস্থায় না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে নিম্নবিত্ত অনেক কাশ্মীরবাসীর। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কাশ্মিরের বাসিন্দাদের এই দুর্দশা।
কাশ্মীর ইস্যূতে ভারতকে একের পর এক হুঁশিয়ারি দিয়ে চলেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তার জেরে এবার নিজ দেশের আকাশসীমা আংশিক বন্ধ করে দিলেন তিনি। জানা গেছে, আকাশপথ বন্ধ রাখার এই সিদ্ধান্ত ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ভারতের সঙ্গে সমস্ত রকম বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাতিলের পর বুধবার রাতে পাক-সেনারা ভারতীয় সেনাদের ওপর হামলা করেছে বলেও জানা গেছে। এসময় আত্মরক্ষার জন্য ভারতের সেনারাও গুলি চালায়।
আই.এ/পাবলিক ভয়েস

