
রোহিঙ্গা শরণার্থী ও মিয়ানমারের মধ্যে আলোচনায় উৎসাহিত করার কথা বলেছে দক্ষিণপূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংস্থা আসিয়ান। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোহিঙ্গা মানবাধিকার কর্মীরা। তাদের অভিযোগ, মিয়ানমারের অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করছে সংস্থাটি।
মূলত মিয়ানমারের সেনা বাহিনীর অপরাধ ও প্রত্যাবাসন পরিকল্পনার বড় ভুলগুলো ঢাকতেই এমনটি করছেন তারা। খবর আল-জাজিরার ১০ সদস্যের এই বাণিজ্য সংস্থার মানবাধিকার শাখার একটি দলের সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের একটি প্রতিনিধি দল গত সপ্তাহে শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে।
রোহিঙ্গা নেতা ও মানবাধিকার কর্মীদের সঙ্গে প্রত্যাবাসন আলোচনা শরু করতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা ও নিপীড়ন থেকে পালিয়ে বাঁচতে ২০১৭ সালের আগস্টে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছেন। যাইহোক, সহযোগিতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সম্পর্কও ঝুঁকিতে পড়েছে।
ইতিমধ্যে তাদের মধ্যে অনাস্থাও তৈরি হয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে গোপনে প্রত্যাবাসন চুক্তি সই ও রোহিঙ্গাদের পরিচয়পত্র পরিকল্পনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কারণে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রতি রোহিঙ্গা অধিকার কর্মীদের অবিশ্বাস দেখা দিয়েছে। রোহিঙ্গারা এসব প্রকল্পের বিরোধিতা করেছেন।
নিরাপত্তা বাহিনী তাদের সই নেয়ার চেষ্টা করলে সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ করছেন রোহিঙ্গা নেতারা। কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে প্রশংসিত হয়েছে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ। তবে এখানে রোহিঙ্গাদের ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে দেয়া হয়েছে। তারা মুক্তভাবে চলাফেরা যেমন করতে পারেন না, তেমনি শিক্ষার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।
এছাড়া তারা কোনো উপার্জনেও যেতে পারছেন না। রোহিঙ্গাদের আনুষ্ঠানিকভাবে শরণার্থীর মর্যাদাও প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। আসিয়ান ও মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের পরিদর্শনের সময় তাদেরকে এক রোহিঙ্গা কর্মী জিজ্ঞাসা করেন, রাখাইনে রোগবালাইন উপদ্রুত বন্দিশিবিরে আটকাপড়া এক লাখ ২৮ হাজার রোহিঙ্গার সহায়তায় তারা কী করছেন?
জবাবে এক প্রতিনিধি বলেন, আপনাদের সব সমস্যার সমাধান করতে আমরা এখানে আসিনি। তার এই জবাবের মধ্যে উদাসীনতা ও অনীহা দেখতে পেয়েছেন কেউ কেউ এবং নিশ্চিত হয়েছেন যে রোহিঙ্গাদের অধিকার সুরক্ষা নিয়ে আসিয়ান সদস্যদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। মোহাম্মদ নওকিম নামের এক রোহিঙ্গা কর্মী বলেন, আমি জানি আসিয়ান কিছুই করতে পারবে না। কিন্তু রোহিঙ্গাদের অধিকারের জন্য তো তারা কথা বলতে পারেন। রো সাওয়াদেল্লাহ নামের আরেকজন বলেন, তারাই ঠিক।
আই.এ/পাবলিক ভয়েস

