

সদ্য আত্মপ্রকাশে আসা জাতীয় ওয়ায়েজীন পরিষদ বাংলাদেশ এর আয়োজনে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম পূর্ব চত্বরে জাতীয় সিরাত মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বুধবার (২৫ জুলাই) সারাদিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনের পোস্টারে দেশের প্রথম সারীর সকল ওলামায়ে কেরামদের নাম থাকলেও মূল মেহমানরা কেহই উপস্থিত হননি। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ রেজাউল করীম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ কিশোরগঞ্জের আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ, মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা আবদুল কুদ্দুসসহ অনেকের নামই পোস্টারে ছিলো কিন্তু তারা কেহই সম্মেলনে উপস্থিত হননি বলে জানা গেছে। এছাড়াও সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ উপস্থিত থাকবেন বলেও জানানো হয়েছিলো এবং পোস্টারেও তার নাম ছিলো কিন্তু তিনিও সম্মেলনে উপস্থিত হননি।
এ ব্যাপারে ওয়ায়েজীন পরিষদের মহাসচিব মাওলানা আবুল কালাম আজাদ পাবলিক ভয়েসকে বলেন,
“আমরা সকল বক্তাদেরকে নিজেরা গিয়ে দাওয়াত দিয়েছি, এবং যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সম্মতি দিয়েছেন তাদেরকেই আমরা পোস্টারে নাম দিয়েছি। অনুষ্ঠানটি নিয়ে কোন কোন মহল এর নোংরা রাজনীতি করার কারণে অনেক মেহমানরা আসতে পারেননি বা আসেনি। আবার কোন কোন মুরুব্বি নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার কে কলঙ্কমুক্ত রাখার জন্য অনুষ্ঠানে আসেন নি”।
“রাজনৈতিক ক্যারিয়ার কলঙ্কমুক্ত রাখার জন্য অনুষ্ঠানে আসেননি” বক্তব্যটি চরমোনাইর পীর সাহেব, ইসলামী আন্দোলনের আমীর মুফতী সৈয়দ রেজাউল করীমের ব্যাপারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন,
“জ্বী, এটি পীর সাহেব চরমোনাইর ব্যাপারে। তবে আমরাই এ বিষয়ে হুজুরকে পরামর্শ দিয়েছি শেষ পর্যন্ত না আসার জন্য, হুজুরেরও সেটা পছন্দ হয়েছে বলে তিনি আসেননি”
তবে সিরাত সম্মেলনে ওলামায়ে কেরামদের জাতীয় ঐক্যের আহবান ছিলো দাবি করে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন,
অনুষ্ঠিত জাতীয় সীরাত মাহফিলের বক্তাদের ঐক্যবদ্ধ সূর ছিল “ওলামায়ে কেরামের ঐক্য এখন সময়ের দাবি”। দেশের ওয়ায়েজীনে কেরাম ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারলে সকল বাতিল পরাজিত হবে বলেও বক্তারা আলোচনা করেছেন। ওলামায়ে কেরাম এক থাকলে ইসলামের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্রই সমাজে দানা বাঁধতে পারবে না বলেও বক্তারা তাদের আলোচনায় বলেছেন।
আয়োজক কমিটি তাদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানে নানা বাধা-বিপত্তির মধ্যেও হাজার হাজার জনতার ঢল নামে, বাইতুল মুকাররম চত্বর কানায় কানায় ভরপুর হয়ে যায়। নানা প্রকার ষড়যন্ত্রে কারণে বারবার প্রশাসন থেকে বাধা আসতে থাকায় রাত্রে এগারোটা পর্যন্ত অনুষ্ঠানের অনুমতি পেয়ে ও আসরের নামাজের পূর্বেই অনুষ্ঠান সমাপ্ত করা হয়।
অনুষ্ঠান ও জাতীয় ওয়ায়েজীন পরিষদের সভাপতি আল্লামা মুজিবুর রহমান চাটগামী সকল আলেম-ওলামা, ওয়ায়েজিন ও খতীবদের লক্ষ্য করে বৃহৎ ঐক্যের ডাক দেন। আসরের পর হাজার হাজার জনতা সমবেত হয়ে প্রশাসনের এহেন কর্মকাণ্ডের নানা প্রকার সমালোচনা করেন এবং উত্তেজিত যুবকরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু হুঁশিয়ারি মূলক স্লোগান দিতে থাকে। আয়োজক কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুরোধে শেষ পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ জনতা কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানো থেকে বিরত থাকেন বলে জানানো হয়। এশার নামাজের পর রাত্র যখন বাড়তে থাকে, অনুষ্ঠান উপভোগ করতে না পেরে বিক্ষুব্ধ জনতার আস্তে আস্তে নিরাশ মনে ঘরে ফিরতে শুরু করে বলেও জানিয়েছেন তারা।
সংগঠনের সভাপতি মাওলানা মুজিবুর রহমান চাটগামীর সভাপতিত্বে ও মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মুফতি সালমান সাকি ও মুফতী দীন ইসলাম এর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত জাতীয় সিরাত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন যথাক্রমে- ডক্টর আব্দুল্লাহ নোমান ভারত, মুফতি সাজিদুর রহমান, মুফতি মুস্তাকিম বিল্লাহ হামিদী, মুফতি মনিরুজ্জামান সিরাজী, আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী, মাওলানা মুসাদ্দিক বিল্লাহ আল-মাদানী, আল্লামা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা লুৎফুর রহমান ফরায়েজী, মুফতি মহিউদ্দিন কাসেম, আল্লামা নজির আহমদ সাহেব, মাওলানা আজহারুল ইসলাম আজমী, মুফতি আমজাদ হোসেন আশরাফী, মাওলানা মাজহারুল ইসলাম রাশেদী, মাওলানা আব্দুল মোমেন মুরাদাবাদী, মুফতি মাহবুবুর রহমান নবাবগঞ্জী, মুফতি মুয়াবিয়া আল হাবিবি, মুফতি লুৎফুর রহমান মারুফ, ইয়াসিন আকরাম নবীনগরী, আলী হায়দার গাজীপুরী, মুফতি রিদওয়ানুল কাদির, মুফতি সুলাইমান জামালপুরী, মুফতি ফরিদ উদ্দিন রহমানি, মুফতী কাউছার হাবিব ফরিদী প্রমূখ নেতৃস্থানীয় ওয়ায়েজিনে কেরাম।