ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার নালিশ, ফেসবুকে সমালোচনার ঝড়

প্রকাশিত: ৯:৩০ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০১৯
১৮ জুলাই ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার ২৭ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

‘৩৭ মিলিয়ন সংখ্যালঘু বিলীন হয়ে গেছে’। ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হচ্ছে এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কছে এমন অভিযোগ করেছে বাংলাদেশী এক নারী প্রিয়া সাহা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তুমুল সমালোচনার ঝড় শুরু হয়েছে।

গত ১৮ জুলাই ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার ২৭ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ২৭টি দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহাও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান। তখন তিনি এমন অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে মহিলার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনারও দাবি তুলেছেন অনেকে। প্রিয়া সাহার দেয়া বক্তব্যে অনেকে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলছেন, সমস্ত বক্তব্য মিথ্যা ও বানোয়াট।

প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড়

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেকে প্রিয়া সাহার দেয়া মিথ্যা বক্তব্যের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ সমালোচনার ঝড় ক্ষোভ প্রকাশ করছে অনেকে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লিখেন, ধর্মীয় সম্প্রতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ। অনেকেই ব্যক্তি স্বার্থে বা না বুঝে এটার ক্ষতি করে ফেলেন। সবার উচিত এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকা। প্রিয়া সাহা কেন এটা করলেন তা খতিয়ে দেখা হবে। তার অভিযোগুলোও সরকার শুনবে এবং খতিয়ে দেখবে।

এবিসি৪ এর ওই ভিডিও পোস্টের কমেন্ট বক্সেই জয় সাহা হৃদয় নামে একজন লিখেন, ‘আমি বাংলাদেশি এবং আমার ধর্ম হিন্দু। আমি এখানে শান্তিতে বাস করছি এবং এখানে মুসলিমদের জন্য কোন শঙ্কা নেই। তিনি (অভিযোগকারী) অবশ্যই ভুল কথা বলছেন’।

সাব্বির আহমেদ মিলন নামে একজন লিখেন, ‘বাংলাদেশ সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এখানে দীর্ঘদিন ধরে সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। সকল ধর্মের লোকেরা উদযাপন ও উৎসবগুলিতে কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ বিশ্বের সাম্প্রদায়িক সাদৃশ্য একটি উজ্জ্বল উদাহরণ’।

নাসির উদ্দিন নামে একজন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা বিবৃতি দেয়া এই মহিলাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেয়া হোক। তিনি শুধুমাত্র সবুজ কার্ড পেতে মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছেন’।

আসরাফ হোসেন কবির নামে একজন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদ’ এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা এর বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিতে রাষ্টদ্রোহী মামলা করার আহ্বান জানাচ্ছি।

আসিকুর রহমান নামে একজন লিখেছেন, বাংলাদেশী এই নারী যা বলেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বাংলাদেশে সবাই সান্তিপূর্ন ভাবে বসবাস করছি। অধিকাংশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান মুসলমানদের চেয়ে বেশি সুযোগ পাচ্ছে।

খান আমির নামে একজন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশী এই নারী সম্পূর্ণভাবে মিথ্যাবাদী। তিনি ভালো বাংলাদেশী না। আমরা সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে একসাথে মিলে মিশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করি।’

শাইফুল মাহমুদ নামে একজন লিখেছেন, ‘আমি জানি না এটা সত্য কিনা তবে আমি শুনেছি বাংলাদেশে ৩৩% হিন্দু চাকরি করছে, অথচ সেখানে মুসলমানদের সংখ্যা গড় ২% মাত্র। সুতরাং ওই নারী সম্পূর্ণভাবে মিথ্যাবাদী।

ইয়ামিন নামে একজন লিখেছেন, ‘কিভাবে এই নারী এমন একটি মিথ্যা কথা বলতে পারে। আমি অন্য কোন দেশকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা অন্য দেশের থেকে অনেক ভালো আছে। তারা অনেক বেশি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে’।

শাহাদাত হোসেন নামে একজন লিখেছেন, ‘ওই নারী একটা মিথ্যাবাদী বাংলাদেশে মুসলিম, হিন্দু, খৃষ্টান এবং অন্যান্যরা খুব শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে।

জানা যায়, গত ১৭ জুলাই বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনে বেঁচে ফেরা লোকেদের সাথে কথা বলেন। নিউ ইয়র্কের সল্ট লেক সিটির অনলাইন টেলিভিশন ‘এবিসি৪’ এর অফিসিয়াল ফেসবুকে পেজে এটি সরাসরি সম্প্রচার করে। বার্মা, নিউজিল্যান্ড, ইয়েমেন, চীন, কিউবা, ইরিত্রিয়া, নাইজেরিয়া, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, সুদান, ইরাক, আফগানিস্তান, উত্তর কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ইরান এবং জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের ২৭ জনের সাথে কথা বলেন ট্রাম্প।

জিআরএস/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন