

আজ ঐতিহাসিক ২৩ জুন। দিনটি ঐতিহাসিক হওয়ার পেছনে দুটি কারণ রয়েছে। একটি হলো স্বাধীন বাংলা অপরটি হলো স্বাধীন বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলার সর্বশেষ নবাব সিরাজ উদ দৌলা ১৭৫৭ সালের এই দিনে পলাশীতে বিট্রিশদের সাথে মুখোমুখি হয়েছিলো।
অন্যদিকে প্রায় ২০০ শত বছর পর ১৯৪৯ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশে অনত্যম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্ম হয়। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেনে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়।
একদিকে ১৭৫৭’র ২৩ জুনে স্বাধীন বাংলার সর্বশেষ নবাব সিরাজ উদ দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার সূর্য স্তমিত হয়ে পড়ে। অন্যদিকে ১৯৪৯’র ২৩ জুনে তৎকালীন বাংলাদেশ আওয়ামী মুসলিম লীগ এর জন্মের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলার স্তমিত সূর্য যেন নতুনকরে উদিত হয়। কেননা, সেদিনের সেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ এর জন্ম হয়েছে।
১৯৪৯ সালের ২৩ ও ২৪ জুন স্বামীবাগের রোজ গার্ডেনে নতুন দল গঠন করা হচ্ছে এমন খবরে তৎকালীন সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। ওই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মওলানা ভাসানী গ্রেফতার হতে পারেন এমন আশঙ্কা তৈরি হয়।
রাজনীতির নতুন প্লাটফর্ম গড়ার কারিগররা তখন মওলানা ভাসানীকে আত্মগোপনে রাখার ব্যবস্থা করেন এবং সম্মেলনের দুই দিন আগে তাকে রোজ গার্ডেনে নিয়ে আসে।
এরপর আতাউর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সর্বসম্মতিক্রমে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি, শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক এবং কারাবন্দী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যুগ্ম সম্পাদক করে দল ঘোষণা করা হয়।
২৩ জুনের সম্মেলনে দলের নাম দেওয়া হয় ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’। পরদিন ২৪ জুন ঢাকার আরমানিটোলা ময়দানে প্রকাশ্য জনসভার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী মুসলিম লীগের পথচলা শুরু হয়।
১৯৫৫ সালের কাউন্সিলে ধর্মনিরপেক্ষ নীতি গ্রহণের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল হিসেবে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’ নামকরণ করা হয়। এরপর স্বাধীন বাংলাদেশে দলটির নাম পরিবর্তিত হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এ।
৭৫-এ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমাননের স্ব-পরিবারে হত্যাকাণ্ডের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে প্রথম আওয়ামী লীগ মরকার গঠন করে। এরপর ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে টানা তৃতীবারের মতো সরকার গঠনকরে আওয়ামী লীগ।
দেশের প্রাচীণ এ দলটি যেন বৃদ্ধ বয়সে পূর্ণ যৌবন সময় পার করছে এখন। ৭০ পেরিয়ে আজ ৭১ বর্ষে পা দিচ্ছে বাংলাদেশ আওয়মাী লীগ। দলটি ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ে নেয়া হয়েছে নানার কর্মসূচি।
যেসব কর্মসূচি নেয়া হয়েছে: সূর্যোদয়ের সময়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবনসহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৮টায় ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ। সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগের একটি টিম টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করবে।
আগামীকাল সোমবার বিকাল ৪টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এতে জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও বুদ্ধিজীবীরা বক্তৃতা করবেন।
/এসএস