

টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর থেকে এশিয়া কাপ ও ত্রিদেশীয় সিরিজ মিলিয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ছয়টি ফাইনালে হেরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এবার ডাবলিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ফাইনাল জিতল তারা। আর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এ কাব্যিক জয়ের মূল কারিগর সৌম্য সরকার আর মোসাদ্দেক হোসেন।
সকাল থেকে ডাবলিনে আকাশ মেঘে ঢাকা। বয়ে যাচ্ছে কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস। ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথমবারের মতো টস জিতে ফিল্ডিং নিতে খুব একটা ভাবতে হলো না বাংলাদেশ মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। বাংলাদেশ অধিনায়ক জানান, মেঘলা আকাশ ও আবহাওয়ার পূর্বাভাসের ভূমিকা আছে বোলিং বেছে নেওয়ার পেছনে।
সিরিজে তিন ম্যাচে পরে ব্যাটিং করে বাংলাদেশ, জেতে তিন ম্যাচেই। মাশরাফি জানান, তিন ম্যাচে দেখেছেন পরের দিকে উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো হয়ে যায়। সেটাও ফাইনালে পরে ব্যাটিং করার একটা কারণ।
প্রথমে সৌম্য সরকারের ঝড়, এরপর শেষ দিকে এসে ঝড় তুললেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। সৌম্যর ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরির পর মোসাদ্দেকের ২০ বল হাফ সেঞ্চুরি। এই দুই ঝড়ো ইনিংসের ওপর ভর করে এই প্রথম নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে কোনো টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ।
ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ২৪ ওভারে ২১০ রানের বিশাল লক্ষ্য পাড়ি দিতে নেমে মোসাদ্দেকে ঝড়ের সামনে ৭ বল হাতে রেখেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলো বাংলাদেশ।
মাত্র ২৪ বলে ৫২ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তার অপরাজিত ইনিংসটি ছিল ২টি চার ও ৫টি ছক্কায় সাজানো।
সৌম্য সরকারের ব্যাটে জয়ের স্বপ্নটা চওড়া হচ্ছিল খুব। ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে সেটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ৪১ বলে ৬৬ রান করার পর সৌম্য বিদায় নিতেই জয়ের কাজটা ধীরে ধীরে কঠিন হতে শুরু করে।
মুশফিকুর রহীম, মোহাম্মদ মিঠুনরাও চেষ্টা করেন রানের চাকা সমানতালে এগিয়ে নিতে। কিন্তু নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকায় সেটা আরও কঠিন হয়ে যায়।
দলীয় ১০৯ রানের মাথায় রেমন রেইফারের স্পিন ঘূর্ণিতে বিভ্রান্ত হয়ে ছক্কা মারতে যান সৌম্য। লং অনে ধরা পড়েন সেলডন কটরেলের হাতে। মুশফিকুর রহীম করেন ২২ বলে ৩৬ রান। মিঠুনের ব্যাট থেকে আসে১৪ বলে ১৭ রান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ করেছিল ২৪ ওভরে ১৫২ রান। জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ২১০ রান। ক্রিকেটের অদ্ভূত বৃষ্টি আইন এটা। ডাকওয়ার্থ আর লুইস তৈরি করেছেন এই গাণিতিক হিসাব-নিকাশ। শেষ পর্যন্ত সব পার করে জিতে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। প্রথমবারের মতো ত্রিদেশীয় সিরিজ জয় করেছে মাশরাফিরা। অভিনন্দনের বন্যায় ভাসছে তারা।